জেনকিন্স-কাণ্ডের তদন্ত রিপোর্ট
জমা পড়ল, ১২ জনকে বদলির সুপারিশ
হরের জেনকিন্স স্কুল কান্ডে অভিযুক্ত তৃণমূল প্রভাবিত সরকারি স্কুল শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি বিজন সাহা-সহ ১২ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীকে বদলির সুপারিশ করল তদন্ত কমিটি। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কোচবিহারের সদর মহকুমাশাসক বিকাশ সাহা মঙ্গল বার সন্ধ্যায় জেলাশাসকের দফতরে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। তদন্ত রিপোর্টে ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে বেআইনি ভাবে স্কুল চত্বরে খানা-পিনার আসর বসানোর অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গত এক বছরে স্কুলের ভিতরে অন্তত তিনবার ওই ধরণের আসর বসানো হয়েছিল বলে উল্লেখ রয়েছে। তবে ফেরুয়ারি মাসের ঘটনায় অভিযুক্তরা মদ্যপান করেছিলেন কী না, সেই ব্যাপারে পুলিশের দেওয়া তথ্যে অভিযুক্তদের রক্ত ও প্রস্রাবের নমুনা পরীক্ষার ডাক্তারি রিপোর্ট পাওয়া যায়নি বলায় মদ্যপানের আসর বসানোর বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাচ্ছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
কিন্তু বেআইনি ভাবে স্কুলে আসর বসানোর ঘটনার কারণ পর্যালোচনা করতে গিয়ে তদন্ত কমিটি জানতে পেরেছে, একই জায়গায় দীর্ঘ দিন ধরে চাকরি করার সুবাদে অভিযুক্তদের পাশাপাশি জেনকিন্স স্কুলের শিক্ষকদের একাংশ এই স্কুলের সুনামকে কাজে লাগিয়ে চুটিয়ে প্রাইভেট টিউশন করছেন। হাতে বাড়তি দেদার টাকা আসায় ওই ধরনের খাওয়া দাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এ রকম ১১ জন শিক্ষকের নামের তালিকাও যুক্ত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে ওই ধরনের ঘটনার আশঙ্কা এড়াতে অভিযুক্তদের বদলির সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। সদর মহকুমা শাসক বিকাশবাবু বলেন, “গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে বিস্তারিত রিপোর্ট জেলাশাসকের দফতরে জমা দিয়েছি। তাতে কিছু পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য, সুপারিশ রয়েছে।” জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন রিপোর্ট খতিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে দেড়শ বছরের পুরানো জেনকিন্স স্কুলের টিচার্স রুমে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের একাংশের নামে মদ-মাংসের আসর বসানোর অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় তৃণমূল প্রভাবিত সরকারি স্কুল শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি বিজন সাহা, স্কুলের শিক্ষক দিলীপ রায় ও পীযূষ সরকার নামে এক শিক্ষাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে তাঁরা ব্যক্তিগত জামিনে মুক্তি পান। পুলিশ ধৃতদের ডাক্তারি পরীক্ষার যে রিপোর্ট দেয়, তাতে অভিযুক্তদের মুখে মদের গন্ধ পাওয়া গিয়েছিল বলে উল্লেখ করা হলেও রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষার রিপোর্টে কিন্তু তা নেই।
অভিযুক্তরাও মদ্যপান করেননি বলে দাবির পাশাপাশি পরিকল্পিতভাবে তাঁদের শরীরে বিক্ষোভকারীরা মদ ঢেলে দেন বলে দাবি করা হয়। এতে মদ্যপানের অভিযোগ নিয়ে নিশ্চিত সিদ্ধান্ত নেওয়া তদন্ত কমিটির সম্ভব হয়নি বলে জানানো হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল বলেন, “মেডিক্যাল পরীক্ষার বিষয়টি নিয়ে কিছু বলার নেই।” উল্লেখ্য, স্কুলে মদের আসর বসানোর ওই অভিযোগ ঘিরে শহর জুড়ে আলোড়ন পড়ে যায়। নানা মহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ওঠে। পরিস্থিতি সামলাতে মহকুমা শাসকের নেতৃত্বে জেনকিন্সের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি প্রধান শিক্ষককে নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গড়েন জেলাশাসক। তদন্ত কমিটি অভিযুক্তদের পাশাপাশি অভিযোগকারী ছাত্র পরিষদ নেতাদের লিখিত জবানবন্দি নেয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.