বিধানসভায় এলেন, কিন্তু বাজেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিনে অধিবেশন কক্ষের ধারে কাছে গেলেন না মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর।
কংগ্রেসের বিধায়ক পদ ছেড়ে তৃণমূলের সরকারের মন্ত্রী হয়েছেন হুমায়ুন। সেই কারণেই যে কেন্দ্র থেকে তিনি বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন সেই মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে সম্প্রতি উপনির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন হুমায়ুন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরাজিত হুমায়ুনকে এখনও মন্ত্রিত্বে বহাল রেখেছেন। তিনি বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিলেই তাঁকে নিয়ে হইচই করার পরিকল্পনা করেছে তাঁর পুরনো দল কংগ্রেস। এমনকী, তাঁকে ছেড়ে কথা বলতে চায় না বিরোধী বামেরাও। এই অবস্থায় সোমবার বাজেটের দিন হুমায়ুনকে নিয়ে তৃণমূল কী করে তা নিয়ে কৌতূহল ছিলই। সূত্রের খবর, দলের নির্দেশেই হুমায়ুন এ দিন অধিবেশন কক্ষে ঢোকেননি। |
সোমবার বিধানসভায় হুমায়ুন কবীর। —নিজস্ব চিত্র। |
রাজ্যপাল এমকে নারায়ণনের বক্তৃতা দিয়ে অধিবেশন শুরু হয়েছিল গত ৮ মার্চ। সেদিনও বিধানসভায় ছিলেন না হুমায়ুন। থাকবেন না তিনি আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। এ দিন বাজেট পেশের আগে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বিধানসভায় আসেন তিনি। সরকারি মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে কিছুক্ষণ কাটিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে যান রাজ্যের প্রাণিসম্পদ দফতরের এই প্রতিমন্ত্রী। তার পর বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কক্ষে মন্ত্রিসভার বৈঠকেও যোগ দিয়েছিলেন বলে হুমায়ুন জানান। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথাও হয় তাঁর। কিন্তু বৈঠক শেষে মমতা-সহ অন্য মন্ত্রীরা বিধানসভা কক্ষে গেলেও হুমায়ুন সেখানে ঢোকেননি। কিছুক্ষণ বিধানসভা চত্বরে ঘোরাঘুরির পরে তিনি চলে যান মহাকরণে তাঁর নিজের দফতরে।
বিধানসভায় এসেও কেন তিনি বাজেটের সময় কক্ষে থাকলেন না জানতে চাইলে হুমায়ুন বলেন, “বাজেট পেশ হচ্ছে। সে সময় আমি কক্ষে গেলে বিরোধীরা আমাকে দেখে হইচই শুরু করে দিত। তা হলে সরকারের কাজ বিঘ্নিত হত। সেই ঘটনা এড়াতেই বিধানসভা কক্ষে যাইনি।”
তবে বিধায়ক নন, তা-ও মন্ত্রী হিসেবে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী কাজ চালিয়ে যেতে বলায় শাসক দল তৃণমূল যে অস্বস্তিতে পড়েছে, তার আঁচ পাচ্ছেন হুমায়ুন নিজেও। সেই কারণে তাঁর মন্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী আমাকে মন্ত্রী হিসেবে কাজ চালাতে বলেছেন। উনি যে দিন পদত্যাগ করতে বলবেন, সে দিনই আমি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেব।” মন্ত্রিত্ব ছাড়লেও ছেড়ে আসা কংগ্রেসেতিনি আর যোগ দেবেন না বলে দাবি করেন রেজিনগরের এই প্রাক্তন বিধায়ক। বলেন, “আমৃত্যু আমি তৃণমূলেই থাকতে চাই।” |