১৫ দিনে দ্বিগুণ করার টোপ দিয়ে টাকা আত্মসাতের চক্রে যুক্ত সন্দেহে এক প্রাথমিক শিক্ষককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ফালাকাটা থানার জটেশ্বর এলাকায় ওই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানায়, ধৃত শিক্ষকের নাম সৌম্যদীপ ঘোষ। তিনি সিপিএমের শিক্ষক সংগঠনের শাখা সম্পাদক। এক ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়। চক্রের যুক্ত সন্দেহে বঙ্কিম দেবনাথ বলে এক স্থানীয় বাসিন্দাকে পুলিশ খুঁজছে। অভিযোগ, বঙ্কিমবাবুই মূলত ওই দ্বিগুণ করার কারবার ফেঁদে বসেন। পরে এজেন্ট হিসেবে অনেক যোগ দেন। দিনের পর দিন কারবার চললেও ফালাকাটা থানার তরফে কেন কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তা নিয়ে বহু বাসিন্দাই প্রশ্ন তুলেছেন।
শুধু তাই নয়, থানার অফিসার-কর্মীদের একাংশের ভূমিকা নিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভ চরমে পৌঁছায় গত ২ মার্চ। সে দিন পুলিশ মাইক নিয়ে ওই টাকা দ্বিগুণ করার কারবারের বিরুদ্ধে জোরদার প্রচারে নামলে উত্তেজিত জনতা পুলিশের একটি জিপ পুড়িয়ে দেয়। সঙ্গে সঙ্গেই ফালাকাটা থানার আইসি ফরিদ হোসেনকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করেন পুলিশ সুপার। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, “এত দিন পর্যন্ত কেউ আমাদের অভিযোগ জমা দেয়নি। যার ফলে প্রতারণা চক্রের পাণ্ডাদের গ্রেফতার করা যাচ্ছিল না।”
আড়াই মাস আগে ফালাকাটায় ওই কারবার শুরু করেন বঙ্কিম ও তাঁর কয়েক জন সঙ্গী। বিনা রসিদে টাকা রাখলে ১৫ দিনে দ্বিগুণ করা হবে বলে শর্ত দেয় তাঁরা। প্রথম দিকে অনেকে টাকা রেখে দ্বিগুণ টাকা পান। ওই সময়ে ফালাকাটা থানার পুলিশকর্মীদের একাংশকে বঙ্কিমের বাড়ির অফিসে দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ। বাস্তবে ১৫ দিনে টাকা দ্বিগুণ করে দেওয়ার যৌক্তিকতা না-থাকায় জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার খবর পেয়ে থানাকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। সেই কাজ না-হওয়ায় পুলিশ কর্তৃপক্ষের সন্দেহ দানা বাঁধে। দিন কয়েক আগে বঙ্কিম পালিয়ে যান। আইসি সরানোর কয়েক দিনের মাথায় বীরপাড়ার এক ব্যবসায়ী লিখিত অভিযোগ করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সৌম্যদীপ বীরপাড়ায় গেলে এলাকার বেশ কয়েক জন বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী তাঁকে ঘিরে ধরেন। তাঁকে আটকে রেখে পুলিশের কাছে খবর দেন। ডাব্বু অগ্রবাল নামে স্থানীয় ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁর কাছ থেকে শিক্ষক সৌম্যদ্বীপ ৪ লক্ষ টাকা নেন। নির্ধারিত সময়ের পরে আসল টাকাই ফেরত পাননি বলে ব্যবসায়ীর অভিযোগ। সৌম্যদীপের স্ত্রী বর্ণালী ঘোষ বলেন, “আমার স্বামী এজেন্ট ছিলেন না। কিছু মানুষ চক্রান্ত করে তাঁকে ফাঁসিয়েছেন। ও নির্দোষ।” |