নিজেদের ভুয়ো পরিচয় ফাঁস হয়ে যেতেই এক ব্যবসায়ীর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে অপহরণ করল কয়েক জন দুষ্কৃতী। বৃহস্পতিবার রাতে এমনই অভিযোগ উঠল বাগুইআটি থানার কৈখালিতে। পরে মোবাইলের টাওয়ারের অবস্থান দেখে ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় দুষ্কৃতীদেরও। পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীরা নিজেদের সিবিআই, ভিজিল্যান্স অফিসার বলেও দাবি করে। ধৃতদের নাম পার্থ গুহ, হিমাদ্রি বসু এবং মাধব পাল। শুক্রবার বারাসত আদালতে তোলা হলে ধৃতদের তিন দিনের পুলিশি হেফাজত হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, চিনার পার্কের বাসিন্দা শৌভিক মিস্ত্রি ও তাঁর কয়েক জন বন্ধু মাস তিনেক আগে সিঙ্গুরে একটি ফলের রস তৈরির কারখানা খোলেন। কৈখালিতে তাঁদের মার্কেটিংয়ের অফিস। কারখানা খোলার কিছুদিন পরেই পার্থ, হিমাদ্রি ও মাধব নামে ওই তিন ব্যক্তি কৈখালির ওই অফিসে যান। অভিযোগ, পার্থবাবু নিজেকে সিবিআই-এর অফিসার বলে দাবি করে জানান, তাঁর বন্ধু হিমাদ্রি বসুর বিজ্ঞাপন এজেন্সি আছে। আর এক বন্ধু ভিজিল্যান্স বিভাগের কর্তা। তাঁরা প্রতিশ্রুতি দেন, কম টাকায় শৌভিকবাবুদের ফলের রসের বিজ্ঞাপন করিয়ে দেওয়ার। অভিযোগ, বিজ্ঞাপনবাবদ খরচের জন্য তাঁরা শৌভিকের কাছ থেকে দু’দফায় ৯০ লক্ষ টাকা নেন। কিন্তু কিছু দিন পরেই পার্থবাবুদের উপরে সন্দেহ হয় শৌভিকের। বৃহস্পতিবার তাই শৌভিকবাবু পার্থকে ফোন করে টাকা ফেরত চান। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে যান পার্থবাবুরা। অভিযোগ, বৃহস্পতিবারই পার্থরা তিন জনে শৌভিকের অফিসে এসে বন্দুক দেখিয়ে তাঁকে অপহরণ করেন।
বাগুইআটি থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন শৌভিকের ব্যবসার সঙ্গী বিকাশ হাওলাদার। শৌভিকের এক বন্ধু রাজু শর্মা বলেন, “অপহরণের সময়ে অফিসে আর এক জন কর্মী ছিলেন। তিনি গোটা ঘটনাটি দেখেছেন।” পুলিশ মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান দেখে পরে শৌভিককে যুবভারতী স্টেডিয়ামের ভিতরে একটি হোটেল থেকে উদ্ধার করে। হাতে নাতে গ্রেফতার হন পার্থ, হিমাদ্রি ও মাধব। ধৃতদের কাছে কিছু ভুয়ো সিবিআই ও ভিজিল্যান্স বিভাগের ভিজিটিং কার্ডও মিলেছে। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসি সন্তোষ নিম্বলকর বলেন, “ধৃতেরা ভুযো পরিচয় দিয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে।” |