বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: মঙ্গলে নাসা
মিস কৌতূহলের চোখে ধরা
পড়ল প্রাণের স্পন্দন
প্রাচীন নদীখাত বা ব্যাসল্ট পাথর আগেই মিলেছিল। এ বার লাল গ্রহের পাথর ঘেঁটে প্রাণের উপযোগী রাসায়নিকেরও হদিস দিল কৌতূহল (রোভার কিউরিওসিটি)। যার প্রেক্ষিতে নাসার দাবি, মঙ্গলের মাটিতেও এক সময় প্রাণের রসদ ছিল।
নাসা এক বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, কয়েকশো কোটি বছর আগে ওই গ্রহে প্রাণ টিঁকে থাকা সম্ভব ছিল। তবে কোনও প্রাণী নয়। মাটি-পাথর বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীদের ধারণা, মঙ্গলের মাটিতে নানা ধরনের অণুজীব বেঁচে থাকতে পারত।
কেন? বিজ্ঞানীরা জানান, প্রাণ টিঁকিয়ে রাখার জন্য মাটিতে নাইট্রোজেন, সালফার, হাইড্রোজেন, ফসফরাস, কার্বনের মতো উপাদান থাকা জরুরি। নাসার বিজ্ঞানীদের দাবি, কৌতূহলের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে তাঁরাও লাল গ্রহের মাটিতে ওই উপাদানগুলি পেয়েছেন। নাসার বিজ্ঞানী মিশেল মেয়ার বলছেন, “অভিযানের লক্ষ্য ছিল, মঙ্গলে প্রাণের উপযোগী পরিবেশ ছিল কি না, খতিয়ে দেখা। এখন মনে হচ্ছে, সেই পরিবেশ ছিল।”
গত বছরের ৬ অগস্ট মঙ্গলে পা রাখে মিস কৌতূহল। তার পর থেকে একের পর এক তথ্য সে জুগিয়েছে বিজ্ঞানীদের। কখনও কিউরিওসিটির কৌতূহলী চোখে ধরা পড়েছে প্রাচীন নদীখাত, কখনও হাওয়াই দ্বীপের মতো ব্যাসল্ট পাথরও খুঁজে পেয়েছে সে। কিন্তু এ বারে তার আবিষ্কার আগের সব কিছুকে পিছনে ফেলে দিয়েছে বলেই গবেষকেরা মনে করছেন। নাসার বিজ্ঞানী অমিতাভ ঘোষ বলছেন, “এর আগে জল, আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য মিললেও মাটিতে প্রাণের উপযোগী উপাদান (বিশেষত কার্বন) সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বারে সেটি মিলেছে।” পাশাপাশি জলেও অম্লতা সংক্রান্ত তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। অমিতাভবাবু জানান, জল অত্যধিক অম্ল হলে প্রাণ টিকতে পারে না। এ বার যা তথ্য মিলেছে তাতে প্রাণের ব্যাপারে অনেকটা নিশ্চিত বিজ্ঞানীরা।
কী ভাবে মিলল এই খোঁজ? নাসা সূত্রের খবর, সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ লাল গ্রহে গেল গহ্বরের কাছে পাথর খোঁড়ার কাজ শুরু করেছিল কৌতূহল। ওই এলাকায় একটি প্রাচীন নদীখাতের পাথর খুঁড়ে নিজের দেহে বসানো ‘স্যাম্পল অ্যানালিসিস অ্যাট মার্স (স্যাম)’ এবং ‘কেমিস্ট্রি অ্যান্ড মিনারেলজি (কেমিন)’ নামে দু’টো যন্ত্রে তা বিশ্লেষণ করে বিস্তারিত তথ্য পঠিয়েছে। তথ্যে ধরা পড়েছে ওই নদীখাতের মাটিতে প্রাণের বেঁচে থাকার মতো রাসায়নিক উপাদান ছিল এবং তাতে অণুজীবরা বেঁচে থাকতে পারত। নাসার বিজ্ঞানী ডেভিড ব্লেক বলেন, “কৌতূহলের জোগাড় করা নমুনায় ২০ শতাংশ প্রাণের উপযোগী রাসায়নিক মিলেছে।”
গবেষকেরা জানান, মঙ্গলের মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে এক সময় লাল মাটির বদলে ধূসর মাটির স্তর পেয়েছিলেন। তা থেকেই বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক উপাদানের সূত্র পান তাঁরা। পাসাডেনার ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির বিজ্ঞানী জন গ্রোৎজিঙ্গার বলেন, “আমরা ‘ধূসর মঙ্গলের’ হদিস পেয়েছি, যা কি না ওই অণুজীবদের বেঁচে থাকার পক্ষে সহায়ক।”
কৌতূহলের এই অবাক করা সাফল্যে যারপরনাই খুশি নাসার বিজ্ঞানীরা। তবে শেষ ধাপে পৌঁছতে অনেক পথ বাকি বলে তাঁদের দাবি।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.