অনাথ পুরবাসী/২
তৃণমূলের দ্বন্দ্বেই আটকে ভোট, দাবি বিরোধীদের
ক জায়গায় কাউন্সিলর নেই বছর তিনেক। এক জায়গায় তা প্রায় দু’বছর। নিকাশি, পানীয় জল, রাস্তার আলো—সব কিছু নিয়েই সমস্যায় পড়ছেন বাসিন্দারা। দাবি-দাওয়া জানানোর জন্য হাতের কাছে কাউকে না পাওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে তাঁদের। জন-প্রতিনিধির পদ ফাঁকা হলে ছ’মাসের মধ্যে উপ-নির্বাচন হওয়ার কথা। আসানসোল পুরসভার এই ৪৭ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে অবশ্য তা হয়নি।
ওয়ার্ডের বাসিন্দারা তো বটেই, উপ-নির্বাচন চেয়ে বেশ কয়েক বার পুর কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করেছেন বিরোধী বাম কাউন্সিলরেরা। কিন্তু তা কানেই তোলা হয়নি বলে অভিযোগ। ফের পুরভোট আসতে চলেছে। অথচ এই দুই ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচন নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। পুরসভার প্রাক্তন মেয়র তথা বিরোধী নেতা সিপিএমের তাপস রায়ের কথায়, “আমরা প্রায় সব ক’টি অধিবেশনেই উপ-নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু শাসকপক্ষ শুনছেই না।”
কেন উপ-নির্বাচন নিয়ে পুরসভার তেমন আগ্রহ নেই? এর পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে বলে বিরোধীদের দাবি। তাদের মতে, প্রথমত, গত বারের নির্বাচনে দু’টি ওয়ার্ডেই প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল। ৬ নম্বরে জিতলেও হেরে যায় ৪৭ নম্বরে। উপ-নির্বাচন হলে তৃণমূল দু’জায়গাতেই প্রার্থী দেবে। দলের নেতারা বুঝেছেন, প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রতি ওয়ার্ডেই একাধিক নেতা-কর্মী নানা স্তরের নেতাদের কাছে দরবার করে রেখেছেন। এ নিয়ে গোষ্ঠীকোন্দলও প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে।
এ পথেই নিত্য যাতায়াত। ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে। —নিজস্ব চিত্র।
এরকম পরিস্থিতিতে দলের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ধামাচাপা দিতে এখন উপ-নির্বাচনে না যাওয়াই শ্রেয় বলে মনে করছে পুরসভায় ক্ষমতাসীন জোটের বড় শরিক তৃণমূল। দ্বিতীয়ত, পুরসভায় বর্তমানে ৪৮ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৩০ জন শাসকপক্ষের, ১৮ জন বিরোধী। তাই অনাস্থা আনা হলেও তাদের বিশেষ বিব্রত করা যাবে না, এ কথা মনে করেই ক্ষমতাসীন জোট তাদের দাবি কানে তুলছে না, ধারণা বিরোধীদের।
তৃতীয়ত, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে আসানসোল পুরসভা ও শাসক দলের কাজকর্মে সাধারণ মানুষ বীতশ্রদ্ধ বলে মনে করছে বামেরা। আসানসোলে কংগ্রেস যে পুরবোর্ড ফেলবে না, তা আগেই ঘোষণা করেছেন দলের প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। কিন্তু পুরসভার বড় শরিক তৃণমূলের আশঙ্কা, উপ-নির্বাচন হলে কংগ্রেস প্রার্থী দেবে। সে ক্ষেত্রে একটা ঝুঁকি থেকেই যায়। তাই এমন পরিস্থিতি থেকে দূরে থাকতেই উপ-নির্বাচনে নজর দিচ্ছে না শাসক তৃণমূল, দাবি বিরোধী কাউন্সিলরদের।
বিরোধীদের এ সব যুক্তি অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, “উপ-নির্বাচন তো রাজ্য নির্বাচন কমিশন করাবে। আমরা অনেক আগেই কমিশনকে সে কথা জানিয়েছি।” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুর কমিশনার পদে থাকার সময়ে যাদব মণ্ডল এই দু’টি ওয়ার্ডে খালি হওয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে পাঠিয়েছেন। কিন্তু কমিশন সূত্রে এখনও কোনও খবর আসেনি।
খবর কবে আসবে, কেউ জানে না। তত দিন জঞ্জাল নিয়ে বাঁচাই এই দুই ওয়ার্ডের মানুষের ভবিতব্য।

(শেষ)



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.