|
|
|
|
|
জেট-স্পাইসের পরে এ বার
ভাড়া কমাল এয়ার ইন্ডিয়াও
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
|
স্পাইসজেট এবং জেট এয়ারওয়েজের পদাঙ্ক অনুসরণ করল সরকারি বিমানসংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া। যাত্রী টানতে এক ঝটকায় কমিয়ে দিল টিকিটের দাম। সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে, বুধবার থেকে যাঁরা দু’মাস পরের টিকিট কাটবেন, তাঁরা প্রায় বাতানুকূল ট্রেনের ভাড়ায় পেয়ে যাবেন বিমান টিকিট।
বিমান পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেকটা বাধ্য হয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। আর্থিক লোকসানে জেরবার এই সংস্থা কর্মীদের বেতন দেওয়া নিয়েও গত এক বছরে অনেক টালবাহানা করেছে। তা নিয়ে অসন্তোষেরও সৃষ্টি হয়েছে।
পাশাপাশি, বাজারে টিকে থাকার লড়াইও চালিয়ে যেতে হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়াকে। ক্রমবর্ধমান বিমান-জ্বালানির দামের জন্য নাভিশ্বাস ওঠার অবস্থা হয়েছে এই সংস্থার। প্রতিবারই কেন্দ্রীয় সরকার বাড়িয়ে দিয়েছে সাহায্যের হাত।
এই অবস্থায় গত জানুয়ারি মাসে স্পাইসজেট আচমকা ভাড়া কমিয়ে দেয়। সস্তায় দশ লক্ষ টিকিট ছাড়ে তারা। হইচই শুরু হয়ে যায় দেশ জুড়ে। জ্বালানির এই উর্ধ্বমুখী দাম দিয়ে মাত্র ২০১৩ টাকায় কী করে বিমান টিকিট দেবে স্পাইস, সে নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। স্পাইসজেট সংস্থার তরফে দাবি করা হয়, ওই সিদ্ধান্তের ফলে তাদের নাকি দেড়শো কোটি টাকা লাভ হয়েছে।
তার পরে বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। ফেব্রুয়ারি মাসেই দাম কমানোর যুদ্ধে নেমে পড়ে জেট এয়ারওয়েজ। কুড়ি লক্ষ সস্তার টিকিট ছাড়ার ঘোষণা করে তারা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে তারা বাজার থেকে ৫০০ কোটি টাকা তুলে নিতে পারবে।
এ ভাবে কি যখন খুশি দাম কমাতে বা বাড়াতে পারে বিমানসংস্থা? সেই সময় বিমানমন্ত্রী অজিত সিংহ বলেছিলেন, “বিমানসংস্থা লাভ করার জন্যই তো ব্যবসা করছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের কী-ই বা করার আছে!” জেট-এর টিকিটের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে গো এবং ইন্ডিগো এই দুই বিমানসংস্থাও তাদের টিকিটের দাম কমিয়ে দিয়েছিল ফেব্রুয়ারিতে। বাকি ছিল শুধু এয়ার ইন্ডিয়াই। এয়ার ইন্ডিয়ার তরফে তখন বলা হয়েছিল, বাজারের উপরে নজর রাখছে তারা। প্রয়োজনে তারাও টিকিটের দাম কমাতে পারে। তার এক মাসের মধ্যেই টিকিটের দাম কমাতে বাধ্য হল তারা। যদিও সংশ্লিষ্ট মহল জানাচ্ছে, বিমানে যদি ১০০ আসন থাকে তাহলে প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই সস্তার টিকিট পাওয়া যাবে নিদিষ্ট কিছু আসনের জন্য। কেউ ২০টি আসন রাখবে সস্তার টিকিটের জন্য, কেউ রাখবে ২৫টি। বাকি আসনগুলির ভাড়া থাকবে আগের মতোই। শেষ মূহূর্তে যাঁরা টিকিট কাটবেন তাঁরা এই সুযোগ পাবেন না।
এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, এখন থেকে ৬০ দিন পরে মানে মে মাসের মাঝামাঝি। ওই সময়ে বেড়াতে যান অনেকে। প্রধানত সেই সব পর্যটককে টানতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। বিমানসংস্থার দাবি, ট্রেনের বাতানুকূল কামরার যা ভাড়া, তার সমান ভাড়ায় পাওয়া যাবে বিমানের টিকিট। সংস্থা জানাচ্ছে, মুম্বই-কলকাতা, দিল্লি-কলকাতার বিমান টিকিট পাওয়া যাবে যথাক্রমে ৪৫৫৬ টাকা, ৪০১২ টাকায়। ৩৭৯৮ টাকায় পাওয়া যাবে কলকাতা-হায়দরাবাদ, কলকাতা-চেন্নাইয়ের টিকিট। সে অর্থে স্পাইসজেট এবং জেট-এর ঘোষিত ভাড়ার চেয়ে এই ভাড়া কিছুটা বেশি।
তা ছাড়া, ৬০ দিন আগে যাঁরা যাত্রার পরিকল্পনা করে টিকিট কাটবেন, তাঁরাই এই সুবিধা পাবেন। প্রশ্ন উঠেছে, বিমানে যাঁরা নিয়মিত যাতায়াত করেন, তাঁদের মধ্যে কত শতাংশ ৬০ দিন আগে সেই পরিকল্পনা করবেন? |
|
|
|
|
|