দিনে গরম আবার ভোর রাতে শিরশিরে ঠান্ডা। নিট ফল শরীর ভারী, জ্বর-জ্বর ভাব, কিছুটা অস্বস্তিও।
সিজন চেঞ্জের জন্যই এমন হচ্ছে। বিশ্রাম নিন। ওষুধ কিছু লাগবে না। তবে জ্বর ১০০ ছাড়ালে প্যারাসিটামল খেতে পারেন। প্রচুর জল খান। জ্বর যাতে বাড়তে না পারে সে জন্য মাথা ধুয়ে গা স্পঞ্জ করে নেবেন।
বিশ্রাম নেব কী! সামনে ইয়ার-এন্ডিং। এমন কিছু ওষুধ দিন যাতে অফিস করতে পারি।
দিন দু’য়েক বিশ্রাম নিতেই হবে। প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কিছু খাবেন না। জ্বর বাড়লে তখন দেখা যাবে। কিছু এনার্জি ড্রিঙ্ক, গ্লুকোজ ওয়াটার বা ও আর এস খান। বাড়িতে নুন-চিনি মেশানো জলও খেতে পারেন। দুর্বলতা কাটবে।
প্যারাসিটামল খেলে তো জ্বর কিছুক্ষণের জন্য নামছে। তার পর আবার যে কে সেই...
সারা দিনে জ্বরটা কেমন থাকছে তার একটা চার্ট তৈরি করুন। চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা অন্তর অন্তর জ্বর মাপুন। বোঝা যাবে কখন জ্বরটা বাড়ছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে না কমলে ডাক্তার দেখিয়ে নিন। ব্লাড আর ইউরিনের কিছু রুটিন টেস্ট করতে হতে পারে।
ম্যালেরিয়া বা অন্য কিছু নাকি?
রুটিন টেস্টেই সেটা বোঝা যাবে। তবে দেখা যাচ্ছে পাঁচ থেকে সাত দিন অ্যান্টিবায়োটিক খেলে এই জ্বর কমে যাচ্ছে। |
অ্যান্টিবায়োটিক খেলেই তো আরও কয়েক দিন কাজের দফারফা।
সঙ্গে কিছু ভিটামিন খেলে অসুবিধে হবে না।
গলার অবস্থাও তো খুব খারাপ। গলা চোক্ড হয়ে আছে।
দিনে চার থেকে পাঁচ বার অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল দিয়ে গার্গল করুন। স্টিম ইনহেলেশন নিন। তাতেই হবে।
নুন জল দিয়েও তো গার্গল করতে পারি?
পারেন। তবে গলায় স্পট থাকলে নুন মেশানো জলে গার্গল করলে সেটা কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে মতো ব্যাপার হবে। তার চেয়ে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল মাউথওয়াশ দিয়ে গার্গল করুন। সেটা নিরাপদ।
মনে হচ্ছে গলার নীচে বুকের কাছে বুঝি কিছু আটকে আছে।
বললাম না, গার্গল করুন। ওতেই কমবে। আর কিছু করার দরকার নেই। সারা দিনে অনেকটা জল খান।
নাক দিয়ে অঝোরে জল ঝরতে ঝরতে এখন তো নাকটাই বন্ধ।
স্টিম ইনহেলেশনেই কাজ দেবে। প্রয়োজন মতো দিনে বেশ কয়েক বার নরম্যাল স্যালাইন ড্রপও নিতে পারেন।
আর কাশি? ঘুমোতে পারছি না। শোয়ার পর কাশির দমক বাড়ছে।
এর জন্য তো অ্যান্টি অ্যালার্জিক সিরাপ খেতে হবে।
ওতে তো সারা দিন ঘুম পাবে। তা ছাড়া এই কাশি নাকি দুই-তিন সপ্তাহ ধরে থাকছে?
নন সিডেটিভ অ্যান্টি অ্যালার্জিক-এ খুব বেশি ঘুম পাবে না। ভয়েস রেস্ট দিতে পারলে সব থেকে ভাল।
মানে? কথা বলব না? তাই আবার হয় নাকি?
যতটা পারেন গলাকে বিশ্রাম দিন। আস্তে আস্তে কথা বলুন। আপনা আপনিই কাশি কমে যাবে।
শুনেছি এই জ্বর নাকি সেরে যাওয়ার পরও আবার ঘুরে আসছে?
হ্যাঁ। কারও কারও এরকম হচ্ছে। কমার পরও দু-তিন সপ্তাহ বাদে আবার অল্প জ্বর হচ্ছে। প্যারাসিটামল খেলেই ঠিক হয়ে যাবে। জল আর স্বাভাবিক খাবার খান।
কিছু খেতেই তো ইচ্ছে করছে না, খাব কী করে?
একবারে অনেকটা খেতে হবে না। একটু একটু করে বারে বারে খান। জ্বর কমে গেলেই মুখে রুচি ফিরে আসবে।
আর কোনও ওষুধ লাগবে না?
জল এই জ্বরের ক্ষেত্রে খুব ভাল ওষুধ। জল, ফলের রস, লিকার চা, গ্লুকোজ ওয়াটার বা দুধ সব মিলিয়ে দিনে তিন থেকে চার লিটার ফ্লুইড খান। এতে বেশ কয়েক বার বাথরুমে যেতে হবে। কিন্তু তাড়াতাড়ি সুস্থ হবেন। আর স্বাভাবিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার চেষ্টা করুন। বাইরে থেকে এসেই ভাল করে হাত-মুখ ধুয়ে নিন। বাচ্চাদের ভ্যাকসিন দিয়ে দিতে পারলে ভাল হয়।
ভ্যাকসিন দিলে আর জ্বর হবে না?
সম্ভাবনা কমবে।
যোগাযোগ-৯৮৩১০৮১০৮৮ |