আশ্বাসে থমকে আন্দোলন ফের রাস্তার কাজ শুরু হল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শামুকতলা
|
প্রশাসনের তরফে জমিদাতাদের দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দেওয়ায় আন্দোলন তুলে নিলেন বারবিশার ব্যবসায়ীরা। সোমবার থেকে বারবিশায় ফের চার লেনের মহাসড়কের কাজ শুরু হয়েছে। ক্ষতিপূরণের টাকা মিলছে না, এই অভিযোগে গত শনিবার কাজ করতে দিচ্ছিলেন না ব্যবসায়ীরা। তাই যে বিদেশি নির্মাণ সংস্থা কাজটি করছে, তারা চলে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিল।
সরকারি সূত্রের খবর, এই বিষয়টি জানাজানি হতেই সরাসরি মহাকরণ থেকে জেলা প্রশাসনকে বার্তা পাঠিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বলা হয়। রবিবার রাতে জেলা প্রশাসনের পক্ষে মহকুমাশাসক অমল কান্তি সাহা আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিলে ব্যবসায়ীরা আন্দোলন তুলে নেন।
বারবিশা ব্যবসায়ী সমিতি সম্পাদক কার্তিক সাহা বলেন, “মহকুমাশাসক ক্ষতিপূরণের বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন। তাই আপাতত আন্দোলন স্থগিত। আগামী মঙ্গলবার ব্যবসায়ী সমিতির হল ঘরে সভা হবে। সেখানে মহকুমা কর্তারা থাকবেন।” মহকুমাশাসক অমলকান্তি রায় জানান, কাজ বন্ধ করে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। ব্যবসায়ীদের আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াতে অনুরোধ করা হয়। তিনি বলেন, “ওঁরা প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন। মঙ্গলবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় বসব। আশা করছি সমস্যা মিটবে।”
প্রশাসনের রক্ষ থেকে মহাসড়কের বিদেশি ঠিকাদার সংস্থাকেও নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়। ঠিকাদার সংস্থার ম্যানেজার সাকসিথসুয়ান্না গার্ড বলেন, “আন্দোলনের জন্য রাস্তার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। আন্দোলন স্থগিত রাখায় ও প্রশাসন নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়ায় সোমবার থেকে কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি দ্রুত কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।” ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার জন্য প্রশাসনের তরফে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনার অমরেন্দ্র সিংহ বলেন, “ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করি কয়েক দিনে টাকা চলে আসবে। ঠিকাদার সংস্থার কাজে যেন সমস্যা না হয় তাও দেখা হচ্ছে।”
আন্দোলনকারী ব্যবসায়ীরা জানান, মহাসড়ক গড়তে ৩১-সি জাতীয় সড়কে মহাকাল চৌপথি থেকে অসম সীমানা পর্যন্ত ২৭ কিমি এলাকার দু’পাশে প্রায় ৪০ বিঘা জমি অধিগ্রহণ হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হন বারবিশার প্রায় ৮০০ ব্যাবসায়ী, চাষি ও সাধারণ বাসিন্দা। প্রথম দফায় কিছু ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হলেও দ্বিতীয় দফায় কিছুই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। পূর্ব চকচকা এলাকার ৪৬০ জন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ক্ষতিপূরণ না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আদালত জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনারকে দ্রুত ক্ষতিপূরণের টাকা মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরে বিভাগীয় কমিশনার বারবিশায় এসে আর ১০৫ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু গত ৩১ ডিসেম্বর ওই সময়সীমা পার হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এর পরে তাঁরা মহাসড়কের কাজ বন্ধ করে আন্দোলনে নামলে জেলা প্রশাসন হস্তক্ষেপ করায় সাময়িক ভাবে জটিলতা মেটে। |