দলবল নিয়ে বস্তির লোকজনের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। বর্ধমান শহরে বাদামতলার কাছে হরিজন বস্তিতে রবিবার এই ঘটনা ঘটে। এলাকার বাসিন্দারা সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার কাছে এ ব্যাপারে স্মারকলিপি দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, হামলায় দু’জন গুরুতর জখম হয়েছেন। পুলিশ সুপার বলেন, “মারধর ও হামলার অভিযোগ পেয়েছি। আক্রমণের হাত থেকে মহিলারাও নিস্তার পাননি বলে শুনেছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে।”
বস্তির বাসিন্দা পার্বতী রাউত, শীলা রাউতরা অভিযোগ করেন, শিবরাত্রির দিন লোকজন নিয়ে উত্তম সেনগুপ্ত নামে ওই তৃণমূল নেতা তাঁদের এলাকায় হামলা চালান। মারধরে অশোক ঘটক ও গণেশ রাউত নামে দু’জন জখম হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সোমবার সকালে তাঁরা উত্তমবাবু-সহ মোট ন’জনের নামে থানায় অভিযোগ করতে যান। কিন্তু পুলিশ উত্তমবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। বর্ধমান থানার আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য তা অস্বীকার করে বলেন, “ওঁরা যে অভিযোগ করছিলেন তাতে এফআইআর হয় না। তাই জেনারেল ডায়েরি করে তদন্ত হচ্ছে।”
পুলিশের একটি সূত্রে জানা যায়, বাদামতলা এলাকা থেকে শনিবার সুনীল রাউত নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে বর্ধমান থানার পুলিশ। তাঁর কাছে একটি গুলি ভরা পাইপগান উদ্ধার হয়। ওই ব্যক্তি স্থানীয় প্রোমোটারদের ভয় দেখিয়ে তোলা আদায় করেন বলে অভিযোগ। বর্ধমানে তিনি উত্তমবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত। পুলিশের অনুমান, ওই বস্তির কিছু লোক সুনীলকে ধরিয়ে দিয়েছে সন্দেহেই সেখানে হামলা চালানো হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উত্তমবাবু দলের আর এক নেতার অনুগামীদের সঙ্গে মারপিটে জড়িয়ে পড়ায় আরও চার নেতার সঙ্গে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরে অবশ্য অন্যদের সঙ্গে তাঁকেও ফেরানো হয়। উত্তমবাবুর বিরুদ্ধে দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে মদত দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেন, “হামলার খবর শুনে আমি বাসিন্দাদের পুলিশ সুপারকে ঘটনা লিখিত ভাবে জানাতে বলেছি। তার পরে যা করতে হবে, তা আমরা করব।”
হামলা ও অন্য সব অভিযোগ অস্বীকার করে উত্তমবাবুর অবশ্য দাবি, “আমি সুনীল রাউত বলে কাউকে চিনি না। আমার লোকেরা কাউকে আক্রমণও করেনি। দলেরই এক শ্রেণির লোক আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। আমি দলের রাজ্য নেতাদের সমস্ত ঘটনা জানিয়েছি।” |