সভায় বক্স বাজানো নিয়ে চাপানউতোর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
উচ্চ মাধ্যমিক চলাকালীন মাইক ও সাউন্ড বক্স বাজানোয় নিষেধাজ্ঞা থাকায় মুখ্যমন্ত্রীর সভার আয়োজন করতে গিয়ে ফাঁপড়ে পড়েছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। সব ঠিক থাকলে আজ, মঙ্গলবার দুপুরের বিমানে বাগডোগরায় পৌঁছনোর কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেখান থেকে সরাসরি তাঁর কালিম্পংয়ের মংপং বনবাংলোয় যাওয়ার কথা। পর দিন, বুধবার
দুপুরে মালবাজারের লাটাগুড়িতে টিয়াবন লাগোয়া এলাকায় সরকারি সভায় যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর কলকাতা ফেরার কথা রয়েছে। সোমবার সকালেই কালিম্পঙে পৌঁছে গিয়েছেন
সিআরপি জওয়ানেরা।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, প্রথমে সভায় মাইক বাজানোর প্রস্তুতি নিয়েও সব দিক খতিয়ে দেখে নিয়ন্ত্রিত শব্দের সাউন্ড বক্স ব্যবহার করেই সভা হবে বলে ঠিক হয়েছে। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, পরীক্ষার সময়ে কোথাও খোলা আকাশের নীচে মাইক ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয় না। মঞ্চে একাধিক কর্ডলেস মাইকের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অন্তত ৩০টি বড় সাউন্ডবক্স বসানো হচ্ছে। এত সাউন্ডবক্স বসানো হলে তার শব্দ অনেকটাই বেশি হবে বলে আশঙ্কা সরকারি কর্তাদের অনেকেরই। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “বিধি মেনেই সব ব্যবস্থা হয়েছে। যে এলাকায় সভা হচ্ছে, তার আশপাশে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা জনবসতি নেই।”
প্রশাসন সূত্রে খবর, অনুষ্ঠানে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের উদ্যোগে আয়োজিত আদিবাসী-ধীমাল তিরন্দাজি প্রতিযোগিতায় সফল ১৫ জনকে পুরস্কৃত করা হবে। মালবাজার ব্লক ভূমিসংস্কার দফতর থেকে ১০০ জনের হাতে পাট্টা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। বেকারদের স্বনির্ভর করে তোলার জন্য ঋণ দেওয়া হবে। ১০০ জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্রীকে সাইকেল দেওয়া হবে।
তবে সভায় শব্দবিধি মানার বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে জলপাইগুড়ির সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। সিপিএমের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিকের সময়ে মুখ্যমন্ত্রী যদি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সামনে মাইক কিংবা একাধিক বক্স লাঘিয়ে সভা করেন তা হলে সেটাই হয়তো রীতি হয়ে যাবে। অনেক ক্ষেত্রেই তো এমন হচ্ছে! তাই অবাক হব না।” জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহন বসু অবশ্য মনে করেন, মুখ্যমন্ত্রী বিধি মেনেই চলবেন। তাঁর কথায়, “শব্দবিধি ভেঙে সভা হলে বেআইনি কাজে উৎসাহ দেওয়া হবে। সেটা নিশ্চয়ই হবে না।” তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি চন্দন ভৌমিক অবশ্য সিপিএম-কংগ্রেসের আশঙ্কা অমূলক বলে দাবি করে বলেন, “সভা বিধি মেনেই হবে। সরকারের ক্রমাগত উন্নয়নে বিভ্রান্ত হয়ে বিরোধীরা কুৎসা করছে।”
এ দিকে, মুখ্যমন্ত্রী এই সফরে আদিবাসী বিকাশ পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন তৃণমূল সূত্রে খবর। পরিষদের তরফে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সুযোগ পেলে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে কথা হতে পারে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী একাধিক উন্নয়নমূলক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসছেন। এর বেশি আপাতত কিছু বলার নেই।” |