দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় • কল্যাণী |
প্রয়াগ ইউনাইটেড-২ (রফিক, ভিনসেন্ট)
দেপোর্তিভো সাপ্রিসা-১ (জোনাথন) |
অস্ট্রেলিয়ায় তিনি ‘ধূর্ত শিয়াল’। সেই কোস্তারিকান ‘এল ফক্স’ কার্লোস হার্নান্ডেজকে কী নামে ডাকা যেতে পারে, তা নিয়ে দিনের শেষে রীতিমতো গবেষণা কল্যাণীতে।
ডাবল এজেন্ট? না কি বুমেরাং?
এত দিন ওডাফা-মোগারা কে কেমন, সেই খবরাখবর কার্লোস মারফত দিব্যি পকেটে ঢুকে পড়ত সাপ্রিসা কোচ ভালদিমিরের। কিন্তু কার্লোস যে রাতারাতি এমন ভোল পাল্টে বসবেন বোধহয় সাপ্রিসা কোচ ভাবতে পারেননি। তিনি র্যান্টিকে নিয়ে ভেবেছিলেন, উল্টে হজম করলেন কার্লোসের কোটি টাকার পাস থেকে ভিনসেন্টের গোল। শুধু তাই নয়, কার্লোস এ বারও ‘খবর’ দিলেন। তবে ভালদিমির নয়, নিজের কোচ এলকো সাতোরিকে।
ম্যাচের শেষ লগ্নে গ্যালারির এই চর্চিত বিষয় কানে যেতে থমথমে মুখে তাকালেন আনা মারিসেলা আভিলা বেসেরিল। ভারতে নিযুক্ত কোস্তারিকা দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি। জবাবটা যদিও মজাদার, “তাতে কী? ফাইনালে তো এক জন কোস্তারিকান মাঠে নামবে।” |
অর্থাৎ, কার্লোস হার্নান্ডেজ!
তবে শিল্ড ফাইনালে একের বদলে যে এগারো জন কোস্তারিকান থাকছেন না, তার পিছনে অবশ্য সাতোরির মগজাস্ত্র। কার্লোসের কাছ থেকেই জেনেছিলেন সাপ্রিসার দুর্বল জায়গা ফিনিশিং। আর তাঁর বিরুদ্ধে কার্ড সমস্যায় রক্ষণে নেই ওডাফাকে আটকে দেওয়া লুইস হার্নান্ডেজ। তাই সাতোরি দল সাজিয়েছিলেন ৪-১-২-১-২। চার ব্যাকের সামনে দাঁড়িয়ে বিপক্ষের পা থেকে বল কাড়বেন তপন মাইতি (কার্ড সমস্যায় ফাইনালে নেই তিনি ও ধনচন্দ্র)। আক্রমণে কার্লোস, রফিক, র্যান্টির ত্রিভুজ। প্রথম জন ডেড বল কিক আর গোলের ঠিকানা লেখা পাস বাড়াবেন। আর মিনিট পনেরো এঁরা পরপর জায়গা পাল্টাবেন নিজেদের মধ্যে।
মাঠে সাতোরির এই চালেই ধোঁকা খেল কোস্তারিকার দলটি। সাতোরি জানতেন কার্লোস নন, বিপক্ষ নজরে রাখবে র্যান্টিকে। তাই হল। ফাঁকা পড়ে গেলেন রফিক। এবং গোল। তবে লিড বেশিক্ষণ টেকেনি গৌরমাঙ্গীর ‘বদান্যতায়’। জেতার জন্য এ দিন বারবার ফর্মেশন পাল্টেছে সাপ্রিসা। ৪-২-৩-১। ৪-৩-৩। ৪-২-৪। কিন্তু ওয়াল্টার সেন্তিনোদের ভয়ঙ্কর হতে দিলেন না সংগ্রাম, দীপক, জেমসরা। বরং র্যান্টি-কার্লোস আক্ষেপ করতে পারেন জোড়া গোল ফসকানোর জন্য। স্কোরলাইন আজ ২-১-এর বদলে ৫-১ হলেও কিছু বলার ছিল না।
ম্যাচ শেষে গরগর করছিলেন কার্লোস। “একশো কুড়ি মিনিট খেলেও শুনতে হবে ফিট নই।” রাগটা সত্যি না কপট, বোঝা গেল না। যেমন ধরা গেল না টিমকে জিতিয়ে ভিনসেন্ট জার্সি তুলে কী দেখাচ্ছিলেন? কতকগুলো সাঙ্কেতিক অক্ষর। জিজ্ঞেস করায় উত্তর এল, “এটা জোক। আমার পুরনো টিম মেলবোর্ন নাইটসের বন্ধুরা বুঝবে। আপনারা নন।”
দুই নায়কের মর্জি-মেজাজ বোঝা না গেলেও, একটা জিনিস স্পষ্ট। শিল্ড এ বারও থাকছে কলকাতাতেই!
প্রয়াগ ইউনাইটেড: সংগ্রাম, দীপক, গৌরমাঙ্গী, বেলো, ধনচন্দ্র, তপন, জেমস, রবিন্দর (লালকমল), কার্লোস, রফিক (শঙ্কর), র্যান্টি (ভিনসেন্ট)। |