টেনিসে সেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা
ত্রিমুখী হয়ে উঠল
গোড়ালির সাত মাসের চোট সারিয়ে সার্কিটে ফিরে প্রথম বড় ম্যাচেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ফেডেরারকে নাদাল ৬-৪, ৬-২ এক রকম উড়িয়ে দেওয়ার পর আমার কাছে একটা জিনিস পরিষ্কার। টেনিসে সেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা এই মুহূর্ত থেকে শুধু জকোভিচ বনাম মারে আর থাকল না। নাদাল ওদের মধ্যে আবার রীতিমতো ঢুকে পড়ল। সোজা কথায়, সেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ত্রিমুখী হয়ে দাঁড়াল। জকোভিচ বনাম মারে বনাম নাদাল। তিন জনের যে যার বিরুদ্ধে খেলবে সেটাই এখন বিশ্ব টেনিসে সেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা। গ্রেট রাইভালরি। বলতে খারাপ লাগলেও, সেখানে ফেডেরারের জায়গা থাকছে না।
শুক্রবার সাতসকালে উঠে টিভিতে রাফা বনাম রজারের ইন্ডিয়ান ওয়েলস মাস্টার্স কোয়ার্টার ফাইনাল লড়াই দেখতে দেখতে কেমন অদ্ভুত লাগছিল! টেনিসের সর্বকালের অন্যতম দুই সেরাকে নিজেদের মধ্যে ফাইনাল কিংবা বড়জোর সেমিফাইনালে লড়তে দেখতেই গত দশ বছর ধরে আমরা অভ্যস্ত। ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখছি, ২০০৪ মিয়ামি মাস্টার্সে দু’জনে প্রথম মুখোমুখি হয়েছিল তৃতীয় রাউন্ডে। তার পর ২৭টা লড়াই দু’জনের হয়েছে ফাইনাল বা সেমিফাইনালে। তার পর এ দিন আবার কোনও টুর্নামেন্টের এত গোড়ার দিকে মুখোমুখি হল। এতেই বোঝা যায়, টেনিসে ‘গ্রেট রাইভালরি’ আর রাফা বনাম রজার নয়।
দৃশ্যপট

হেরে কোর্ট
ছাড়ছেন ফেডেরার

মন খারাপ
স্ত্রী মিরকার

কোর্টে না এলেও বান্ধবী
মারিয়া কি মেসেজ
পাঠাচ্ছেন নাদালকে?

