খালের জলে ভেসে আসা গোলাপি রঙের দু’টি ছোট কন্টেনার ঘিরে বোমাতঙ্ক ছড়াল কুদঘাটে, নেতাজি মেট্রো স্টেশনের কাছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকাল ন’টা নাগাদ। যে খালের জলে ওই সন্দেহজনক জিনিস দু’টি পাওয়া যায়, তার উপর দিয়েই গিয়েছে মেট্রো রেলের লাইন। ফলে নিরাপত্তার নিশ্চিত করতে কিছুক্ষণ মেট্রোও বন্ধ থাকে। সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা।
মেট্রো সূত্রে খবর, বোমাতঙ্ককে কেন্দ্র করে সকাল ১০টা ৩৮ থেকে ১০টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশন থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত মেট্রো চলাচল বন্ধ থাকে। বম্ব স্কোয়াড ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে কন্টেনার দু’টি নিয়ে যায়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, কন্টেনারে বিস্ফোরক জাতীয় কিছু ছিল না। তবে একটি কন্টেনার খুলতেই গোলাপি রঙের গ্যাস বেরিয়ে আসে। এর জেরে আতঙ্ক ছড়ায় মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন কুদঘাট বাজারেও।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ প্রথমে বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় বাসিন্দাদের। খালের জলে একটি চটের বস্তায় ওই দু’টি কন্টেনার ভেসে আসতে দেখেন এক কাগজকুড়ুনি মহিলা। স্থানীয় এক মুরগির মাংসের দোকানি সুমিত চৌধুরী বলেন, “ওই মহিলা ওই বস্তা থেকে একটি কন্টেনার নিয়ে মুখটা খুলতেই কিছুটা জোরে একটা শব্দ হয়। তার পরেই গলগল করে গোলাপি ধোঁয়া বেরোতে থাকে। ভয়ে আমরা সবাই এ দিক-ও দিক ছোটাছুটি করতে থাকে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই ঘটনার জেরে বোমাতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে লাগোয়া বাজার এলাকায়। অনেকে দোকানও বন্ধ করে দেন। এক দোকানদার বিশ্বনাথ পাল বলেন, “সকালে বাজারে ভিড় ছিল ভালই। গোলাপি রঙের ওই ধোঁয়ায় কারও কারও কাশি হতে থাকে। বিষাক্ত কোনও গ্যাস অথবা অন্য কিছু ভেবে বাজারের অধিকাংশ লোকই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।” এর পরেই এলাকার লোকজন পুলিশে খবর দেন। পুলিশ খবর দেয় বম্ব স্কোয়াডে।
এ দিকে, দু’টি কন্টেনারের মধ্যে একটি খোলা হলেও অন্যটি তখনও খালের পাড়েই পড়ে ছিল বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। সেটিকে উদ্ধার করেন বম্ব স্কোয়াডের কর্মীরা। মেট্রো রেলের মুখপাত্র প্রত্যুষ ঘোষ বলেন, “মেট্রো রেলের উড়ালপুলের স্তম্ভ ওই খালেই বসানো। ফলে নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করেই আমরা কিছুক্ষণ মেট্রো বন্ধ রাখি। টালিগঞ্জ থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত দু’দিকেই মিনিট কুড়ি বন্ধ ছিল পরিষেবা।” অফিস টাইমে মেট্রো চলাচল আংশিক বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েন নিত্যযাত্রীরা।
পুলিশ জানায়, গোলাপি রঙের কন্টেনার দু’টির গায়ে লেখা ছিল ‘সিগন্যাল স্মোক। মেড ইন জার্মানি।’ প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, দূরে কোথাও সঙ্কেত দেওয়ার ক্ষেত্রে এই সিগন্যাল স্মোক ব্যবহার করা হয়। কন্টেনারগুলি ওই খালের জলে কী ভাবে এল, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। |