কামারহাটি

কাপ-প্লেট-চেয়ার ছুড়ে লড়াই কাউন্সিলরদের

লকাতা হাইকোর্ট খোদ পুলিশ সুপারকে শৃঙ্খলা রক্ষার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও বুধবার হাঙ্গামা-ভাঙচুর হয় সিপিএম পরিচালিত হলদিয়া পুরসভায়। একই ভাবে কামারহাটি পুরসভাতেও এ দিন বাজেট পাশ হয়েছে দেদার কাপ-প্লেট ছোড়াছুড়ির মধ্যে। ওই পুরসভাও আছে সিপিএম তথা বাম শিবিরের হাতেই। দু’টি ক্ষেত্রেই উচ্চ আদালতের নির্দেশে কর্ণপাত না-করার প্রবণতা দেখছেন রাজনীতির কারবারিরা।
কামারহাটি পুরসভা সূত্রের খবর, ৮ মার্চ পুর বাজেট পেশ করেন চেয়ারম্যান তমাল দে। কিন্তু বাজেটে অসঙ্গতি রয়েছে বলে অভিযোগ তুলে তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন বিরোধী দল অর্থাৎ তৃণমূলের কাউন্সিলরেরা। তখন সিদ্ধান্ত হয়, ১১ মার্চ বাজেট নিয়ে আলোচনা হবে। কিন্তু ওই দিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত আলোচনার পরে সভা মুলতুবি হয়ে যায়। বুধবার বিকেল ৪টে নাগাদ বাজেট নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয় পুরসভায়। তার মধ্যেই বাম ও তৃণমূল কাউন্সিলরদের মধ্যে গণ্ডগোল বাধে। দু’পক্ষই এক সময় পরস্পরের দিকে চায়ের কাপ-প্লেট, এমনকী চেয়ারও ছুড়তে শুরু করে। শেষে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঠিক কী ঘটেছিল?
হলদিয়া পুরসভায় ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে মূলত তৃণমূলের দিকে। তবে পুলিশি সূত্রের খবর, কামারহাটিতে বাজেট নিয়ে আলোচনার মধ্যে মতভেদ হওয়ায় তেড়েফুঁড়ে ওঠে দু’পক্ষই। প্রথমে কথা কাটাকাটি। তার পরে যুযুধান কাউন্সিলরেরা টেবিলে রাখা চায়ের কাপ, প্লেট ছুড়তে থাকেন। উল্টে দেওয়া হয় চেয়ার-টেবিল। শেষে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা পুরসভায় ঢুকে চেয়ারম্যানকে ঘেরাও করে পদত্যাগের দাবি তোলেন। সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরাও পুরসভার বাইরে জড়ো হয়ে তাল ঠুকতে থাকেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে গণ্ডগোল চলে। সামাল দিতে আসে বরাহনগর থানার পুলিশ। শেষ পর্যন্ত প্রায় ৮৭ কোটি টাকার বাজেট পাশ হয়ে যায়।
কিন্তু গোলমাল কেন?
কামারহাটি পুরসভায় মোট ৩৫টি আসনের মধ্যে ১৮টি রয়েছে বামেদের দখলে। বাকি ১৭টিতে রয়েছে তৃণমূল। চেয়ারম্যান তমালবাবুর অভিযোগ, ১১ মার্চ বাজেট নিয়ে আলোচনা হলেও বিরোধীরা অহেতুক এবং বাজেট-বহির্ভূত বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে অধিবেশন মুলতুবি করে দেন। এ দিনের আলোচনায় সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হলেও তাঁরা তা মানতে চাননি। অগত্যা বাম কাউন্সিলরদের সমর্থনেই বাজেট পাশ করিয়ে নিতে হয়। চেয়ারম্যান বলেন, “তার পরেই বিরোধীরা আমাদের দিকে কাপ-প্লেট ছুড়তে থাকেন। ভাঙচুর করেন। তবে আমরা কিছু করিনি।”
কিন্তু বিরোধী দলনেতা, তৃণমূলের স্বপন মণ্ডলের অভিযোগ, পুরসভায় পাঁচ কোটি টাকার হিসেব মিলছে না। ‘আর্বান এমপ্লয়মেন্ট’ বা শহুরে কর্মসংস্থান খাতে যে-কাজ হচ্ছে, তাতেও গরমিল রয়েছে। এ ছাড়াও বহু কারচুপি হয়েছে পুরসভার হিসেবে। স্বপনবাবু বলেন, “আমরা এই সব বিষয়েই প্রশ্ন তুলেছিলাম। শাসক দল সদুত্তর দিতে পারেনি। উল্টে নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বাজেট পাশ করিয়ে নেয়।” স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিমল সাহার অভিযোগ, তাঁদের কাউন্সিলরেরা আপত্তি তোলার পরেও জোর করে বাজেট পাশ করিয়ে নেওয়া হয়। তার প্রতিবাদ করায় কাপ-প্লেট, চেয়ার ছুড়ে মারধর শুরু করেন।
সিপিএম অবশ্য তাদের কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে আনা হাঙ্গামার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তমালবাবু জানান, পুরসভায় ভাঙচুরের অভিযোগে তাপস শূর, মিঠু দাস, নবীন ঘোষাল, অজিতা ঘোষ ও মিতা ভট্টাচার্য নামে পাঁচ তৃণমূল কাউন্সিলরের নামে বরাহনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.