রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সম্পূর্ণ রচনা উর্দু ভাষায় নেই। যেটুকু আছে, তা-ও অনুবাদের অনুবাদ। অর্থাৎ হিন্দি বা ইংরেজি অনুবাদ থেকে উর্দুতে তর্জমা। ফলে বাংলা থেকে উর্দুতে ভাষান্তরিত পূর্ণাঙ্গ রবীন্দ্রনাথকে পাচ্ছেন না উর্দুভাষীরা। এ বার সেই অভাব পূরণ হতে চলেছে। এক বছরের মধ্যেই বাংলা থেকে সরাসরি উর্দুতে অনূদিত রবীন্দ্র রচনাবলি পাওয়া যাবে বলে বৃহস্পতিবার আশা প্রকাশ করা হয় কলকাতার এক আলোচনাসভায়।
রবীন্দ্রনাথের জন্মের ১৫০ বছর পূর্তিতে কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক ‘ন্যাশনাল ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটি ফর টেগোর রিসার্চ অ্যান্ড ট্রান্সলেশন স্কিম’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। সেই প্রকল্পেই বাংলা থেকে সরাসরি উর্দুতে রবীন্দ্ররচনা অনুবাদের উদ্যোগ শুরু হয়। দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় দেশের আরও ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় ওই প্রকল্পটি রূপায়ণের দায়িত্ব পায়। কলকাতার মুসলিম ইনস্টিটিউট ওই ১০টি প্রতিষ্ঠানের অন্যতম। |
এ দিন মুসলিম ইনস্টিটিউটে ‘রবীন্দ্রনাথ ও মুসলিম’ শীর্ষক একটি আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। ওই সভায় কেন্দ্রের পূর্বতন সংস্কৃতি সচিব এবং বর্তমানে প্রসারভারতীর মুখ্য এগ্জিকিউটিভ অফিসার (সিইও) জহর সরকার জানান, এই প্রকল্পে তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় যে-সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন, তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানানো উচিত। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকারও প্রশংসা করেন জহরবাবু। তিনি বলেন, “এই প্রকল্পের আসল উদ্দেশ্য, বাংলা থেকে সরাসরি উর্দুতে রবীন্দ্রনাথের সমগ্র রচনার সুখপাঠ্য অনুবাদ করা।”
হিন্দি বা ইংরেজি অনুবাদ থেকে কবির যে-সব রচনা উর্দুতে তর্জমা করা হয়েছে, তাতে উর্দুভাষী পাঠকেরা রবীন্দ্রসৃষ্টির রস পাননি বলে মনে করেন ইনস্টিটিউটের সম্পাদক সুলেমন খুরশিদ। জাতীয় গ্রন্থাগারের ডিজি স্বপনকুমার চক্রবর্তী আলোচনাসভায় বলেন, “রসগ্রহণে বাংলা ও উর্দুভাষী পাঠকদের মধ্যে যে-ব্যবধান রয়েছে, এই ধরনের প্রকল্প তা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।” |