পাকিস্তানি পার্লামেন্টে আফজল গুরু নিয়ে সমালোচনার পাল্টা প্রস্তাব গ্রহণ করল সংসদ। তবে আজও বিরোধীদের আক্রমণ থেকে রেহাই পেল না মনমোহন সিংহ সরকার।
প্রথমে ভারতীয় জওয়ানদের মাথা কাটা, হায়দরাবাদের বিস্ফোরণ ও কাশ্মীরে সাম্প্রতিক জঙ্গি হানায় এমনিতেই উত্তপ্ত ছিল ভারত-পাক সম্পর্ক। তার মধ্যেই পাকিস্তানের পার্লামেন্ট আফজল গুরুর ফাঁসির সমালোচনা করে প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। আজ পাক প্রস্তাবের বিরোধিতায় লোকসভার স্পিকার ও রাজ্যসভার চেয়ারম্যান প্রস্তাব গ্রহণ করেন। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পাক পার্লামেন্টের এই প্রস্তাবকে খারিজ করছে ভারত। পাক-অধিকৃত কাশ্মীর-সহ গোটা জম্মু-কাশ্মীরই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কোনও অংশ থেকে সেখানে হস্তক্ষেপের চেষ্টা হলে ভারত তার কড়া জবাব দেবে।
বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পাকিস্তান সম্পর্কে কড়া মনোভাব দেখাতে গত কালই নয়াদিল্লি পাক নাগরিকদের জন্য ভিসা নীতি কঠোর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে নয়াদিল্লি ভারত-পাক হকি সিরিজও বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এপ্রিল মাসে ওই হকি ম্যাচ শুরু হওয়ার কথা ছিল। তার পরে আবার এপ্রিলের শেষে ভারতের পাঁচটি ম্যাচ খেলতে পাকিস্তানে যাওয়ার কথা ছিল। দীর্ঘ সাত বছর পর দু’দেশের হকি দল মুখোমুখি হতে চলেছিল। ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার পরে ভারত-পাকিস্তানেরম মধ্যে সব রকম সিরিজ বন্ধ হয়ে যায়। পরে আবার সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্ত নিয়ে এই হকি সিরিজের পরিকল্পনা হয়েছিল।
আজ সংসদে পাশ হওয়া কড়া ভাষায় প্রস্তাবে বলা হয়, ‘পাকিস্তান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে সে দেশের মাটিকে ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসে ব্যবহার হতে দেবে না এবং সেই প্রতিশ্রুতি পূরণই পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্কের একমাত্র ভিত্তি হতে পারে। এই সংসদ ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্যের নাক গলানোকে খারিজ করে পাকিস্তান ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিকে আহ্বান জানাচ্ছে, তারা চরমপন্থী এবং সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থন করা থেকে বিরত থাকুক।’
শ্রীনগরে নিহত এক সিআরপি জওয়ান লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজের নির্বাচনী কেন্দ্রের বাসিন্দা। ওই জওয়ানের শেষযাত্রায় যোগ দিতে নিজের কেন্দ্রে গিয়েছেন সুষমা। সেখানে তিনি সরকারকে এক হাত নিয়েছেন। রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলি আজ প্রশ্ন তোলেন, পাকিস্তান বারবার ভারতের প্রতি আক্রমণাত্মক মনোভাব নিলেও ভারত কেন নরম মনোভাব নেয়? কেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য আরও অনেক পা হাঁটতে তিনি রাজি? বরং বাস্তবে পাকিস্তানের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করা দরকার। যাতে প্রতিবেশী এই রাষ্ট্রই ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়।
জেটলি দাবি করেন, শুধু পাকিস্তান নয়, মলদ্বীপ, ইতালি- একের পর এক দেশের ক্ষেত্রে ভারতের বিদেশনীতি মুখ থুবড়ে পড়ছে। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদের উপস্থিতিতে দেশের বিদেশ নীতি নিয়ে সামগ্রিক আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। জবাবে সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী রাজীব শুক্ল বলেন, সরকার বিদেশনীতি নিয়ে যে কোনও আলোচনায় প্রস্তুত।
|