পরিষদীয় সচিব নিয়োগ নিয়ে জনস্বার্থের মামলা কলকাতা হাইকোর্ট গ্রহণ করেছে এবং এই ব্যাপারে রাজ্য সরকারের হলফনামাও তলব করা হয়েছে। তার মধ্যেই আরও এক জন পরিষদীয় সচিব নিয়োগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পটাশপুরের বিধায়ক এবং তৃণমূলের রাজনীতিতে পূর্ব মেদিনীপুরে অধিকারী পরিবারের বিরোধী হিসেবে পরিচিত জ্যোতির্ময় করকে এই পদে আনা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে তিনি শপথ নিতে পারেন। আজ, শনিবার মুখ্যমন্ত্রী তাঁর নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে সই করবেন।
জ্যোতির্ময়বাবুকে নিয়ে এ-পর্যন্ত পরিষদীয় সচিব হলেন মোট ১৪ জন। তাঁরা প্রতিমন্ত্রীর সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জ্যোতির্ময়বাবুকে সমবায় দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলে মহাকরণ সূত্রের খবর।
সমবায় দফতরে মন্ত্রীও পরিবর্তন করছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রাক্তন আইপিএস হায়দার আজিজ সফির জায়গায় নতুন সমবায়মন্ত্রী হচ্ছেন শঙ্কর চক্রবর্তী। শঙ্করবাবুর ছেড়ে আসা কারা দফতরের মন্ত্রী হচ্ছেন সফি। বিভিন্ন জেল থেকে
জ্যোতির্ময় কর |
গত কয়েক মাসে বারবার কয়েদিদের সংঘর্ষের খবর এসেছে। কয়েদিদের কাছে পাওয়া গিয়েছে মোবাইল ফোন, মাদক এবং অন্যান্য নিষিদ্ধ জিনিস। তার জেরেই সরতে হচ্ছে শঙ্করবাবুকে। মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, প্রাক্তন আইপিএস সফি কারা দফতরের দায়িত্ব ভাল ভাবে সামাল দিতে পারবেন। কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্নাকে কৃষি বিপণন দফতরেরও প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। বেচারামবাবু এখন কৃষির সঙ্গে শিশুকল্যাণ দফতরেরও প্রতিমন্ত্রী। সিঙ্গুরে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য যখন মমতার প্রতি নরম মনোভাব দেখাচ্ছেন, তখন এলাকায় তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী
বেচারামবাবুকে মুখ্যমন্ত্রীর আরও ক্ষমতা দেওয়ার ঘটনা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতারা বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আনুগত্য দেখালে যে পুরস্কার মিলবে, বেচারামবাবুকে বাড়তি দায়িত্ব দিয়ে সেই বার্তাই দিতে চাইছেন মমতা।
তবে মেদিনীপুরের রাজনীতিতে অধিকারী পরিবারের বরাবরের বিরোধী জ্যোতির্ময়বাবুকে পরিষদীয় সচিব করে মুখ্যমন্ত্রী কী বার্তা দিতে চান, তা নিয়ে নানা ব্যাখ্যা শোনা যাচ্ছে। ১৪ মার্চ মমতা নন্দীগ্রামে থাকবেন, এমনটাই চেয়েছিল কাঁথির প্রভাবশালী অধিকারী পরিবার। কিন্তু মমতা নন্দীগ্রাম দিবসের অনুষ্ঠানে না-গিয়ে উত্তরবঙ্গে চলে যান। তার পরে নন্দীগ্রামে কোনও ক্রমে সেই অনুষ্ঠান হয়। তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীকে রেজিনগর বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ওই কেন্দ্রের উপনির্বাচনে দলের হারে শুভেন্দুবাবুর উপরে চটেছেন মমতা। তার পরেই জেলা রাজনীতিতে শুভেন্দু-বিরোধী গোষ্ঠীর বিধায়ককে পরিষদীয় সচিব করে মমতা বুঝিয়ে দিলেন, জেলার রাজনীতিতেও তিনি ভারসাম্য বজায় রাখতে চান। যদিও মন্ত্রিসভা গঠনের সময় অধিকারী পরিবারের আপত্তিতেই জ্যোতির্ময়বাবুকে মন্ত্রী করেননি তিনি। |