নিজস্ব সংবাদদাতা • সিউড়ি |
প্রেসক্রিপশনে থাকা ওষুধের বদলে অন্য ওষুধ দেওয়ার অভিযোগ উঠল সিউড়ি সদর হাসপাতালের সদ্য চালু হওয়া ‘ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান’-এর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রোগীর পরিজন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ এই অভিযোগ তুলে দোকানটির সামনে বিক্ষোভও দেখান। পরে তাঁরা হাসপাতাল সুপার মানবেন্দ্রনাথ ঘোষের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। হাসপাতাল সুপার বলেন, “অভিযোগ তদন্ত করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে জানানো হবে।”
ঘটনার সূত্রপাত এক সদ্যজাত প্রসূতির ওষুধ কেনা নিয়ে। সোমবারই তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। চিকিৎসক তাঁকে বাড়িতে ব্যবহার করার জন্য কয়েকটি ওষুধ প্রেসক্রিপশনে লিখে দিয়েছিলেন। ওই প্রসূতির পরিজনেরা ‘ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান’-এ প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে ওষুধগুলি কেনেন। প্রসূতির স্বামী বাপি রায়ের অভিযোগ, “ওষুধ কিনে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে দোকান থেকে দেওয়া রশিদ দেখাই। তা দেখে চিকিৎসকই প্রথম খেয়াল করেন, ঠিক ওষুধ দেওয়া হয়নি। চিকিৎসক ওই ওষুধ ব্যবহার করতে বারণও করেন।” তাঁর আরও দাবি, প্রেসক্রিপশনে একটিই হজমের ওষুধ লেখা থাকলেও দু’ রকমের ওষুধ দিয়ে দেওয়া হয়। এমনকী ওষুধ কেনার রশিদে রোগী ও চিকিৎসকের নামও পর্যন্ত লেখা হয়নি বলে তাঁর অভিযোগ। খোলা বাজারের থেকে ওই ‘ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান’-এ একটি ওষুধের জন্য (ডোক্স সেফ ২০০) বেশি দাম নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ওই প্রসূতির পরিবারের দাবি, বাজারে ওষুধটির দাম ৮০ টাকা হলেও হাসপাতালের দোকানটি নিয়েছে ২৩২ টাকা। নিয়ম মেনে ৫৯ শতাংশ ছাড়া দিয়ে সেই ওষুধের দাম দাঁড়িয়েছে ৯২ টাকা।
ভুল ওষুধ দেওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন সিউড়ি হাসপাতালের ‘ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান’-এর ম্যানেজার হেমাদ্রিশেখর মণ্ডল। পরে তিনি বলেন, “সবে দোকান খোলা হয়েছে। আশা করছি ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে।” এ দিকে তিনি অভিযোগ তুলেছেন, দোকান চালু হওয়ার পর থেকেই নিজেদের বাজার টিকিয়ে রাখতে হাসপাতালের বাইরের কিছু ওষুধের দোকান ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে। যদিও তা মানতে নারা ‘বীরভূম জেলা ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক জয়দীপ রায়। তাঁর দাবি, “গরীব ও সাধারণ মানুষ যাতে কম পয়সায় সঠিক ওষুধ পান, আমরা তারই চেষ্টা করি। অহেতুক কারও বিরোধিতা করা আমাদের কাজ নয়।” |