আসন রফা নিয়ে সিপিএমের বিরুদ্ধে গুরুত্ব কম দেওয়ার অভিযোগ তুলে ভোটে একা লড়াই সিদ্ধান্ত নিল বাম শরিক সোসালিস্ট পার্টি। বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জে জেলা দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে দলের জেলা সভাপতি অরুণ দে ওই ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে শক্তির বিচারে আমাদের ৪০ শতাংশ আসন ছাড়া হোক। সিপিএম নেতৃত্ব হেমতাবাদ ব্লকে ১ শতাংশ ও রায়গঞ্জ ব্লকে ২০ শতাংশ ছাড়া বাকি সাতটি ব্লকে আসন ছাড়তে চাইছেন না। দলীয় কর্মীদের মনোবল ভেঙে যাচ্ছে। তাই দলীয় কর্মী সমর্থকদের মত নিয়েই আমরা পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় ৮০ শতাংশ আসনে একক ভাবে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” তা লিখিত ভাবে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক রাজ্যসভার সাংসদ কিরণময় নন্দকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে বলে তিনি জানিয়েছেন।
কিরণময়বাবু বলেন, “সিপিএমের তাচ্ছিল্য ও অবজ্ঞা আমাদের পক্ষে মানা সম্ভব নয়। উত্তর দিনাজপুর জেলা কমিটি যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সঠিক।” সিপিএম জেলা সম্পাদক জেলা বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বীরেশ্বর লাহিড়ী বলেছেন, “দলে জেলা সম্পাদকমন্ডলীতে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।”
পঞ্চায়েত নির্বাচনে সোসালিস্ট পার্টির একা লড়ার ঘটনা প্রথম নয়। ২০০৮ সালে আসন সমঝোতা না হওয়ায় দল জেলা পরিষদের ৬টি, ৯টি পঞ্চায়েত সমিতির ৭৮টি ও প্রায় ৬০টি পঞ্চায়েতের ৪৫৮ আসনে একক ভাবে প্রার্থী দিয়েছিল। ১৭টি আসনে দলের প্রার্থীরা জেতেন। এতে বামেদের ভোট ভাগ হয়ে যাওয়ায় কংগ্রেসের ফল ভাল হয়। জেলার অধিকাংশ পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ছাড়াও জেলা পরিষদ দখল করে কংগ্রেস। সোসালিস্ট পার্টির জেলা সভাপতি অরুণবাবুর দাবি, কিরণময়বাবু গত বিধানসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ কেন্দ্র থেকে ৫ হাজার ভোটে হেরে গেলেও নয়টি ব্লকেই দলের শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে। এ জন্য ৪০ শতাংশ আসন ছাড়ার প্রস্তাব সিপিএমকে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর অভিযোগ, “গত তিন মাস ধরে সিপিএমের নেতারা ঝুলিয়ে রাখেন। কদিন আগে সিপিএম নেতারা রায়গঞ্জ ও হেমতাবাদ ব্লকে কয়েকটি আসন ছাড়া তাঁদের পক্ষে আসন ছাড়া সম্ভব নয় বলে জানান। এ জন্য কংগ্রেস ও তৃণমূলের ফল ভাল হলে দায় সিপিএমকে নিতে হবে।”
এ বিষয় জেলা পরিষদ সভাধিপতি কংগ্রেস নেতা মোক্তার আলি সর্দার এই দিন বলেন, “আমরা বামফ্রন্টের জোট হওয়া বা না হওয়ার উপরে দিকে তাকিয়ে বসে নেই। কংগ্রেস এই বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাল ফল করে দেখিয়ে দেবে।” জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের বলেন, “তৃণমূল ভোট কাটাকাটির দিকে তাকিয়ে লড়াই করে না। জেলা পরিষদ থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত অবধি ৭০ শতাংশ আসন দখল করাই এ বার আমাদের লক্ষ্য।” |