জাতীয় গ্রন্থাগারে প্রদর্শনী
বার্থেমা-র ভারত
ষোড়শ শতাব্দী সবে শুরু হয়েছে। দিল্লির সিংহাসনে সিকান্দর লোদি, আর বাংলায় তখন হুসেন শাহি আমল। ভারত মহাসাগরে থাবা বাড়াচ্ছে আগ্রাসী পর্তুগাল। ১৫০২-এ ভেনিস থেকে নিছক দেখার আনন্দে অজানা দেশ দেখতে বেরিয়ে পড়লেন ইতালীয় পর্যটক লুডোভিকো বার্থেমা। মিশর, আরব, পারস্য হয়ে (মক্কায় তাঁর আগে কোনও অমুসলিম ইয়োরোপীয়ের পা পড়েনি) শেষে ভারতের পশ্চিম উপকূলে দিউ-তে নামলেন বার্থেমা। ১৫০৪ থেকে ’০৭-এর মধ্যে তিনি ক্যাম্বে (গুজরাত), গোয়া, বিজাপুর, বিজয়নগর, কালিকট, কোল্লম ইত্যাদি ঘুরে শ্রীলঙ্কা হয়ে ব্রহ্মদেশ, সুমাত্রা, বোর্নিয়ো ছুঁয়ে জাভা পৌঁছন। রোমে ফিরে লিখলেন ভ্রমণকাহিনি ইটিনেরারিয়ো (১৫১০)। তাঁর বিবরণের খুঁটিনাটি, পরে দেখা গিয়েছে, মোটের উপর নির্ভুল। ভারত নিয়ে লেখা কোনও বই সেই প্রথম বেস্টসেলার! সব মিলিয়ে ৫০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে তাঁর এই বই।
কিন্তু বার্থেমার বইয়ে কোনও ছবি ছিল না। রোমের কাসানাতেন্স লাইব্রেরিতে পাওয়া গেল এক পর্তুগিজ শিল্পীর আঁকা শ’দেড়েক ছবির পাণ্ডুলিপি, বিষয় ভারতের পশ্চিম উপকূলের বিভিন্ন অঞ্চলের অভিজাত থেকে সাধারণ মানুষের জীবন, সময়টাও বার্থেমার কাছাকাছি। ক্যাম্বে-তে চাষবাস (সঙ্গের ছবি), মহাজন, পুকুরে মেয়েদের স্নান, কন্নড় দেশে রথের তলায় আত্মবলিদান, যোগী ও কলন্দর, খোল-করতাল সহ সমবেত নৃত্য, শৈব সন্ন্যাসী, বিধবাকে স্বামীর সঙ্গে জীবন্ত সমাধি দেওয়া-- ভারতীয় জনজীবনের এমন ছবি ষোড়শ শতকে কেন, তার বহু পরেও সহজলভ্য নয়। বার্থেমার বিবরণী আর এই সব ছবি নিয়েই এখন জাতীয় গ্রন্থাগারের আর্ট গ্যালারিতে চলছে এক অসাধারণ প্রদর্শনী ‘ভয়েজ টু ইন্ডিয়া’ (২০ মার্চ পর্যন্ত, রোজ ১০-৫.৩০)। কলকাতায় ইতালির কনসুলেট জেনারেল, দিল্লির ইতালিয়ান কালচারাল ইনস্টিটিউট মূল উদ্যোক্তা, আর জাতীয় গ্রন্থাগারের ডিজি স্বপন চক্রবর্তীর উদ্যোগে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গ্রন্থাগারের নিজস্ব সংগ্রহ, বিশেষত আশুতোষ সংগ্রহের অনেক দুর্লভ বই।

