নিজস্ব সংবাদদাতা • লাভপুর |
ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে ফের দুর্নীতির অভিযোগ উঠল লাভপুরের সিপিএম পরিচালিত হাতিয়া পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। আর্থিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে প্রধান ও উপপ্রধানের বিরুদ্ধে কারচুপি করে প্রকল্পের টাকা প্রকৃত প্রাপককে বাদ দিয়ে এক দলীয় সমর্থককে পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিত কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা গৌতম বাগদি এবং তার স্ত্রী ফুলকলি বাগদি-সহ অন্যান্যদের গ্রামীণ সমীক্ষা তালিকায় (ডব্লু বি ০৩-০১২-০০৫-০১০/২৭০৪৪) নাম অর্ন্তভুক্ত হয়েছে। ওই তালিকায় তাদের সামগ্রিক স্কোর রয়েছে ৩০। নিয়ম অনুযায়ী যাঁদের স্কোর ৩৩ এর মধ্যে তারাই বিপিএলভুক্ত হিসেবে পরিচিত। বিপিএলভুক্ত প্রতিটি পরিবার ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য অনুদান পাওয়ার যোগ্য। সেই হিসেবে পঞ্চায়েতের ইন্দিরা আবাস প্রকল্পের তালিকার ৫৪ নম্বরে নাম রয়েছে গৌতম বাগদির। সাধারণত পরিবারের কোনও মহিলার নামে ওই অনুদান বরাদ্দে প্রাধান্য দেওয়া হয়। অভিযোগ, ওই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কারচুপি করে একই গ্রামের এক দলীয় সমর্থকের পরিবারকে সুযোগ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে।
পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, সিপিএম সমর্থক হিসেবে পরিচিত লায়েকপুর গ্রামের গৌতম বাগদির পরিবারের ডব্লু বি ০৩-০১২-০০৫-০১০/২৬৯৯৫ নম্বরে নাম নথিভুক্ত রয়েছে। ঘটনাচক্রে তালিকায় স্ত্রীর নামও ফুলকলি বাগদি উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু তাঁদের স্কোর রয়েছে ৪০। সেই হিসেবে সরকারি নিয়মেই লায়েকপুরের গৌতমবাবু বিপিএল তালিকাভুক্ত নন। ইন্দিরা আবাস যোজনার অনুদান পাওয়ারও যোগ্য নন তিনি। পঞ্চায়েতের ইন্দিরা আবাস যোজনার তালিকাতেও তাঁদের নাম নেই। তা সত্ত্বেও তাঁকে ওই প্রকল্পের প্রথম দফার ২২,৫০০ টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। আগেও এই পঞ্চায়েতে বিপিএল তালিকাভুক্ত দু’টি ভুয়ো নামে দু’জন দলীয় সমর্থককে ওই প্রকল্পে টাকা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। যার জেরে ওই দু’ই ভুয়ো প্রাপক-সহ স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে জেলে পর্যন্ত যেতে হয়। তৃণমূলের হাতিয়া অঞ্চল কমিটির সভাপতি মানিকচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “ওই ঘটনার পরও পাল্টাননি পঞ্চায়েতের সদস্যরা।” কৃষ্ণচন্দ্রপুরের গৌতমবাবু বলেন, “প্রশাসনের সব স্তরে জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি।”
লায়েকপুরের গৌতমবাবু বলেন, “কোনও আর্থিক বোঝাপড়া বা দলীয় পক্ষপাতের অভিযোগ ঠিক নয়। আমি দুঃস্থ, তাই পঞ্চায়েত আমাকে যোগ্য বিবেচনা করেই অনুদান দিয়েছে।” একই অভিমত পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের শিশিরকুমার দাস এবং উপপ্রধান মানু বাগদিরও। তারা বলেন, “কাগজপত্র-সহ বিডিওকে যা বলার বলেছি।” লাভপুরের বিডিও দেবাশিস চৌধুরী বলেন, “তদন্ত চলছে। রিপোর্ট পেলে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “খোঁজ নেব। তদন্ত করে দুর্নীতি প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |