মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির উপরে লরি থেকে জঞ্জাল পড়ার পরে নড়েচড়ে বসতে গিয়ে উল্টে আরও গভীর গর্তে পড়ল পুরসভা। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, ফিটনেস সার্টিফিকেটহীন লরি পুরসভার জঞ্জাল তোলার কাজ করতে পারবে না। তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে জানা গেল, জঞ্জালবাহী লরিগুলির অধিকাংশেরই ওই নথি নেই। অর্থাৎ, সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে গেলে মুখ থুবড়ে পড়বে শহরের জঞ্জাল সাফাইয়ের পুরো প্রক্রিয়া। সব মিলিয়ে পুর-প্রশাসনের সিদ্ধান্তে এখন ফ্যাসাদে জঞ্জাল অপসারণ দফতর।
ওই দফতর সূত্রের খবর, দৈনিক শ’চারেক লরি শহরের আবর্জনা বোঝাই করে ধাপায় ফেলে। সেগুলির ৯৫ শতাংশের ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই। অর্থাৎ, সেগুলি ব্যবহার করতে না দেওয়া হলে শহরের জঞ্জাল তোলার কাজ পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।
সমাধান সূত্র খুঁজতে বৃহস্পতিবার পুরসভায় অফিসারদের নিয়ে নিজের ঘরে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবব্রত মজুমদার। দফতরের এক অফিসারের কথায়, “পুরসভার নিজস্ব ১২০টি লরি জঞ্জাল ফেলার কাজে নিযুক্ত। কোনওটির ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই। গাড়িগুলোর যা অবস্থা, তাতে ফিটনেস সার্টিফিকেট হবেও না। সেগুলো চলতে না দিলে জঞ্জাল ফেলা হবে কী ভাবে, ভেবে পাচ্ছি না।” একইসঙ্গে তিনি জানান, ভাড়া করা লরিগুলোরও হাল তথৈবচ। সে ক্ষেত্রে পুর-প্রশাসনের নির্দেশ লাগু হলেই ময়লা তোলার সব গাড়ি রাস্তা থেকে তুলে নিতে হবে। যদিও মেয়র পারিষদ দেবব্রতবাবুর বক্তব্য, “পুরসভার নিজস্ব মোটর ভেহিক্লস দফতরের নিরিখে জঞ্জাল অপসারণ দফতরের গাড়িগুলো ফিট। তবে পরিবহণ দফতর থেকে ফিটনেস সার্টিফিকেট নিতে বলা হয়েছে।”
ট্রাফিক পুলিশের এক পদস্থ অফিসার জানিয়ে দেন, এ বার থেকে জঞ্জালবাহী প্রতিটি লরির ফিটনেস ও কাগজপত্র ঠিক আছে কি না, তা দেখবে পুলিশ ও মোটর ভেহিক্লসের অফিসারেরা। আর লরি থেকে আবর্জনা পড়লেই সেই গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হবে। আগামী এপ্রিল মাস থেকে ওই নতুন নির্দেশ মেনে কাজ শুরু হবে।
জঞ্জালভর্তি লরি থেকে ময়লা পড়ছে কি না, তা দেখতে এ দিন দক্ষিণ কলকাতার একাধিক জায়গা ঘুরে দেখেন পুর কমিশনার খলিল আহমেদ। টালিগঞ্জ খালের ধারে এমনই এক দৃশ্য চোখে পড়ায় তৎক্ষণাৎ ওই দফতরের সংশ্লিষ্ট অফিসারকে ডেকে পাঠান তিনি। এর পরেই টালিনালা বরাবর কুদঘাট থেকে গড়িয়া এবং বাইপাস এলাকায় জঞ্জালবাহী লরির উপরে নজরদারি করতে দু’জন অফিসারকে নিয়োগ করার নির্দেশ দেন। |