হায়দরাবাদ টেস্টের পর একের পর এক নাটকীয় ঘটনা। আর সেগুলো সব মাঠের বাইরেরই নাটক।
শুরুটা সহবাগকে সিরিজের বাকি দু’টেস্টে বাইরে রাখার সাহসী সিদ্ধান্ত দিয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের আগে কোনও তরুণ ওপেনারকে অন্তত দুটো টেস্টে সুযোগ দেওয়ার জন্য নির্বাচকরা এই সিদ্ধান্ত নিলে, তাও মানা যায়। কিন্তু সহবাগ তো এখনও শেষ হয়ে যায়নি। গতিময় উইকেটে খেলতে ও পছন্দ করে। তাই মোহালি টেস্টে বীরু দলে থাকলে খুশি হতাম। মোহালিতে ৬ ম্যাচে ৫৮.৬৩ গড়ে সহবাগ ৬৪৫ রান করেছে। দুটো সেঞ্চুরি। আমার মতে ছন্দে ফিরতে ওর আর একটা ইনিংস লাগত। ইংল্যান্ড সিরিজে নাগপুরের ইনিংসের পরই যেমন ধোনি উঠে দাঁড়াল। বাদ পড়ার পর বীরুর মতো সিনিয়র প্লেয়ারের হতাশ হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে ওকে যতটুকু চিনি, দলে ফিরে আসতে নিশ্চিত ভাবেই মরিয়া হয়ে রয়েছে। এই সময়ে কাউন্টি ক্রিকেটে কয়েকটা ইনিংস ওকে সাহায্য করতে পারে। ম্যাচ প্র্যাক্টিসও হবে আর রান পেলে আত্মবিশ্বাসও বাড়বে। সামনের এক বছর ভারতীয় ক্রিকেটে যে কঠিন লড়াই অপেক্ষা করছে তাতে দলে বীরুর দরজা যেন বন্ধ না হয়ে যায়।
ক্লার্কদের শিবিরে তো আরও বড় নাটক। শেন ওয়াটসন-সহ চার ক্রিকেটারকে শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে মোহালি টেস্ট থেকে বাদ দেওয়া হল। যতক্ষণ না গোটা বিষয়টা ভাল ভাবে জানছি, এই ব্যাপারে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে, ওই ক্রিকেটারদের শুধু প্রেজেন্টেশন না দেওয়ার জন্য কোচ মিকি আর্থার আর অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক এই সিদ্ধান্ত নিলে খুব আশ্চর্য হব। হঠকারী সিদ্ধান্তই বলব।
আবার ওই ক্রিকেটারদের শৃঙ্খলাভঙ্গের ব্যাপারটা যদি টানা চলে আসে, তা হলে বলব শাস্তিটা যথাযথ। এর মাধ্যমে একটা জরুরি বার্তা দেওয়া হল যে, দিনের শেষে সব টিমের ক্ষেত্রেই দলগত সংহতি এবং সংস্কৃতি মাঠের পারফম্যান্সের সমানই গুরুত্বপূর্ণ। সব সফল দলেরই মহান সংস্কৃতি থাকে। অস্ট্রেলিয়া যখন এত বড় একটা টেস্ট সিরিজ চলার মধ্যেই আর অতি গুরুত্বপূর্ণ একটা টেস্ট শুরুর ঠিক মুখে এ রকম একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তখন নিশ্চয়ই ওরা মনে করেছে যে, দলীয় শৃঙ্খলারক্ষার ব্যাপারে একটা নির্দিষ্ট গণ্ডি টানার চূড়ান্ত সময় এসে পড়েছে। যদিও আমার একমাত্র প্রশ্ন, শাস্তির সময়টা নিয়ে। বিশেষ করে যখন ওয়াটসন, প্যাটিনসন, জনসনের মোহালির পিচ-পরিবেশে সফল হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল।এত ঘটনার মধ্যে টেস্ট ম্যাচ যে খেলতে হবে সেটাই বেমালুম চাপা পড়ে গিয়েছে। অস্ট্রেলীয় শিবিরের এই ঘটনায় কোনও ভাবে ভারতীয় ক্রিকেটারদের ফোকাস যেন নষ্ট না হয়। প্রথম দু’টো টেস্টের মতো খেলতে পারলে ভারতের সিরিজ ৪-০ না জেতার কোনও কারণ দেখছি না। |