জন্মদিনে
জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির আনাচেকানাচে ছড়িয়ে আছে ‘স্বপ্নপ্রয়াণ’-এর ফেলে-দেওয়া পাতা, গাছের তলায় পড়ে-থাকা আমের বোলের মতো। দূরের বারান্দায় শোনা যাচ্ছে অট্টহাস্য, রিহার্সাল চলছে কৌতুকনাট্যের। বঙ্কিম তাঁকে ‘গম্ভীর, ভাবুক’ বলে অভিহিত করলেও জীবনস্মৃতি-তে তাঁকে নিয়ে এমনই শব্দচিত্র। আড়ালেই থাকতেন তিনি, তবু তাঁর প্রভাব ছড়িয়ে ছিল সবখানে। গাঁধীজি শান্তিনিকেতনে এলে তাঁর পায়ের কাছে বসতেন। মধুসূদন তাঁর ‘মেঘদূত’ অনুবাদে প্রভাবিত হয়ে বাংলা কাব্য রচনায় মন দেন। কখনও বাক্সমিতি, কখনও উপসর্গের অর্থবিচার কিংবা কখনও নিছক মজার আড্ডায় মেতে থাকা দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর কিন্তু আজও উপেক্ষিত। আজ, ১১ মার্চ তাঁর জন্মদিনেও উদযাপনের কোনও খবর নেই। তবু আশার খবর, সম্প্রতি প্রকাশিত হল নরেশচন্দ্র সাহার দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর/ সৃজনে ও মননে (সিগনেট প্রেস)। তাঁর লেখালেখি ও বিজ্ঞানচর্চার সবিস্তার এই আলোচনা নিছক অ্যাকাডেমিক গবেষণা নয়, সুখপাঠ্যও।

ঐতিহ্য
রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং অনুমতি দিয়েছিলেন তাঁর কবিতায় সুর বসাতে। ‘শেষ খেয়া’য় সুর বসিয়ে তৈরি করেছিলেন বিখ্যাত গান ‘দিনের শেষে’। তাঁর নির্দেশনায় ভারতীয় সিনেমায় প্রথম প্লে-ব্যাক মিউজিক শুরু হয়। তিনিই প্রথম সঙ্গীত পরিচালক, যিনি দাদাসাহেব ফালকে সম্মান পান। কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পী পঙ্কজকুমার মল্লিকের জীবন ও কাজ নিয়ে শুরু হয়েছে তিন দিনের অনুষ্ঠান ‘দ্য হেরিটেজ অব পঙ্কজকুমার মল্লিক’। ৮ মার্চ জ্ঞান মঞ্চে দেখানো হল শিল্পীর অভিনয় ও সঙ্গীতজীবনের অডিয়ো ও ভিডিয়ো উপস্থাপনা। উদ্বোধন করে চিত্রপরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত বললেন, এই প্রজন্মের কাছে পঙ্কজ মল্লিকের কাজকে পৌঁছে দেওয়া দরকার। ১৫-১৬ মার্চ আইসিসিআর-এ আছে আর দুটি অনুষ্ঠান ‘গীতাঞ্জলি’ এবং ‘ইন টিউন উইথ পঙ্কজ মল্লিক’। গাইবেন শিল্পীর দৌহিত্র রাজীব গুপ্ত ও তাঁর স্ত্রী ঝিনুক গুপ্ত। প্রতি দিন সন্ধ্যে ছ’টায়। আয়োজনে পঙ্কজ মল্লিক মিউজিক অ্যান্ড আর্ট ফাউন্ডেশন।

জমি ভাবনা
গত কয়েক বছরে পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলির একটা হল জমি। কিন্তু সেই আলোচনা আটকে থেকেছে চেনা গণ্ডিতে ইচ্ছুক বনাম অনিচ্ছুক আর কৃষি বনাম শিল্পের ঘোলা জলে। তার বাইরেও যে জমি নিয়ে ভাবনা, গবেষণার বিশাল পরিসর পড়ে রয়েছে, কথাটি ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফর্নিয়া, বার্কলের অর্থনীতির অধ্যাপক প্রণব বর্ধন ইতিমধ্যেই উল্লেখ করেছেন। সেই প্রসঙ্গেই সবিস্তার বলবেন তিনি, শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায়, পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রে। সে দিন অনুষ্টুপ ও লিটারেচার আর্ট ন্যাশনাল কালচার এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সোসাইটি সমর সেন স্মারক বক্তৃতা ২০১৩-র আয়োজন করেছে। সভামুখ্য কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্বের অধ্যাপক পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

আদি রূপে
স্বামী বিবেকানন্দের মৌলিক বাংলা রচনার সংখ্যা খুব বেশি নয়। বাংলা লেখা গ্রন্থরূপ লাভ করে তাঁর প্রয়াণের পর। গ্রন্থ-নির্মাণ কালে নানা কারণে নতুন করে সাজানো হয় রচনাগুলি। ‘ভাববার কথা’ নামে যা ছিল টুকরো গল্প তা হয়ে উঠল গোটা একটা রচনা সংকলনের শিরোনাম। ‘বিলাতযাত্রীর পত্র’ আর ‘পরিব্রাজক’ দুটো আলাদা লেখা পরিব্রাজক বইতে এক করে দেওয়া হল। এমন অনেক নিদর্শন আছে প্রচলিত সংকলনগুলিতে। বিবেকানন্দের জীবৎকালে যে চেহারায় উদ্বোধন পত্রিকায় লেখাগুলি প্রকাশিত হয়েছিল সেই চেহারা এ বার ফিরে দেখা যাবে। বিশ্বভারতীর শিক্ষক বিশ্বজিৎ রায়ের সম্পাদনায় ভূমিকা ও টীকা সহ প্রকাশিত হতে চলেছে স্বামী বিবেকানন্দ/ বাংলা রচনা সংকলন (পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি)।

অন্য ছবি
তিনি এখন চুয়াত্তর। তাতে কী? ভাবনার গড়ের মাঠে এখনও ছোটে তাঁর রঙের পাগলা ঘোড়া। কখনও ছেনি-হাতুড়ি নিয়ে লেগে যান ভাস্কর্যে। তিনি সুনীল দাস, তাঁর ‘ঘোড়া’ একদা টগবগিয়ে ছুটেছে ভারত তথা বিশ্বের শিল্পবাজারে। এ বার তিনি কিঞ্চিৎ অন্য ক্যানভাসে। ব্যস্ত জীবনের প্রথম প্রচ্ছদটি আঁকায়। ত্রিপুরার কবি দেবব্রত দেব পুরকায়স্থের কবিতার বইয়ের প্রচ্ছদ আঁকছেন তিনি। ‘বাংলা সাহিত্য তো শুধু পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলাদেশের নয়। তাই জীবনের প্রথম প্রচ্ছদ করতে গিয়ে ত্রিপুরার কবির ডাক ফেলতে পারলাম না,’ বলছেন সুনীল। সম্প্রতি তৈরি করলেন ‘সুনীল দাস আর্ট ফাউন্ডেশন’। তাঁর ছবি বিক্রির টাকায় গড়া হয়েছে তহবিল, দুঃস্থ শিল্পীদের সাহায্যের জন্য। স্মৃতিকাতর শিল্পী বললেন, ‘ছোটবেলায় নিজের চোখে দেখেছি এক সঙ্গীতশিল্পীকে না খেতে পেয়ে মরে যেতে। তেমন অনেক প্রতিভা আজও আছেন। তাই তাঁদের জন্য, তিনি যে শিল্পেরই হোন না কেন, এই তহবিল।’

নারী দিবস
নারীদিবস উপলক্ষে সাহিত্য অকাদেমির আয়োজন ছিল ‘নারীচেতনা’। আয়োজনে ত্রুটি ছিল না। নবনীতা দেবসেন সভানেত্রী, নেপালি, মৈথিলি, ওড়িয়া, বড়ো কবিরা মাতৃভাষায় কবিতা, ছোটগল্প, অণুগল্প পড়লেন। মেয়েদের লেখা, মেয়েদের নিয়ে। তাঁদের স্মৃতি, ভাবনা, প্রতিবাদ বড় জীবন্ত হয়ে ফুটে উঠেছিল লেখাগুলিতে। কিন্তু শ্রোতা কোথায়? ধৈর্য ধরে সাহিত্যপাঠ শোনার লোক কি কম পড়ছে? এ বার বোধহয় অন্য ভাবে শ্রোতার কাছে পৌঁছনোর কথা ভাবার সময় এসেছে।

