খোলামুখ খনিতে আগুন, আতঙ্ক কেন্দায়
ধিকধিক করে আগুন জ্বলছে বেশ কিছু দিন ধরেই। খোলামুখ খনি দিয়ে ধোঁয়াও বেরোচ্ছে সোমবার সকালে তা বড় আকার নিল জামুড়িয়ার কেন্দা এরিয়ায় ওয়েস্ট কেন্দা প্যাচে। ইসিএল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য জল ও মাটি দিয়ে ভরাটের কাজ শুরু হয়েছে। এ দিন দুপুরের পর থেকে আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
ওয়েস্ট কেন্দা খোলামুখ খনির অদূরেই রয়েছে কেন্দাপুলি, শালডাঙা ও মাঝিপাড়া গ্রাম। কিলোমিটার খানেক দূরে কেন্দা গ্রাম। প্রায় মাসখানেক ধরেই কোলামুখ ওই খনিতে আগুন ও ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। এ দিন তা হঠাৎ বাড়ায় আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, জল ও মাটি দিয়ে ভরাটের কাজ করা হলেও তা যে কার্যত কোনও কাজে আসছে না তা এ দিনের ঘটনায় পরিষ্কার। এর থেকেই প্রমাণ হয়, ইসিএল কর্তৃপক্ষ ওই খনিতে নিয়মিত ‘কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট’ করছেন না। ঠিক মতো জল ছেটানোও হচ্ছে না। এক কথায়, সুরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি উপেক্ষিত।
জামুড়িয়ার কেন্দায় ভূগর্ভে জ্বলছে আগুন। সোমবার ওমপ্রকাশ সিংহের তোলা ছবি।
ভূগর্ভে পড়ে থাকা কয়লা না তোলার জেরে এর আগে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল কুনস্তরিয়া কোলিয়ারিতে। সেখানে বছরখানেক খনি বন্ধ রাখতে হয়েছিল। ফলে, বহু মূল্যের কয়লা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। মাস ছয়েক আগে ওয়েস্ট কেন্দা থেকে কিলোমিটার দুয়েকের মধ্যেই বেলবাঁধ প্যাচে আগুন লাগে। অবৈধ খনি থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভানোর কাজে গিয়ে খনিগর্ভে তলিয়ে যান এক খনিকর্মী। তাঁর মৃতদেহ আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি। হঠাৎ আগুন লাগায় এর আগে নিউকেন্দা প্যাচ, জেকে নগর খোলামুখ খনি এবং নারায়ণকুড়ি প্যাচেও আগুন লেগে বহু কয়লা পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। সিটু নেতা তথা সিপিএমের অজয় জোনাল কমিটির সম্পাদক মনোজ দত্তের অভিযোগ, “এই সব ঘটনা থেকেই পরিষ্কার ইসিএল কোনও শিক্ষা নিচ্ছে না। আমাদের আশঙ্কা, খনিগুলি বেসরকারিকরণের মতলব এঁটেছে ইসিএল। এর বিরুদ্ধে আমরা পাঁচটি শ্রমিক সংগঠন আন্দোলন চালাচ্ছি।”
ওয়েস্ট কেন্দার খনিতে আগুন লাগার ঘটনায় সব থেকে বেশি আতঙ্কিত কেন্দাগ্রাম। সেখানকার বাসিন্দা তথা তৃণমূলের অঞ্চল যুগ্ম সভাপতি অনুপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁদের গ্রাম অনেক দিন আগেই পুনর্বাসনের তালিকাভুক্ত হয়েছে। গ্রামের চার দিকে খনি। তাঁদের গ্রামে দশ বারের বেশি ধসের ঘটনা ঘটেছে। এক বার গ্রামের মাঝে গরু, বাছুর-সহ একটি ঘর মাটির তলায় চলে যায়। ওয়েস্ট কেন্দা খোলামুখ খনির আগুন নিয়ে মনোজবাবুর মতোই উদ্বেগ প্রকাশ করেন অনুপবাবু। তাঁদের দু’জনেরই দাবি, লাগোয়া নিউ কেন্দা ২ এবং ৪ নম্বর খনি, বেলবাঁধ পর্যন্ত মাটির ভিতর দিয়ে আগুন পৌঁছে যেতে পারে। তাতে বড় বিপদ ঘটে যেতে পারে। শালডাঙার বাসিন্দা তামুর মুর্মু, কেন্দা গ্রামের লাদু বন্দ্যোপাধ্যায়রাও বলেন, “খনি কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে জনপদ বিপন্ন হয়ে পড়তে পারে।”
ইসিএল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ সব আশঙ্কাকে আমল দিতে নারাজ। সংস্থার সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায়ের বক্তব্য, “ওয়েস্ট কেন্দা প্যাচের নীচে ভূগর্ভস্থ কোলিয়ারি ছিল। তা বন্ধ হওয়ার পরেও কিছু কয়লার স্তম্ভ রয়ে যায়। সেগুলি কাটার জন্য উপর থেকে খোলামুখ খনি চালু করা হয়। ভূগর্ভে পড়ে থাকা কয়লায় উপর থেকে যখন অক্সিজেন ঢুকছে, তখনই ক্রমাগত তাপে আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে।” তাঁর দাবি, সঙ্গে সঙ্গে আগুন নিভিয়ে ফেলা হচ্ছে। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তিনি বলেন, “ইসিএল পুরো কয়লা কেটে নেবে। তাতে এলাকা পুরোপুরি নিরাপদ থাকবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.