অতিরিক্ত মাদক সেবনের জেরেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে সাদিক জাফর ওরফে গুড্ডার। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই মনে করছেন কারা দফতরের কর্তারা। সেই সঙ্গে গুড্ডার মৃত্যু ফের প্রমাণ করেছে, নিরাপত্তার কড়াকড়ি এড়িয়ে জেলের মধ্যে অবাধে চলছে মাদক সেবন।
জেল কর্তারা অবশ্য বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার কোনও মন্তব্য করতে চাননি। রাজ্যের আইজি (কারা) রণবীর কুমার এ দিন বলেন, “নিয়ম মেনে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এ নিয়ে মন্তব্য করা যাবে না।” তবে জেলের একাধিক কর্তা জানাচ্ছেন, দমদম জেলে অবাধে রাজ করত মধ্য কলকাতার কুখ্যাত এই অপরাধী। জেলের এক কর্তার কথায়, “গুড্ডা এখনও পর্যন্ত যে জেলেই গিয়েছে, সেখানকার জেল কর্তৃপক্ষ ওকে নিয়ে তটস্থ থেকেছেন। প্রেসিডেন্সি থেকে দমদম জেল, সব জায়গাতেই মারপিট থেকে শুরু করে ফোনে তোলাবাজি, মাদক সেবনের অভিযোগ ছিল ওর বিরুদ্ধে।” পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১০-এ জেল থেকে ছাড়া পেয়েই ফের সে তোলাবাজি শুরু করে মধ্য কলকাতার নানা এলাকায়। তোলাবাজির অভিযোগে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে পার্ক স্ট্রিট থেকে আবার গ্রেফতার হয়। এর পরে প্রেসিডেন্সি জেলে গুড্ডার সেল থেকে মেলে পিস্তল ও কার্তুজ। তাকে পাঠানো হয় দমদম জেলে। সেখানে গিয়েও তোলাবাজি শুরু করে গুড্ডা।
সেখানেই মধ্য কলকাতার আর এক দাগি অপরাধী রশিদ আলম ওরফে গব্বরের সঙ্গে নিয়মিত ঝামেলা শুরু হয় গুড্ডার। বাধ্য হয়ে মাস খানেক আগে গব্বরকে দমদম থেকে আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে সরানো হয়। সম্প্রতি দমদম জেলেই গুড্ডা এবং গব্বরের মধ্যে মারপিটের জেরে গুরুতর জখম হয় সুরজিৎ নামের এক বন্দি। কারা দফতরের এক কর্তার কথায়, “নিয়মিত অত্যধিক মাত্রায় মাদক সেবন করত গুড্ডা। মাদক না পেলেই অস্বাভাবিক আচরণ করত।”
সেই মাদকের জেরেই শেষ পর্যন্ত গুড্ডার মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করছেন কারা-কর্তারা। জেল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ আচমকা গুড্ডার সেলের সহবন্দিরা তার গোঙানির আওয়াজ পেয়ে জেল কর্তৃপক্ষকে খবর দেয়। বারবার বমি করছিল গুড্ডা। অতিরিক্ত মাদক সেবনেই সে অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে মনে করছেন জেল প্রশাসনের কর্তারা। রক্ষীরা পরিস্থিতি দেখে তাকে জেলের হাসাপাতালে নিয়ে যান। ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই মৃত্যু হয় গুড্ডার। |