পঞ্চায়েত সচিবকে চড়, অভিযুক্ত তৃণমূল
ছেলেকে ট্রেড লাইসেন্স দিতে দেরি করার ‘অপরাধে’ দফতরেই প্রকাশ্যে পঞ্চায়েত সচিবকে চড় মারার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতা বাবার বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির দখলবাটি পঞ্চায়েতের ঘটনা। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য গোলাম হান্নান নবির বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন ‘নিগৃহীত’ পঞ্চায়েত সচিব। রামপুরহাট ১ বিডিও আব্দুল মান্নান বলেন, “প্রধানের সামনেই ওই ঘটনাটি ঘটেছে। প্রধানকে অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও ওই পঞ্চায়েত কর্মীকেও আলাদা ভাবে অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানাব।”
ঘটনা হল, এমন কাণ্ডের পরেও একটুকুও অনুতপ্ত হতে দেখা যায়নি ওই তৃণমূল নেতাকে। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তাঁর হুমকি, “এতদিন ধরে পঞ্চায়েতের সঙ্গে যুক্ত আছি, অথচ ওরা আমার ছেলের কাজটা করে দিল না। সবাইকে শেষ করে দেব!” অবশ্য একটু পরেই পঞ্চায়েতকর্মীকে চড় মারার অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁর দাবি, “আমি কিছুই করিনি। ওরাই আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে।”
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে হাবিবুর রহমান নামে এক যুবক ট্রেড লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে কাগজপত্র জমা দিয়েছিলেন। পঞ্চায়েত সচিব রাজকুমার মাজি সেই কাগজ পরীক্ষা করছিলেন। রাজকুমারবাবুর দাবি, “আমি কাগজপত্র পরীক্ষা করে ওই যুবক যে জমিতে ব্যবসা করতে চান, সেই জমির পরচা নিয়ে আসতে বলি তাঁকে। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওই যুবক আমার সঙ্গে তর্ক শুরু করে দেয়।” সেই সময় বাড়ি থেকে কাগজ আনার কথা জানিয়ে ওই যুবক দফতর থেকে চলে যান। অভিযোগ, এর কিছু ক্ষণ পরেই ওই যুবকের বাবা অর্থাৎ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য গোলাম হান্নান নবি দফতরে ঢুকে পড়েন। রাজকুমারবাবুর অভিযোগ, “গোলামবাবু ঘরে ঢুকেই পঞ্চায়েত প্রধান ও কর্মীদের উপরে চিৎকার-চেঁচামেচি করা শুরু করেন। আমাকে দেখতে পেয়েই আমার গালে এক চড় মারেন। আমাকে মার খেতে দেখে অন্য কর্মীরা তখন গোলামবাবুকে ধরে ফেলেন।”
এ দিকে, দলীয় কর্মীর এই ব্যবহার প্রসঙ্গে দলের রামপুরহাট ১ ব্লকের সভাপতি আনারুল হোসেন বলেন, “দল কখনই এই ধরনের কাজকর্ম মেনে নেয় না। ওই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য এমন কাজ করে থাকলে অন্যায় করেছেন।” গোলামবাবুর সঙ্গে দলের পক্ষ থেকে কথা বলা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। তবে বাবার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাবিবুর রহমান। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “সব কাগজ ঠিক থাকলেও ওই পঞ্চায়েত সচিব ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার ব্যাপারে আমার কাছ থেকে টাকা চাইছিলেন। এরপরেই আমি বাবাকে ডেকে নিয়ে আসি। বাবার সঙ্গে ওদের অল্পবিস্তর কথাকাটাকাটি ও ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়েছে মাত্র। চড় মারার কোনও ঘটনা ঘটেনি।” গোলামবাবুর ছেলের এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজকুমারবাবু।
ওই পঞ্চায়েতের কর্মীদের নিগ্রহের ঘটনা কোনও নতুন খবর নয়। অতীতেও এমন নজির আছে। মাঝে একটা সময় ওখানকার কর্মীরা নিরাপত্তার দাবিতে জয়কৃষ্ণপুরে অবস্থিত পঞ্চায়েত ভবনে কাজ না করে, তিন মাস বিডিও অফিসে বসে পঞ্চায়েতের কাজ চালিয়েছিলেন। ফের এমন ঘটনা ঘটতেই পঞ্চায়েতের ১২ জন কর্মীই প্রতিবাদে পঞ্চায়েত ভবনে তালা লাগিয়ে দেন। পরে তাঁরা বিডিও কাছে গিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জিও জানান। অন্য দিকে, ওই পঞ্চায়েতের প্রধান, কংগ্রেসের দীনবন্ধু মণ্ডলের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও এ দিনের ঘটনা নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.