যুবভারতীতে সাপ্রিসা জিততেই ডার্বির মানসিক প্রস্তুতি শুরু করে দিল মোহনবাগান!
শিল্ডে সাপ্রিসা বনাম ইউনাইটেড সিকিম ম্যাচের ফলাফলের জন্য সকাল থেকেই যুবভারতীতে মন পড়েছিল ওডাফা-ইচেদের। ভাইচুংয়ের দলের বিরুদ্ধে কোস্টারিকার দলের ৩-১-এ জেতার খবর পাওয়ার পরই ওডাফার মন্তব্য, “তার মানে ১৭ মার্চ আবার ডার্বি! এই ম্যাচটা এ বার আমাদের জিততেই হবে।” ইস্টবেঙ্গল তখন ভিয়েতনামে এএফসি কাপের ম্যাচের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত।
ম্যাচটা নিয়ে উৎকন্ঠায় ছিলেন করিম বেঞ্চারিফাও। যুবভারতীতে ম্যাচ চলাকালীন স্কোর জানার জন্য প্রেস বক্সে ঘনঘন ফোন আর মেসেজ আসতে থাকে তাঁর দলের ফুটবলারদেরও। ইস্টবেঙ্গলের কোচ ট্রেভর মর্গ্যানের নির্দেশে খেলা দেখতে মাঠে হাজির হয়েছিলেন সহকারী রঞ্জন চৌধুরিও। পাবলো রডরিগেজের গোলে প্রথমে সিকিমের দলটি এগিয়ে যাওয়ার পরই মোহনবাগানের এক ফুটবলার ফোন করে বলেই ফেললেন, “সিকিম জিতছে মানে তো ফাইনালেই দেখা হতে পারে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের!” কিছুক্ষণের মধ্যেই অবশ্য বিশ্বকাপার ওয়াল্টারের গোলে সমতা ফেরায় সাপ্রিসা। ইস্টবেঙ্গলের সহকারী কোচ তখনই বলে দিয়েছিলেন, “ম্যাচটা সাপ্রিসাই জিতবে। সেমিফাইনালেই মোহনবাগানের মুখোমুখি হতে হবে আমাদের।”
হলও তাই। দ্বিতীয়ার্ধে ফিলিপ আর প্রয়াগের বিশ্বকাপার কার্লোস হার্নান্ডেজের সম্পর্কিত ভাই জোয়েলের গোলে জয় ছিনিয়ে নেয় কোস্টারিকার দলটি। এরই মধ্যে অবার সাপ্রিসার আর এক বিশ্বকাপার আলান্সোকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। তাঁকে ম্যাচের আধ ঘণ্টা পর তুলে নেওয়া হলে তিনি মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে সোজা ভিআইপি বক্সে এসে কার্লোসের সঙ্গে বসে বাকি ম্যাচ দেখেন। ম্যাচ কমিশনার মৃণালকান্তি রায় বলছেন, “কেউ যদি অসুস্থ হয় বা চোট পায় সে উঠে যেতেই পারে।” যদিও আলান্সোর কোনও সমস্যা হয়েছিল বলে কোনও খবর নেই।
মঙ্গলবার রাত থেকেই চিডি, পেনদের জন্য নতুন করে অঙ্ক কষতে বসে গেছেন করিম। মুখে অবশ্য বলছেন, “ডার্বি ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমরা আলাদা করে গুরুত্ব দিতেও রাজি নই। প্রতিপক্ষ যে দলই হোক না কেন, নক আউট পর্বে না জিততে পারলে তো টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে যেতে হবে।” |
কোচ-অধিনায়কের মতো জেতার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন দলের বাকি ফুটবলাররাও। ৯ ফেব্রুয়ারির শেষ ডার্বির নায়ক ইচে তো বলেই দিলেন, “গতবার ড্র করে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। আর এ বার ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে আমরা ফাইনালে যেতে যাই। একটা ট্রফি এনে সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে চাই।” ৯ ডিসেম্বরের বদলাটা ফিরতি লিগে নেওয়া হয়নি নবিদের। ডার্বির কেলেঙ্কারির জবাব দেওয়ার আরও একটা সুযোগ মোহনবাগানের সামনে। তবে টোলগে, শিল্টন, নবি, স্নেহাশিস, রাকেশ মাসিদের চোট কিছুটা হলেও চিন্তায় রেখেছে মোহন কোচকে। তাঁর হাতে এখনও পাঁচ দিন সময় রয়েছে। এর মধ্যে দলকে গুছিয়ে নিয়ে ডার্বিতে মর্গ্যানকে ধাক্কা দিতে চান মরক্কান কোচ।ডার্বি ম্যাচ নিয়ে ইতিমধ্যেই পুলিসের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনা করে ফেলেছেন আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়। সাধারণের কথা মাথায় রেখে টিকিটের দাম রাখা হচ্ছে সত্তর থেকে দেড়শো টাকার মধ্যে। মাঠ যাতে ভরে যায় সেটা নিয়ে যেমন ভাবনা-চিন্তা করছেন আইএফএ সচিব, তেমনই ৯ ডিসেম্বরের কথা মাথায় রেখে মাঠের ঝামেলা এড়াতে কড়া ব্যবস্থা রাখছেন। |