|
|
|
|
এবিজি-র বিদায়ে ভুগছে পুরসভাও, দাবি তমালিকার |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
হলদিয়া বন্দর থেকে এবিজি বিদায়ের ছাপ পড়ল হলদিয়া পুরসভার বাজেটে।
এবিজি চলে যাওয়ায় হলদিয়া বন্দরে বড় জাহাজ আসা কমেছে। তাই বন্দরের আয়ও কমেছে। তার প্রভাব যে পরোক্ষ ভাবে হলদিয়া পুরসভার উপরেও পড়েছে তা শুক্রবার স্বীকার করে নিলেন পুরপ্রধান তমালিকা পণ্ডা শেঠ। এ দিন নির্বিঘ্নে পুর বাজেট পেশ করার পরে তিনি দাবি করেন, হলদিয়া পুরসভার নিজস্ব আয় কমেছে। যার অন্যতম কারণ বন্দরের আয় কমা।
পুরপ্রধান বলেন, “পুরসভার নিজস্ব আয় কমেছে। কারণ এখানে বড় শিল্প নেই। এমনকী বন্দরের আয়ও কমেছে। তাই তাদের থেকে হোল্ডিং ট্যাক্স অনেক কম পাচ্ছি। শুধু বন্দরের ক্ষেত্রেই তিন-সাড়ে তিন কোটি টাকা কম ট্যাক্স পাচ্ছি। শুধু বন্দর নয়, বন্দর কেন্দ্রিক শিল্প সংস্থার থেকেও পুর-কর পাওয়া যাচ্ছে না।” কেন বন্দরের আয় কমল তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তমালিকাদেবী বলেন, হলদিয়া বন্দরের নাব্যতা যেমন কমে গিয়েছে, তেমনই কমে গিয়েছে হলদিয়া বন্দরের মাল খালাসের পরিমাণ।
তবে হলদিয়া বন্দরের প্রশাসনিক আধিকারিক অমল দত্ত দাবি করেন, “আগে যে টাকা দেওয়া হত এখনও তাই দেওয়া হয়।” কত টাকা হলদিয়া বন্দর হলদিয়া পুরসভাকে প্রতি মাসে দেয় এবং কোন মাসে তার বৃদ্ধি কিংবা হ্রাস হয় নথিপত্র না দেখে সে ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি অমলবাবু।
গত পুজোর পরে পরেই পণ্য খালাস করা সংস্থা এবিজি-র কয়েকজন আধিকারিককে অপহরণ করে হলদিয়া ছাড়তে বাধ্য করা হয়। তার পরেই এবিজি হলদিয়া বন্দরে তাদের কাজকর্ম বন্ধ করে দেয়। হলদিয়া বন্দরের ২ এবং ৮ নম্বর বার্থে কাজ করত এবিজি। ওই বার্থ দুটিতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মাল খালাস করা হত। অন্য বার্থগুলির থেকে ওই দুটি বার্থে মাল খালাস করার হারও ছিল অনেক দ্রুত। এবিজি চলে যাওয়ার পর থেকে ওই দুটি বার্থে মাল খালাস বন্ধ রয়েছে।
হলদিয়া বন্দরের একটি সূত্রে খবর, এবিজি চলে যাওয়ার পরে হলদিয়া বন্দরে বড় জাহাজ ঢোকা কমে গিয়েছে। কারণ, মাল ওঠানো নামানোর জন্য বেশি সময় জাহাজগুলিকে থাকতে হচ্ছে বন্দরে। তার জন্য বেশি টাকা ভাড়া দিতে হচ্ছে তাদের। বন্দর সূত্রের খবর, এবিজি চলে যাওয়ার পরে প্রতি মাসে হলদিয়া বন্দরের আয় কমেছে গড়ে ১৩ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা। জাহাজ থেকে তাদের আয় কমেছে মাসে ৪ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকার। মাল খালাসে আয় কমেছে মাসে ৯ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা।
বন্দর সূত্রের খবর, গত বছর মে, জুন, জুলাই ও অগস্ট এই চার মাসে গড়ে মাল খালাসের জন্য হলদিয়া বন্দরের গড় মাসিক আয় হত ২৫ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা। পণ্য খালাস থেকে বন্দরের গড় মাসিক আয় হত ২৪ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা। সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর এবং ডিসেম্বর মাসে ওই দুটি ক্ষেত্রেই আয় কমে গিয়েছে হলদিয়া বন্দরে। মাল খালাস থেকে তাদের গড় মাসিক আয় কমে হয়েছে ১৬ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা। জাহাজ থেকে তাদের গড় মাসিক আয় কমে হয়েছে ১৯ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। ১৩ মার্চ পর্যন্ত হলদিয়া বন্দরের ২০৫ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। গত বছর এই সময় ৯০ কোটি টাকা লাভ হয়েছিল। অগস্ট থেকে হলদিয়া বন্দরে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল এবিজি।
হলদিয়া পুরসভা সূত্রের খবর, হলদিয়া বন্দরের এই আয় কমারই পরোক্ষ প্রভাব পড়েছে হলদিয়া পুরসভার আয়েও। আয় কমে যাওয়ায় হলদিয়া বন্দরও তুলনায় কম কর দিয়েছে হলদিয়া পুরসভাকে। এ দিন পুর বাজেট পেশের পরে সেটাই জানিয়েছেন পুরপ্রধান তমালিকাদেবী। |
|
|
|
|
|