নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি
|
রিভলবার দেখিয়ে গাড়িতে উঠে চালককে মারধর করে ৯টি স্টিলের আলমারি বোঝাই পিকআপ ভ্যান নিয়ে পালিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে গজলডোবা ব্যারেজ লাগোয়া জুগনিডাঙা এলাকায়। গাড়ির চালক শিলিগুড়ির শিবরামপল্লির বাসিন্দা দীপঙ্কর সিংহের অভিযোগ, তাঁকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে আমবাড়ি ফাঁড়িতে নিয়ে যান কয়েকজন বাসিন্দা। ওই এলাকা তাদের নয় জানিয়ে জখম অবস্থাতেই আমবাড়ি থেকে তাঁকে রাজগঞ্জ থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “ওই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
শিলিগুড়ির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার এ রবীন্দ্রনাথ অবশ্য বলেন, “যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে আমবাড়ি ফাঁড়ির পুলিশ ভ্যান যায়। ওই এলাকা জলপাইগুড়ি পুলিশের এলাকায় পড়ে। সেখান থেকেও একটি পুলিশ ভ্যান আসে। তাঁরা জখম ব্যক্তিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ফাঁড়ি থেকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।” সোমবার নিউ জলপাইগুড়ির কাছে ভোলামোড় থেকে পিকআপ ভ্যানটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আলমারিগুলি নিয়ে পিকআপ ভ্যানি ফেলে পালিয়ে যায় দলটি। দীপঙ্করবাবু জানান, রবিবার রাত ৯টা নাগাদ তিনি পিকআপ ভ্যান নিয়ে কোচবিহারের তুফানগঞ্জে রওনা হন। ৯টি স্টিলের আলমারি তুফানগঞ্জে পৌঁছে দেওয়ার জন্য হায়দারপাড়ার এক ব্যবসায়ী পিকআপ ভ্যানটি ভাড়া করেছিলেন। দীপঙ্করবাবু একা পিকআপ ভ্যানে ছিলেন। জুগনিডাঙা এলাকায় পৌঁছতেই দুই দুষ্কৃতী পথ আগলে দাঁড়ায় বলে অভিযোগ। রিভালবার দেখিয়ে তারা পিকআপ ভ্যানে ওঠে। দু’জন বাইকে তাদের পিছু নেয়। দলুই গ্রামের কাছাকাছি চালক দীপঙ্করবাবুকে মারধর করে ফেলে দিয়ে ভ্যান নিয়ে তারা পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ঘটনার পর কয়েকজন বাসিন্দা জখম চালককে আমবাড়ি ফাঁড়িতে নিয়ে গেলে ফাঁড়িতে তাঁদের কোনও কথা শুনতেই চাওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। জখমকে রাজগঞ্জ থানায় নিয়ে যেতে বলা হয়। শিলিগুড়ি কমিশনারেটের আমবাড়ি ফাঁড়ি থেকে জানানো হয়, যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে সেটি জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ থানার অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় তাদের পক্ষে কিছু করা সম্ভভ নয়। এর পরে বাসিন্দারা জখম চালককে রাজগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। থানা থেকেই রাজগঞ্জ ব্লক হাসপাতালে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। জখম চালককে আমবাড়ি ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে রাজগঞ্জ থানায় পাঠিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের একাংশ। রাজ্য পুলিশের সদর দফতরে এ নিয়ে অভিযোগ জানানো হবে বলেও জেলা পুলিশের একাংশ জানিয়েছেন। শিলিগুড়ির হায়দার পাড়ার ব্যবসায়ী মনোজ পাল এ দিন রাজগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। মনোজ বাবু বলেন, “সপ্তাহে ৫ দিন আমার কারখানায় তৈরি স্টিলের আলমারি নিয়ে দীপঙ্কর কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকায় যেতেন। রবিবার রাতে তার গাড়ি ছিনতাই করে পালায় দুষ্কৃতীরা। তাকে লক্ষ করে গুলিও করা হয়। দ্রুত এই ঘটনার কিনারা করা হোক, এটাই আমরা চাইছি।” জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, একটি দুস্কৃতী দল কিছু দিন ধরেই শিলিগুড়ি কমিশনারেট এবং জেলা পুলিশের সীমানা এলাকা গজলডোবায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে। রাতের দিকে বাইক থামিয়ে চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে। জেলা পুলিশের থেকে আমবাড়ি ফাঁড়িকে এবিষয়ে আগাম সর্তক করাও হয়েছে বলে সূত্রের খবর। |