বিজয়ীর মেজাজ।
রজার ফেডেরার তো পুরো ফিট-ই নেই। একত্রিশ বছর বয়সটা ওর শরীরে একটু একটু করে থাবা বসাচ্ছে। একটা লম্বা ম্যারাথন ম্যাচ খেললে তার পরের রাউন্ডে নেমে আর পুরো একশো ভাগ দিতে পারছে না। নাদালকে খেলার আগের রাউন্ডে ফেডেরার ঠিক ওই রকম একটা লম্বা ম্যাচ খেলেছিল। সেই ম্যারাথন ম্যাচে আবার পিঠে ব্যথাও পেয়েছিল। যার ধাক্কা নাদাল ম্যাচেও সামলে উঠে পারেনি। পুরো ফিট না থাকলে এক জন যেমন টেনিসটা খেলে থাকে, ক্যালিফোর্নিয়ার হার্ডকোর্টে ১৭ গ্র্যান্ড স্লাম চ্যাম্পিয়ন ফেডেরারও সেই রকমই খেলল। র্যালিতে না গিয়ে। কোর্টের দু’প্রান্তে বেশি ছোটাছুটি না করে শুধুই বল হিট করে গেল। প্রায় সব স্ট্রোকে উইনার মারতে গেল।
পাশাপাশি নাদালকে আমার পুরো একশো ভাগ ফিট লেগেছে। তা, মুখে ও যতই বলুক “এখনও হান্ড্রেড পার্সেন্ট ফিট নই।” ওটা নাদালের অনেক দিন পর সার্কিটে ফিরে নিজের ওপর বেশি চাপ না-নেওয়ার একটা কৌশল। চ্যাম্পিয়ন প্লেয়াররা কোনও দিন পুরো একশো ভাগ চোট না সারিয়ে মাঠে ফেরে না। কারণ, চ্যাম্পিয়নদের নিজেদের ভাবমূর্তি অক্ষত রাখার নিরন্তর প্রচেষ্টা থাকে। তবে আনফিট ফেডেরারের বিরুদ্ধে নাদালের এক ঘণ্টা ২৪ মিনিটে। ম্যাচে মাত্র দু’টো ব্রেক পয়েন্টের মুখোমুখি হয়ে। বিপক্ষের চার বার সার্ভিস ভেঙে জয়ে তাঁর পারফরম্যান্সের বিচার হয় না। তা সত্ত্বেও বলব, একশো ভাগ ফিট অবস্থায় নামলে এ বারও ফরাসি ওপেনে নাদালকে হারাবার মতো কেউ নেই।
ক্লে-র তুলনায় হার্ডকোর্টে প্লেয়ারের পায়ের মাসলে চাপ বেশি পড়ে। তবু হাঁটুর অস্ত্রোপচার করিয়ে আসা নাদালকে যথেষ্ট সাবলীল, তীক্ষ্ম মনে হল। ক্লে কোর্ট সম্রাটকে তো তা হলে রোলাঁ গারোয় ভয়ঙ্করই দেখাবে। তবে উইম্বলডন যুক্তরাষ্ট্র ওপেনেরটা বলা যায় না।
যদিও হার্ডকোর্টে ফেডেরারের বিরুদ্ধে নাদাল এ দিন স্কোরলাইন ৬-৬ করে ফেলল। সব মিলিয়ে তো নাদাল বহু এগিয়ে। ১৯-১০। হার্ডকোর্টে দু’জনের স্কোরলাইনে অবশ্য একটা তাৎপর্য আছে। ইন্ডোর হার্ডকোর্টে ফেডেরার যদি ৪-০ এগিয়ে থাকে তো আউটডোর হার্ডকোর্টে নাদাল এগিয়ে ৬-২। আসলে ইন্ডোর হার্ডকোর্ট বরাবর দ্রুত হয়। আর ফাস্ট কোর্টের সঙ্গে ফেডেরারের খেলার স্টাইল বেশি খাপ খায়। আউটডোরে হাওয়ার একটা ব্যাপার থাকে। নাদালের হেভি টপস্পিন প্রতিদ্বন্দ্বীর রিটার্ন করা আরও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। পিঠের ব্যথা নিয়ে ফেডেরারের পক্ষে তো রিটার্ন করা আরওই অসম্ভব হয়ে উঠেছিল এ দিন।

রাফার হাঁটুতে ব্যান্ডেজ বাঁধা ছিল। কয়েক বার যেন সামান্য খোঁড়াল। তা-ও ওর সুস্থতা
নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই আমার...হার্ডকোর্টে ও অনেক দিন পর খেলছে। জানি না
হাঁটুর ব্যান্ডেজটা বাড়তি সতর্কতার কারণে, নাকি ওটাতে ও অভ্যস্ত হয়ে উঠছে...
রজার ফেডেরার
প্রথম সেট অনবদ্য খেলেছি। দ্বিতীয়টা অদ্ভুত! রজারের লড়াইটা যেন স্বাভাবিক ছিল
না। সম্ভবত ওর শারীরিক সমস্যা হচ্ছিল...দু’সপ্তাহ আগেও জানতাম না এখানে
আসতেই পারব কি না। আর এখন আমি সেমিফাইনালে! যেটা আমার কাছে বড় চমক...
রাফায়েল নাদাল

ছবি: এএফপি, রয়টার্স





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.