আত্মরক্ষায় ক্যারাটের প্রশিক্ষণে শ্রীজাতারা
টনাটা এখনও মনে আছে ক্লাস নাইনের পিয়ালির। দু’বছর আগে টিউশন থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুটি ছেলে পিছু নিয়েছিল। নানা কটু মন্তব্য করছিল। কোনও মতে সাইকেলের গতি বাড়িয়ে বাড়ি পৌঁছে গিয়েছিল সে। একটু অন্যরকম অভিজ্ঞতা দশম শ্রেণির শ্রীজাতার। স্কুল থেকে ফেরার পথে গলির মধ্যে একটি ছেলে উত্যক্ত করতে শুরু করে তাকে। ক্ষেপে গিয়ে ছেলেটিকে সজোরে চড় মেরে দ্রুত সাইকেল নিয়ে বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল সে। কিন্তু, ছেলেটি পিছু নিয়ে বাড়ি পর্যন্ত গিয়ে শাসায়। তা নিয়ে দুজনের এখনও দুশ্চিন্তা রয়েছে। তাই মঙ্গলবার পিয়ালি, শ্রীজাতারা যেন উদ্দীপনায় ফুটছিল। কারণ, এদিনই ওদের স্কুলে সরকারি খরচে শুরু হয়েছে ক্যারাটে প্রশিক্ষণ শিবির। যাতে অংশ নিয়েছে ওরা। প্রথম দিন প্রশিক্ষণ শেষে দু’ জনকে বলতে শোনা গেল, “৬ মাস শিখতে পারলে আর দেখতে হবে না। কেউ বেয়াদপি করলে ফলটা হাতেনাতে দেওয়া যাবে।”
ক্যারাটে প্রশিক্ষণ শিলিগুড়িতে। —নিজস্ব চিত্র।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, শিলিগুড়ির সদ্য নিযুক্ত মহকুমা শাসক রচনা ভগত সম্প্রতি স্কুল ছাত্রীদের ক্যারাটে প্রশিক্ষণ শেখাতে উদ্যোগী হন। সেই মতো বেলা সাড়ে ১১টায় শিলিগুড়ির রামকৃষ্ণ সারদামণি বিদ্যাপীঠ স্কুলে শুরু হয় বিনা খরচে প্রশিক্ষণ শিবির। গোড়া থেকেই ছাত্রীদের ভিড় উপচে পড়ে। অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির প্রায় ৩০০ জন ছাত্রী অংশ নেয়। পাশাপাশি, হাকিমপাড়া বালিকা বিদ্যালয়ে এই প্রশিক্ষণ শিবির শুরু হয়। শহরের নেতাজি গার্লস হাই স্কুল, শিলিগুড়ি গার্লসেও এই প্রশিক্ষণ শুরু হবে বলে জানান মহকুমাশাসক। আগামী ছয় মাস স্কুলের অন্যান্য বিষয়ের পড়াশোনার ক্যারাটে ক্লাস চলবে বলে জানান মহকুমাশাসক। সপ্তাহে অন্তত একটি করে ক্লাস নেবেন প্রশিক্ষকরা। সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির মেয়েদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। মহকুমাশাসক বলেন, “ছাত্রীদের জন্য এই প্রশিক্ষণ ভীষণ জরুরি। প্রশাসনের তরফে যথাসাধ্য ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
প্রথম দিনের শিবিরের পরে কী বলছে ছাত্রীরা? রামকৃষ্ণ সারদামণি বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণির ছাত্রী রিয়া ভট্টাচার্য বলল, “ভীষণ এক্সাইটেড লাগছে! এসডিও ম্যাডামকে অনেক ধন্যবাদ। প্রথম দিনেই মনে বাড়তি সাহাস পাচ্ছি।” অষ্টম শ্রেণির স্বপ্না দাস খুব খুশি। তার কথায়, “একা যাতায়াত করা নিয়ে সমস্যা হয়। ক্যারাটে শেখাটা হয়ে গেলে বাবা-মা নিশ্চয়ই খুব বেশি চিন্তা করবে না।” যা কি না টাকা খরচ করে বাইরে শিখতে হয়, তা বিনা খরচে শেখা যাচ্ছে দেখে অবাক দশম শ্রেণির ছাত্রী প্রিয়াঙ্কা দাস। সে বলল, “অনেকদিনের ইচ্ছে ছিল। এবার স্কুলে সেই প্রশিক্ষমের ব্যবস্থাটা এসডিও ম্যাডাম করায় ভাল হল।” এই প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন পীযূষকান্তি বর্মন, মুনমুন সরকার ও অনুপ্রিয়া জয়সওয়াল। প্রথম দিনে ছাত্রীদের আগ্রহ দেখে প্রশিক্ষকরাও খুশি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.