মাননীয় অমর্ত্য সেন (‘বহুরূপী: রক্তকরবী ও রবীন্দ্রনাথ’, ৫-৩) উল্লেখ করেছেন, রক্তকরবী নাটকের শেষে উচ্চারিত বিশুর সংলাপ ‘আয় রে ভাই, এবার লড়াইয়ে চল্।’ কিন্তু নাটকের শেষ পর্যায়ে বিশু এল কী করে? সে তো বন্দি ছিল। ফাগুলাল সেই প্রশ্নটাই করেছিল তাকে। উত্তরে সে বলেছিল, ‘আমাদের কারিগররা বন্দীশালা ভেঙে ফেলেছে। তারা ঐ চলেছে লড়তে।...’ তা হলে খোদাইকরের দল বন্দিশালা ভেঙেছে, বন্দিদের মুক্ত করেছে, সেই সূত্রেই মুক্তি পেয়েছে বিশু এবং তারা পরবর্তী লড়াই লড়তে চলেছে।
|
বিশু সে লড়াইয়ে শরিক হচ্ছে, শরিক হতে ডাক দিচ্ছে ফাগুলালকেও। ফাগুলাল অবশ্য আগেই দলবল নিয়ে বন্দিশালা ভাঙার পরিকল্পনা করেছে। জালের বাইরে এসে রাজা যখন জিজ্ঞাসা করে, ‘কী হয়েছে তোমাদের? কী করতে বেরিয়েছ?’, উত্তরে সে বলে, ‘বন্দীশালার দরজা ভাঙতে মরি, তবু ফিরব না।’ অর্থাৎ, মাস্ মুভমেন্টের ছবিটা নাটকেই আছে, শম্ভু মিত্র সেটা সক্ষম ভাবে উচ্চারণ করেছেন। নজরটান-চিহ্নিত বাক্যগুলি দেখলে শম্ভুবাবু নাটকের শেষটা বদলেছেন বলে মনে হয় না। বহুরূপীর প্রযোজনায় মাস্ মুভমেন্টের আহ্বান আছে বলে ‘বহুরূপীর নাটক-সমাপ্তি নিশ্চয়ই পূর্ণভাবে রাবীন্দ্রিক নয়’, এই সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়।
শিবব্রত চট্টোপাধ্যায়। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় |