পাঁচ মাস পরে পুর-বৈঠকে যোগ কংগ্রেসের
নাস্থা-পর্বের পর থেকেই খড়্গপুরের পুর-বৈঠকগুলিতে গরহাজির থাকছিলেন কংগ্রেস শিবিরের কাউন্সিলাররা। শেষমেশ প্রায় পাঁচ মাসের মাথায় শুক্রবার পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে যোগ দিলেন তাঁরা। কংগ্রেস শিবির তাদের অনড় অবস্থায় থেকে সরে আসায় খুশি তৃণমূল। পুরসভার ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধান তুষার চৌধুরীর কথায়, “ওঁদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। শহরের উন্নয়নের প্রশ্নে একমত হয়েছেন। আমি সকলের সহযোগিতা নিয়েই কাজ করতে চাই।” আর প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কংগ্রেস কাউন্সিলার রবিশঙ্কর পাণ্ডের বক্তব্য, “আমাদের অবস্থানের ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে। আমরা কখনও বলিনি, বোর্ড মিটিংয়ে যোগ দেব না। শুধু বলেছি, অর্থ বরাদ্দ নিয়ে এই বোর্ড কোনও মিটিং ডাকতে পারে না। শুক্রবার গুরুত্বপূর্ণ মিটিং ছিল। এমন মিটিংয়ে যোগ না-দিলে শহরের উন্নয়নে সমস্যা হত। আমরা তা চাই না।”
খড়্গপুরে কংগ্রেস-তৃণমূলের সম্পর্ক বরাবরই অম্ল-মধুর। অনাস্থা নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হওয়ার পর কংগ্রেস শিবিরের ১৫ জন এবং বিজেপির একমাত্র কাউন্সিলার বোর্ড মিটিং এড়িয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধান অর্থ বরাদ্দ করা নিয়ে কোনও মিটিং ডাকতে পারেন না। পুরপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর তুষার চৌধুরী প্রথম বোর্ড মিটিং ডাকেন গত বছরের ১৮ অক্টোবর। মিটিংয়ে ওই ১৬ জন কাউন্সিলার অনুপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য এই কাউন্সিলাররাই পুরসভার সভাকক্ষে মিটিং করে রবিশঙ্কর পাণ্ডেকে পরবর্তী পুরপ্রধান হিসেবে নির্বাচিত করেছিলেন। যে মিটিং অবৈধ বলে তৃণমূলের দাবি। যা নিয়ে হাইকোর্টে মামলাও চলছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, উন্নয়ন প্রকল্পও জমা দিচ্ছিলেন না ওই ১৬ জন কাউন্সিলার। ফলে, অর্থ বরাদ্দ হলেও শহরের সার্বিক উন্নয়ন কতটা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই অবস্থান নিয়ে দলের মধ্যে মতভেদ তৈরি হয়। পরিস্থিতি দেখে অনড় অবস্থান থেকে পিছিয়ে আসে কংগ্রেস-শিবির। শুরুতে ঠিক করা হয়েছিল, মামলার রায় না-বেরনো পর্যন্ত কাউন্সিলাররা ওয়ার্ডের উন্নয়ন প্রকল্প জমা দেবেন না। সেই অবস্থান থেকে পিছিয়ে এসে চলতি মাসের শুরুতে ১৬ জন কাউন্সিলার প্রকল্প জমা দেন। শুক্রবার কংগ্রেস-শিবিরের কাউন্সিলাররা বোর্ড মিটিংয়েও যোগ দিলেন।
পুরসভা সূত্রে খবর, এ দিন সব মিলিয়ে ২০ জন কাউন্সিলার উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে তৃণমূলের ১৪ জন, কংগ্রেসের ৩ জন, সিপিএম-সিপিআই এবং বিজেপির এক জন। খড়্গপুরে ৩৫ জন কাউন্সিলার রয়েছেন। যেহেতু সংখ্যাগরিষ্ঠই উপস্থিত ছিলেন, তাই কোনও সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধে হয়নি।
রাজনৈতিক মহলের মতে, পরিস্থিতির চাপে পড়েই সুর কিছুটা নরম করেছে কংগ্রেস। প্রায় পাঁচ মাসের অনড় মনোভাব থেকে সরে এসে বোর্ড মিটিংয়ে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত তারই ইঙ্গিত। মূলত, বাজেট নিয়ে বোর্ড মিটিং ডাকা হয়েছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাউন্সিলাররা তাঁদের মতামত জানান। পুর-কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেন। মিটিংয়ে পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএম কাউন্সিলর অনিতবরণ মণ্ডল প্রস্তাব দেন, প্রতিটি ওয়ার্ডেই সাফাই কর্মীর সংখ্যা কম। ফলে সমস্যা হচ্ছে। ওয়ার্ড-পিছু অন্তত দু’জন করে সাফাই কর্মী নিয়োগ করা জরুরি। পুরসভার দৈনন্দিন কাজকর্ম চালানোর জন্যও নতুন শূন্যপদ সৃষ্টি করা জরুরি। পাশাপাশি, পুরসভার যে সব কর্মীর অবসরের আগেই মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের এক সদস্যের চাকরির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখারও আর্জি জানান তিনি। পুর-কর্তৃপক্ষ এই সব প্রস্তাব খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেন। মিটিং শেষে ভারপ্রাপ্ত পুরপ্রধান বলেন, “শহরের উন্নয়নে আমরা রাজনীতি চাই না। শুক্রবারের মিটিং যেমন ভাল ভাবে হয়েছে, আশা করব আগামী মিটিংগুলোও ভাল ভাবে হবে।” বৈঠক শেষে সিদ্ধান্ত হয়, আগামী মঙ্গলবার ফের বোর্ড মিটিং হবে। শহরের উন্নয়ন নিয়ে সেখানে আলোচনা হওয়ার কথা। সঙ্গে কিছু সিদ্ধান্তও নেওয়া হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.