|
|
|
|
দ্বৈরথ ১ |
ভারত ছাড়তে পারবেন না ইতালির দূত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
শীর্ষ আদালতের অনুমতি ছাড়া ইতালির রাষ্ট্রদূত ড্যানিয়েল মানচিনি ভারত ছেড়ে নড়তে পারবেন না। ভারতীয় মৎস্যজীবী হত্যায় অভিযুক্ত দুই ইতালীয় মেরিনকে ভারতে ফেরানো নিয়ে দ্বিপাক্ষিক সঙ্কটের প্রেক্ষিতে আজ সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশ জারি করেছে। ইতালির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে কি না, করলে কী হতে পারে, সে সবও খতিয়ে দেখা শুরু করেছে কেন্দ্র।
শীর্ষ আদালতে আজ প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীরের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের সামনে অ্যাটর্নি জেনারেল জি ই বাহনবতী ইতালীয় মেরিনদের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন। ম্যাসিমিলানো লাত্তোরে এবং সালভাতোর জিরোনে নামে ওই দুই বিচারাধীন মেরিনকে ভোট দিতে যাওয়ার ছাড়পত্র দিয়েছিল কেন্দ্র। সে সময় রাষ্ট্রদূত মানচিনি নিজে বলেছিলেন, ভোট দিয়েই ভারতে ফিরে আসবে তারা। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। ইতালি সরকার জানিয়েছে, তাদের
ড্যানিয়েল মানচিনি |
ফেরানো হবে না। এমতাবস্থায় মানচিনির ভারত ছাড়ার উপরে নিয়ন্ত্রণ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। লাত্তোরে এবং জিরোনের উদ্দেশেও নোটিস পাঠিয়ে ১৮ তারিখের মধ্যে তাদের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সঙ্কট এতটাই যে, ইতালির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সম্ভাব্য পরিণতি নিয়েও গবেষণা শুরু করেছে মনমোহন সরকার। কালই সংসদের দুই কক্ষে অত্যন্ত কড়া ভাষায় মনমোহন বলেছিলেন, ইতালি যদি মেরিনদের না ফেরায়, তা হলে তার ‘ফল’ তাদের ভুগতে হবে। কূটনীতির সব রকম রীতিনীতি ইতালি লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ এ দিন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র পরে বলেন, “ইতালির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সমস্ত দিকগুলি আমরা খতিয়ে দেখা শুরু করেছি। পরিস্থিতি বিচার করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।”
যদিও ইতালিকে অচ্ছুৎ করে দেওয়াটা খুব সহজ সিদ্ধান্ত নয় নয়াদিল্লির কাছে। ভারতে ইতালির অনেক সংস্থার বিনিয়োগ রয়েছে। সামরিক ক্ষেত্রেও সে দেশের প্রতি ভারতের নির্ভরশীলতা কম নয়।
মন্দার গ্রাসে জর্জরিত ইতালিকে চাঙ্গা করার জন্য জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির বৈঠকে সম্প্রতি বড় ভূমিকা নিয়েছে নয়াদিল্লি।
আবার এটাও ঠিক যে, নির্বাচনের আগে রোমের প্রতি নরম হয়ে বিরোধীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়াটাও কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে কাম্য নয়। বিজেপি-সহ রাজনৈতিক দলগুলি বিষয়টি নিয়ে সরব হচ্ছে। ঘটনাচক্রে উঠে আসছে পুরুলিয়ার অস্ত্র বর্ষণের ঘটনাও। বিরোধিতার অভিমুখ সনিয়া গাঁধীর দিকে ঘুরে যেতে পারে, এমন আশঙ্কাও করছে দল।
সাউথ ব্লকের কর্তারা আজ ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। ভারত যে কঠোরতর সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে, সে কথা তাঁদের কাছেও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে ইতালির বিদেশমন্ত্রী জিউলিও তেরজি পাল্টা দাবি করেছেন, আইনগত ভাবে ঠিক পথেই চলছে ইতালি। তাঁর মতে, মেরিনদের ভারতে না ফেরানোর পক্ষে যথেষ্ট যুক্তি আছে। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা চেয়েও ইতালি সরকার ভুল করেনি। ভারতকে ইতালির বক্তব্য জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তাঁর দাবি।
বিদেশ মন্ত্রক জানাচ্ছে, ইতালির পক্ষ থেকে নয়াদিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। তবে কূটনৈতিক চ্যানেলে তাঁরা রোমের উপর চাপ বাড়াচ্ছেন। মেরিনদের ফেরার জন্য ২২ মার্চ পর্যন্ত সময় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
তত দিন পর্যন্ত কূটনৈতিক প্রয়াস চালানো যেতে পারে।
|
গতকালের খবর: ফল ভুগতে হবে ইতালিকে, কড়া মনমোহন |
|
|
|
|
|