তারাবাজি |
সেক্সি পিঠে রেশমি গয়না |
ব্লাউজের কাট যত নিচু হবে, ততই খুলবে লটকনের সৌন্দর্য। এটাই লেটেস্ট ট্রেন্ড।
লিখছেন সুচন্দ্রা ঘটক |
আঁচলটা খসে পড়ে যাবে-যাবে করেও আটকে আছে কাঁধের শেষ সীমানায়।
মসৃণ পিঠটা প্রায় পুরোই খালি।
শুধু ব্লাউজের সঙ্গে আটকানো ফিনফিনে দু’টো রেশমি দড়ির বাঁধনে দুলছে রকমারি কারুকাজ করা পুঁতির একটা থোক। তন্বী যত হাসছেন, হেলেদুলে কথা বলছেন, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুলছে ওই গয়নার মতো পুঁতির থোকটা। যা এখন ফ্যাশন-দুনিয়া তোলপাড় করছে ‘লটকন’ নামে।
ভারতীয় সাজের ক্ষেত্রে এর উপস্থিতি হয়ে উঠেছে প্রায় অপরিহার্য। বিয়ের বেনারসি থেকে গরমে টাঙ্গাইল শাড়ির সাজ সব কিছুর সঙ্গে দিব্যি জায়গা করে নিয়েছে গয়নার মতো এই বস্তু। বিদ্যা বালন, প্রিয়ঙ্কা চোপড়া থেকে শহরের টলিউডের হিরোইনেরা সকলেই মেতেছেন এই লটকন-ফ্যাশনে। পছন্দ মতো কখনও ঠিক পিঠের মাঝে অথবা আর একটু নামিয়ে ব্লাউজ ছাড়িয়ে কোমর ছুঁই ছুঁই ঝুল দেওয়া যায় ফ্যাশন দুনিয়া কাঁপানো এই দড়ি দু’টোকে। ব্যস তৈরি হয়ে গেল নিজের স্টেটমেন্ট।
|
|
বিদ্যা বালনের ব্লাউজেও এই গয়না। আর কোনও অলঙ্কার ছাড়া লটকনেই লাস্যময়ী |
ডিজাইনারদের মতে, সাজে উপেক্ষিত পিঠকে ভাল ভাবে প্যাম্পার করার সুযোগ দিতেই ফ্যাশনে জায়গা করে নিয়েছে এই লটকন। ব্লাউজের কাট যত নিচু হবে, ততই খুলবে লটকনের সৌন্দর্য। এত দিনে অনেকেই জানেন, পিঠের কাট যত ডিপ হবে ততই স্লিম লাগে চেহারা। তাই ডিপ কাট থেকে ব্যাকলেস সব ধরনের ব্লাউজই বেশ জনপ্রিয় ভারতীয় মেয়েদের মধ্যে। আর তার উপরে যদি ঝোলে অমন আহ্লাদি কোনও গয়না, সাজ কি আর সেক্সি না হয়ে পারে? কোনও কোনও ব্লাউজে ব্যবহার করে ফেলা যায় চারটে করে লটকনও। দু’টো আসবে কাঁধ থেকে, আর বাকি দু’টো ব্লাউজের শেষে, কোমরের কাছে। আহ্লাদে আটখানা ওই পিঠই তখন কাঁপিয়ে দিতে পারে গোটা সন্ধ্যাটা। |
হঠাৎ কেন এত হইচই |
