পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বৃহস্পতিবার দু’টি সেতুর শিলান্যাস হল উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়া এবং বনগাঁয়। দীর্ঘদিন ধরেই দু’টি এলাকার বাসিন্দারা সেতুর দাবি তুলছেন।
দেড় বছর আগে হাড়োয়ার সোনারপুর-শঙ্করপুর ও কুলটি পঞ্চায়েতের মধ্যে বাগজোলা অংশ-২ খালের উপরের সেতুটি ভেঙে যায়। সেতু থেকে পড়ে যায় একটি লরি। আহত হন চালক। তারপর স্থানীয় পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে অস্থায়ী দু’টি সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু গ্রামবাসীদের দাবি ছিল কংক্রিটের সেতু। বৃহস্পতিবার কুলগাছিতে সেই সেতুরই শিলান্যাস করলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা, বসিরহাটের সাংসদ নুরুল ইসলাম এবং হাড়োয়ার বিধায়ক জুলফিকার আলি মোল্লা। জ্যোতিপ্রিয়বাবু জানান, সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার উন্নয়নের জন্য ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। |
রাজ্য সেচ ও জলপথ দফতরের মুখ্য বাস্তুকার বরুণকুমার ঘোষ বলেন, “সেতুটি তৈরির জন্য প্রায় ২ কোটি টাকা খরচ হবে। সেতুটি লম্বায় ৩৩ মিটার ও চওড়ায় ৬ মিটার হবে।”
ওই সন্ধ্যায় বনগাঁ ব্লকে ইছামতী নদীর উপরে একটি সেতুর শিলান্যাস করেন পূর্তমন্ত্রী সুদর্শন ঘোষদস্তিদার। অনুষ্ঠানে ছিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস প্রমুখ।
দীর্ঘদিন ধরেই মুড়িঘাটা, গোবরাপুর, গাঁড়াপোতা, চাঁদা, অম্বরপুর, গাজিপুর, গঙ্গানন্দপুর-সহ গ্রামগুলিতে নৌকাই ছিল যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। ১৯৮৭ সাল থেকে সেতুর দাবিতে শুরু হয় আন্দোলন। বিধায়ক, সাংসদ, মন্ত্রী সকলের কাছেই কংক্রিটের সেতুর দাবিতে দেওয়া হয়েছিল স্মারকলিপি। গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে তৈরি করেন একটি সাঁকো। ২০০৮ সালে পূর্ত দফতরের তরফে ইছামতী নদীর উপর ওই সেতুর জন্যে সমীক্ষা করা হয়। এ বার হল শিলান্যাস। |
পূর্ত দফতর (সড়ক) সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রস্তাবিত সেতুটির নাম ‘মুড়িঘাটা-অম্বরপুর সংযোগকারী সেতু’। প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১৮ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা। প্রস্তাবিত সেতুটি লম্বায় ১৫২.১৬ মিটার এবং চওড়ায় ৭.৫ মিটার। সেতুটিতে থাকবে সাতটি স্তম্ভ। সেতুর দু’দিকে থাকবে ১.৫ মিটার ফুটপাথ। শিলান্যাস অনুষ্ঠানকে ঘিরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে গ্রামগুলিতে তুমুল উন্মাদনা। আনন্দে আতসবাজিও ফাটাতে শুরু করেন অনেকে। বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের আশ্বাস, “এক বছরের মধ্যে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে।” |