|
|
|
|
গাঁধীদের বিঁধতে জোট চাইছে বিজেপি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ভোট বছরে অকংগ্রেসি দলগুলিকে সামিল করে গাঁধী পরিবারের বিরুদ্ধে সংগঠিত আক্রমণের কৌশল নিচ্ছে বিজেপি। মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে কংগ্রেসও।
নিতিন গডকড়ী সভাপতি থাকার সময়ে সনিয়া গাঁধীর জামাই রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে হরিয়ানায় জমি কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠে। কিন্তু বিজেপি নেতারা সে বিষয়ে সরব হতে পারেননি। কারণ, গডকড়ীর বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। এ বারে রাজস্থানে বঢরার বিরুদ্ধে ফের জমি-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় আজ সংসদের উভয় কক্ষই অচল রাখল বিজেপি।
কেন্দ্রের প্রধান বিরোধী দল মনে করছে, ভোট যত এগিয়ে আসছে গাঁধী পরিবারের বিরুদ্ধে আক্রমণও আরও তীব্র হবে বিভিন্ন দলের পক্ষে। এমনকী সম্প্রতি কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্রকে আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনও। মনমোহন সিংহ যতই আগ্রাসী মনোভাব নিন, রাহুল গাঁধীই ধীরে ধীরে কংগ্রেসের মুখ হিসেবে উঠে আসছেন। তাই ভোটের আগে গাঁধী পরিবারকেই নিশানায় রাখতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
সে কারণে আজ থেকেই বিজেপি রাজস্থানে রবার্ট বঢরার জমি-দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছে। পাশাপাশি হরিয়ানায় রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশনের জমি নিয়ে গরমিলের বিষয়টিও প্রকাশ্যে আনছে বিজেপি। প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর নামেও কিছু জমি কেনা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে সরব হওয়ার জন্য বিজেপি আরও কিছুটা অপেক্ষা করতে চাইছে।
এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে আজ সিবিআই জানিয়ে দিয়েছে, কয়লা খনি বণ্টনের ব্যাপারে নিয়ম মানেনি সরকার। বিজেপির এক নেতার বক্তব্য, সিবিআইয়ের কথা থেকেই স্পষ্ট মনমোহন সিংহের কাঁধে কয়লা মন্ত্রক থাকার সময়ে এই দুর্নীতি হয়েছে। গাঁধী পরিবারকে নিশানা করার জন্য কয়লা নিয়ে আজ তেমন সরব হয়নি বিজেপি। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “কয়লা দুর্নীতি নিয়ে সরব হওয়ার অর্থ সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফা চেয়ে বসা। কিন্তু বিজেপি চাইলেই প্রধানমন্ত্রী তো ইস্তফা দেবেন না। ফলে শেষ অস্ত্র ব্যবহারের আগে সঠিক কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। আপাতত গাঁধী পরিবারের বিরুদ্ধে আক্রমণ আরও শানিয়ে জনমত গঠন করাই দলের লক্ষ্য।”
কংগ্রেস অবশ্য এই পরিস্থিতি মোকাবিলারও প্রস্তুতি নিচ্ছে। দলের নেত্রী রেণুকা চৌধুরি আজ বলেন, “বঢরা কংগ্রেসের সদস্য নন। তিনি এক জন সাধারণ নাগরিক। ফলে তাঁর সম্পর্কে সংসদে কোনও বিষয় উত্থাপন করাই উচিত নয়।” তবে কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব বিষয়টিকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করলেও কংগ্রেস-শাসিত রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতকে আজ ময়দানে নামিয়েছে কংগ্রেস। গহলৌত আজ বলেন, “সরকারের রাজকোষের কোনও ক্ষতি হয়নি এই জমি লেনদেনে। প্রশাসনকেও ব্যবহার করা হয়নি। কেউ কোনও সুবিধাও পাননি। ফলে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে কী ভাবে?” কিন্তু বিজেপিও বঢরার বিরুদ্ধে আক্রমণ শানানোর আরও চেষ্টা করছে। অরুণ জেটলির কথায়, “ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য প্রশাসনকে ব্যবহার করেছেন রবার্ট বঢরা। রাজ্যও তাঁকে সুবিধা দেওয়ার জন্য আইন বদলেছে। এটা দুর্নীতি ছাড়া কী?” তবে বিজেপি চাইলেও সব বিরোধী দল তাদের সঙ্গে রয়েছে, তা নয়। ক’দিন ধরেই বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠতার চর্চা চলছে। সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির যুক্তি, রবার্টের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত হোক। কিন্তু সংসদ অচল করার পক্ষপাতী নন তাঁরা। তাঁর অভিযোগ, সংসদ অচল করে আঁতাত করে সংস্কারের বিলগুলি পাশ করিয়ে নিতে চায় কংগ্রেস-বিজেপি। |
|
|
|
|
|