পুনর্বাসনের দাবিতে বিক্ষোভ
তমলুকে রূপনারায়ণের গ্রাস রুখতে কাজ শুরু
রূপনারায়ণের ভাঙন রোধে প্রায় ৩০ কোটি টাকার প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল শুক্রবার। রাজ্য সেচ দফতর আয়োজিত তমলুক শহরের বুদ্ধ পার্কে এক অনুষ্ঠানে এর উদ্বোধন করেন তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, সেচ দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার বরণকুমার ঘোষ, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি গান্ধী হাজরা, তমলুকের পুরপ্রধান দেবিকা মাইতি প্রমুখ। ওই অনুষ্ঠানেই সেচ দফতরের তরফে জেলার ময়না ও নন্দকুমারে নদী-খালের উপর চারটি পাকা সেতুর কাজেরও শিলান্যাস করা হয়।
এ দিন ভাঙন রোধের কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী, জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের কাছে নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা পুনর্বাসনের দাবি তোলেন। সাংসদ ও মন্ত্রীকে ঘেরাও করে কিছুক্ষণ বিক্ষোভও দেখান নদী ভাঙনের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সুচিত্রা বক্সী, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেবী কাণ্ডারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “নদীতে আমাদের বাড়ি-ঘর চলে গিয়েছে। ভাঙন রোধে কাজ হবে বলে অনেক দিন ধরে শুনে আসছি। কিন্তু আমাদের পুনর্বাসনের কোনও কথা বলা হচ্ছে না।” সাংসদ ও মন্ত্রী উভয়েই তাঁদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, “ভাঙন রোধে বড় টাকার কাজ হচ্ছে। সেই কাজে সাহায্য করুন। আপনাদের পুনর্বাসনের বিষয়টিও দেখা হবে।”
ঘেরাও তৃণমূল সাংসদ। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।
তমলুক শহর সংলগ্ন উত্তরচড়া, দক্ষিণচড়া, শঙ্করআড়া, আবাসবাড়ি, চাঁদখোয়া প্রভৃতি এলাকায় গত কয়েক বছর ধরে নদী ভাঙনের জেরে বেশ কিছু বাসিন্দাদের চাষের জমি ও বসতবাড়ি নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, গত তিন বছরে পুরসভার ১৪ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ড মিলিয়ে প্রায় ৫০টি পরিবারের বসতবাড়ি ও কয়েকশো একর চাষের জমি নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। পাশাপাশি ব্যাপক নদীভাঙনের জেরে নদীর স্রোত মূল নদীবাঁধের অনেকটাই কাছে চলে এসেছে। এর ফলে নদীবাঁধের কাছাকাছি এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুরসভা তরফে সেচ দফতরের কাছে নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে একাধিক বার দাবি জানানো হয়। সেচ দফতর নদীভাঙন রোধে বছর দুই আগে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বাঁধ মেরামতি ও স্পার তৈরি করলেও বর্ষার সময় ভরা জোয়ারের স্রোতে সে সব নদীগর্ভে চলে যায়। এই কারণে নদীভাঙন রোধে দীর্ঘ মেয়াদি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সেচ দফতর পরিকল্পনা নেয়। রূপনারায়ণ তীর সংলগ্ন প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় ভাঙন রোধের জন্য ২৯.৩৮ কোটি টাকার ওই প্রকল্প রূপায়ণ করলে চলতি আর্থিক বছরেই বরাদ্দ অনুমোদন করে রাজ্য সরকার। এর ফলে প্রায় ৮০ বর্গ কিলোমিটার এলাকার বাসিন্দা উপকৃত হবে। ওই কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
সেচ দফতর সূত্রে খবর, নদী সংলগ্ন তমলুক শহরের আবাসবাড়ি চর, উত্তর ও দক্ষিণচড়া শঙ্করআড়া, চাঁদখোয়া ও গঞ্জ নারায়ণপুর এলাকায় ভাঙনরোধে কাজ হবে। আবাসবাড়ি চর এলাকার পায়রাটুঙি খালের মোহনা থেকে নন্দকুমারের টোটাবেড়িয়ায় কালিকাখালি খালের মোহনা পর্যন্ত ৪.৪২ কিলোমিটারে এই কাজ হবে। সেচ দফতরের সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার সুবীর লাহা জানান, “ভাঙন এলাকার দু’প্রান্তে তিনটি করে মোট ৪৫টি দীর্ঘ স্পার তৈরি হবে। ওই দুই প্রান্তের মধ্যের এলাকায় নাইলনের তৈরি খাঁচার মধ্যে পলি ব্যাগে মাটি ভরে নদীপাড়ে ফেলা হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.