লটকনের দড়িগুলো প্রথমে এসেছিল নাকি শুধুই ডিপ কাটের ব্লাউজের কাঁধগুলো ঠিক জায়গায় ধরে রাখতে, জানালেন ডিজাইনার অভিষেক দত্ত। সেটাকেই একটু সাজিয়ে তুলতে শুরু হল দড়ির মুখে হালকা করে কোনও ডিজাইন দেওয়া। ধীরে ধীরে ভারী হল সেই ডিজাইন, আর হয়ে উঠল ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। এক-দু’টো থোকার থেকে বেড়ে এখন তিন-চার লেয়ারে সাজছে ব্লাউজের এই লটকন। প্রয়োজনীয়তা ছাপিয়ে এখন এটা রীতিমতো গয়নার জায়গা নিয়ে নিয়েছে। ডিজাইনার নীল থেকে অভিষেক দত্ত সকলেই এ বিষয়ে একমত। তাঁরা জানাচ্ছেন, পিঠ থেকে লটকন ঝুললে কিছু কিছু অনুষ্ঠানে অন্য কোনও গয়না না পরলেও চলে। |
কেমন হবে লটকন-সাজ |
যে কোনও ধরনের শাড়ির সঙ্গেই এখন দিব্যি পরে নেওয়া যায় লটকন দেওয়া একটি ব্লাউজ। খুব হালকা কোনও হ্যান্ডলুমের শাড়ি বা এক রঙা হালকা সিল্কও এই লটকনের সুবাদে এখন রীতিমতো পার্টিওয়্যার হয়ে উঠেছে। শাড়ির রং হোক ব্লাউজের সঙ্গে কন্ট্রাস্ট। সঙ্গে কানে চাই একটা বড়সড় নজরকাড়া ঝোলা দুল। ঝুমকো হলে তো কথাই নেই। হাতেও চলতে পারে ভারী কোনও গয়না। কয়েক গাছা চুড়িও বেশ মানানসই এই সাজের সঙ্গে।
তবে জমকালো লটকন থাকলে গলায় কোনও গয়না যেন না
থাকে, মনে করিয়ে দিলেন ডিজাইনার নীল। বললেন, “অনেকেই পিঠে লটকনের সঙ্গে গলায় খুব ভারী গয়না পরে ফেলেন। সেটা যে কতটা কেলেঙ্কারি ব্যাপার হবে, বোঝেন
না। বিয়ের কনে ছাড়া অত গয়না কাউকে মানায় নাকি!”
রোজের সাজের জন্য পুঁতি বা কাচের কাজ করা লটকন না দিয়ে বেছে নেওয়া যায় কাপড়ের কাজও। জানালেন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পল। চলতে পারে রংবেরঙের কাপড় দিয়ে তৈরি কোনও বল বা ফুলের থোকা।
তবে চুলটা খোলা না রাখলেই ভাল বলে মত অভিষেকের। এ ধরনের ব্লাউজের সঙ্গে চলতে পারে উঁচু করে একটা বান বা বড়জোর কাঁধের কাছে কোনও পনিটেল। আর যদি একেবারেই ইচ্ছে না করে চুলটা বাঁধতে, তবে তা বেখেয়ালে টেনে আনা যায় সামনের দিকে। ফাঁকা থাকল পিঠটা। এ বিষয়ে অবশ্য ভিন্ন মত অগ্নিমিত্রার। কাঁধ পর্যন্ত চুল থাকলে খোলা রাখলেই বা ক্ষতি কী? শুধু লটকনের দড়ির ঝুলটা কোমর পর্যন্ত করলেই হয়ে গেল সমস্যার সমাধান। লটকন ঝোলানো ব্লাউজ পরতে হলে পেছন দিকটা গভীর ভাবে কাটা থাকা অবশ্যই প্রয়োজন। তা না হলে লটকনের শোভা বোঝা যাবে না। এই জাতীয় গয়না ব্লাউজে পরতে হলে পিঠের পলিশ করানো খুব জরুরী। সেক্সি পিঠের আহ্বান লটকনে!
|
ডিজাইনারদের টিপস্
খেয়াল রাখতে হবে খুব
ভারী যেন না হয়ে যায় লটকনের ওজন। যে
কোনও সময়ে দড়ি ছিঁড়ে ঘটে যেতে পারে ফ্যাশন-কেলেঙ্কারি। |
|
|