কোষাধ্যক্ষের সই ‘জাল’, চেক দিয়ে টাকা উঠল
যেখানে সম্পাদক-সহ দু’জনের স্বাক্ষর ছাড়া ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলা যায় না, সেখানে শুধুমাত্র কোষাধ্যক্ষের স্বাক্ষরেই সল্টলেকের একটি ব্লক কমিটির দু’টি তহবিলের দু’টি চেক ভাঙানো হয়েছে। তা-ও কোষাধ্যক্ষের স্বাক্ষর ‘জাল’ করা হয়েছে এবং একটি চেক এক বছরের পুরনো। এমন ঘটনা লিখিত ভাবে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় জানিয়েছেন ওই ব্লক কমিটির কোষাধ্যক্ষ স্বয়ং। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার কথা অস্বীকার করলেও পুলিশ জানিয়েছে, কোষাধ্যক্ষের লিখিত ‘ইনফর্মেশন’-এর প্রেক্ষিতে অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এফ ডি ব্লক কমিটির লাইব্রেরি ও সাধারণ তহবিলের টাকা বিধাননগর পুরভবনে রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্কের শাখায় রাখা থাকে। অভিযোগ, সম্প্রতি সেই ব্যাঙ্ক থেকে ১৫ হাজার ও ১৯ হাজারেরও বেশি টাকা তোলা হয়। ওই দু’টি তহবিলের দু’টি বেয়ারার চেকে একমাত্র কোষাধ্যক্ষের স্বাক্ষর ছিল। তা সত্ত্বেও ওই ব্যাঙ্ক থেকে চেক ভাঙানো হয় বলে অভিযোগ।
তাঁর নিজের হেফাজতেই চেকবই থাকে বলে জানান কোষাধ্যক্ষ ভাস্করবাবু। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৬ ও ৭ মার্চ পরপর দু’দিন দু’টি চেক ভাঙানো হয়েছিল। তার পরে ভাস্করবাবু টাকা তুলতে গিয়ে ঘটনাটি জানতে পারেন। সে সময়েই জানা যায়, চেকবুকের ভিতরের দু’টি পাতা ছেঁড়া। থানায় লিখিত ভাবে ঘটনাটি লিপিবদ্ধ করলেও কোষাধ্যক্ষ ভাস্করবাবু বলেন, “সমস্যা হয়েছিল দু’টি চেক নিয়ে। সে দু’টি উধাও হয়েছিল। পরে দেখা যায়, চেক দু’টি ভাঙানো হয়েছে।”
কী ভাবে? ভাস্করবাবুর জবাব, আমার স্বাক্ষর জাল করে কেউ ওই চেক ভাঙিয়েছে। তবে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি মিটিয়ে নেবেন বলে জানিয়েছেন।” যদি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সমস্যা মেটাতেই পারেন, তবে পুলিশকে কেন জানালেন?
জবাবে ভাস্করবাবু বলেন, “অভিযোগ নয়, থানায় লিখিত ভাবে ‘ইনফরমেশন’ দিয়েছি।”
ভাস্করবাবুর এই বক্তব্যেই রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে। তাঁর সই জাল করে চেক ভাঙানো হল, অথচ তিনি কিংবা ব্লক কমিটির তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হল না। কেন? ভাস্করবাবুর জবাব, “ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সমস্যা মেটাবে বলেছে, তার পরে আর অভিযোগ দায়ের করার প্রশ্ন ওঠে না?”
ব্লক কমিটির সম্পাদক সৌমিত্র মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনাটি নিয়ে ব্লক কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পরেই এ বিষয়ে মন্তব্য করব।” যদিও এই নিয়ে ইতিমধ্যেই ব্লক কমিটির একটি জরুরি বৈঠক হয়েছে। সূত্রের খবর, ঘটনাটি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
যদিও ইতিমধ্যেই স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ প্রতিবাদ করতে শুরু করেছেন। যেমন, স্থানীয় বাসিন্দা তথা গত পুর-নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে তিনি ব্যাঙ্কে গিয়ে গোটা ঘটনাটি জানতে পারেন এবং ব্লক কমিটির সম্পাদককে জানান। তিনি বলেন, “কোষাধ্যক্ষের স্বাক্ষর জাল করা হল। তার পরেও কোনও অভিযোগ দায়ের করা হল না। নীতিগত ভাবে ব্লক কমিটির কর্তারা পদত্যাগও করলেন না, সেটাই রহস্যের।”
প্রশ্ন উঠেছে, বেনিয়ম জানা সত্ত্বেও কেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ চেক ভাঙাতে অনুমতি দিলেন? কেনই বা ঘটনা জানার পরেও ব্যাঙ্কের তরফে কোনও অভিযোগ পুলিশকে জানানো হল না? যদিও ব্যাঙ্কের ম্যানেজার পার্থ দাস বলেন, “এ সম্পর্কে লিখিত কোনও অভিযোগ পাইনি। এমন কোনও ঘটনার কথা জানি না।”
পুলিশ জানিয়েছে, ভাস্করবাবু ঘটনাটি নিয়ে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। তা নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.