বুধবার টিকিট বিক্রির সূচনার অনুষ্ঠানে এসেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের সহকারী কোচ-ফুটবলার। বৃহস্পতিবার বিকেলে ডার্বি ম্যাচের ম্যানেজার্স মিটিংয়েও যোগ দিয়েছিলেন লাল-হলুদ কর্তারা। হঠাৎ সেই ইস্টবেঙ্গল শিবির থেকেই শুক্রবার দুপুরে এল ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়ার চিঠি।
ই-মেল করে আইএফএ-কে ‘অনুরোধ’ করা হল, একসঙ্গে চারটে টুর্নামেন্টে খেলতে হচ্ছে। ফুটবলাররা ক্লান্ত। রবিবারের ডার্বি ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়া হোক। স্বাভাবিক নিয়মেই আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় তা মানেননি। জানিয়ে দিয়েছেন, “ম্যাচের প্রস্তুতি শেষ। আপনাদের সমস্যা জানি। কিন্তু এখন ম্যাচ পিছনো সম্ভব নয়।”
কিন্তু শিল্ডের গুরুত্বপূর্ণ সেমিফাইনাল ম্যাচের আগে কেন হঠাৎ এই উলট-পুরাণ? ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়ার চমকপ্রদ অনুরোধ!
কারণ একটাই, ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের তীব্র ‘ক্ষোভ’। সেটা এতটাই যে, শুক্রবারের ম্যাচ পিছোচ্ছে না, জানার পর ফোনে তাঁর ক্ষোভ মিশ্রিত প্রতিক্রিয়া, “আমি হয়তো জেট ল্যাগ কাটিয়ে উঠেছি। ফুটবলাররা কী অবস্থায় আছে জানি না। বাকিটা কাল অনুশীলনের পর বলব।”
লিগ থেকে নক আউটপরপর টুর্নামেন্টের ধাক্কায় বারবার সুইচ অন-সুইচ অফ করতে হচ্ছে ইস্টবেঙ্গলকে। তার উপর রাত জেগে বিমানযাত্রার ধকল ও ক্লান্তি। সব মিলিয়ে চিডি, ওপারা, মেহতাবদের অবস্থা খুবই খারাপ। এই পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ সাহেব কোচ ক্লাবকর্তাদের অনুরোধ করেছিলেন ম্যাচটা পিছিয়ে দেওয়ার জন্য। ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্য বললেন, “আমরা তো চোখের সামনে দেখছি কী অবস্থায় খেলতে হচ্ছে ফুটবলারদের। কোচ আমাদের বলেছিলেন, ম্যাচটা পিছনোর ব্যবস্থা করার জন্য। সে জন্যই চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু আইএফএ যখন পিছবে না বলছে, তখন খেলব। আমরা তো পেরেন্ট বডির সঙ্গে কখনও সংঘাতে যাই না।”
কিন্তু মর্গ্যান কি জানতেন না যে, ভিয়েতনাম থেকে এসেই শিল্ডের ডার্বি খেলতে হবে? লাল-হলুদ ফুটবল সচিব বললেন, “মনে হচ্ছে ক্রীড়াসূচি নিয়ে কোথাও কোনও যোগাযোগের সমস্যা হয়েছে। আমরা বুঝতে পারিনি ভিয়েতনাম থেকে আসতে এত ধকল হবে। বিমান দেড় ঘন্টা দেরি করবে।” নিট ফল, আজ শনিবার মাত্র এক দিন অনুশীলন করেই চিরসম্মানের ডার্বি খেলতে নামবেন চিডি-ওপারারা।
বিমানযাত্রার ক্লান্তির জন্য এ দিন ফুটবলাদের বিশ্রাম দিয়েছিলেন লাল-হলুদ কোচ। কিন্তু ডার্বি খেলতে হচ্ছেই জানার পর ক্ষুব্ধ মর্গ্যান যেমন মানসিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন, তেমনই তাঁর দলের ছেলেরাও। চিডি যেমন এ দিন বলে দিলেন, “আমরা সবাই ক্লান্ত। কিন্তু খেলতে যখন হবে তখন জেতার কথাই ভাবব। ম্যাচটা কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। গোল করতেই হবে।”
এক বার লিগ ম্যাচ। দু’দিন পরেই নক আউট। ব্যাপারটা সড়গড় করতে সমস্যা হয় না? মেহতাব বললেন, “তা যে হয় না, বলব না। তবে আমাদের টিম এতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে এখন।” সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “ডার্বি খেলার মানসিক প্রস্তুতিটাই তো অন্য রকম ব্যাপার।” মেহতাবের মতো উগা ওপারাও জানিয়ে দিলেন, “ক্লান্ত হলেও ম্যাচটা আমাদের জিততে হবে। ওডাফা বা সাবিথ যে-ই সামনে থাকুক তাকে গোল করতে দেব না।” |