নাটকীয়
নাট্যমুহূর্ত নিয়ে বলছিলেন অশোক মিত্র, এ বারের কুমার রায় স্মারক বক্তৃতা-য়। সটান দাঁড়িয়ে অশীতিপর মানুষটি নবীন যুবার মতো এক স্মৃতি থেকে অনায়াসে চলে যাচ্ছিলেন অন্য অভিজ্ঞতায়। একবার উৎপল দত্তের ‘কল্লোল’ দেখছেন, নাটকে গাওয়া হচ্ছে কমিউনিস্টদের ‘ইন্টারন্যাশনাল’, হঠাৎ খেয়াল করলেন দর্শকেরা সবাই গলা মিলিয়ে যেন স্বদেশি গানের মতো করে গাইছেন সে গান। আর একবার কলকাতার বাইরে নির্বাচনী প্রচার সেরে বেরোচ্ছেন, দু’তিনজন আদিবাসী মেয়ে এসে শুধোয় ‘এত কম সময় নিয়ে আসিস কেনে?’ কথাগুলো যেন আজ জঙ্গলমহলের প্রেক্ষিতে নতুন ভাবে বাজছে অশোকবাবুর কানে ‘এত কম সময় নিয়ে আমাদের নিয়ে ভাবিস কেনে?’ ২ মার্চ, বাংলা আকাদেমি সভাঘরে এ আয়োজনের উদ্যোক্তা ছিল বহুরূপী। শুরুর কথনে ছিলেন শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়। কুমার রায় স্মারক-সম্মান পেল বোলপুরের নাট্যদল ইলোরা। পুস্তিকাকারে প্রকাশ পেল গত বারের শঙ্খ ঘোষ প্রদত্ত বক্তৃতাটিও।

রসগোল্লা
গোলকধাম রহস্য এ বার অন্তর্জালে। না, ফেলুদার উপন্যাস নয়, এ আর এক গোলক। রীতিমতো রসগোলক। সেটিকে একশো ছ’বছর বশে রেখে বাঙালির রসনা সার্থক করছে যে প্রতিষ্ঠান সেই চিত্তরঞ্জনই তাকে উঠিয়ে দিল ই-ভুবনে। www.rasogolla.com ঠিকানায় রসগোল্লার ভূত এবং বর্তমান সবেরই হদিশ মিলবে ১৪ মার্চ থেকে। “কেবল রসগোল্লা নয়, তার নেতৃত্বে সেই অতীতের কলকাতা তথা বাংলার মিষ্টান্নের উপকরণ, প্রকরণ এবং প্রক্রিয়া, সবই থাকবে সেখানে,” বলছেন নিতাই ঘোষ, চিত্তরঞ্জন মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের অন্যতম কাণ্ডারী। বেঙ্গল ক্লাবে ওয়েবসাইট উদ্বোধনের দিন শহরের বনেদি পাকশালার মিষ্টান্নচর্চার কথা বলবেন কৃষ্ণা বসু এবং গৌতম ভদ্র শোনাবেন উনিশ শতকের ঔপনিবেশিক কলকাতার মিষ্টি-কথা। মিষ্টান্নের সে কাল-এ কাল এবং আগামিকাল নিয়ে বলবেন শংকর। রসিক জানেন, রসগোল্লার রসটি যেন তার ঐতিহ্যের ভিয়েন। জনৈক নিমন্ত্রিতকে রস টিপে ফেলে রসগোল্লা খেতে দেখে দাদাঠাকুর কি আর সাধে বলেছিলেন, ‘ওহে, রসটা ফেলে জিরো খাচ্ছ কেন!’

একনিষ্ঠ
ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘চোখের বালি’ চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্যে দূর থেকে এক বজরার ছাদে দেখা যায় সান্ধ্য ঠুংরির আসর, আর দূরাগত সেই গীতমূর্ছনা নেপথ্য আবহে দিয়ে যায় মায়ার মোচড়। এই সেই কণ্ঠ, যাঁর ঠুংরি-হোরি-চৈতি-কাজরি-টপ্পা নিয়ে আসত বেনারসের যুগোত্তীর্ণ সুগন্ধ। মাত্র ৬৭ বছরে বিদুষী গায়িকা পূর্ণিমা চৌধুরির প্রয়াণ শুধু এ শহরকে নয়, বেনারস ঘরানাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করল। বহরমপুরের প্রখ্যাত স্বাধীনতা-সংগ্রামী শশাঙ্কশেখর সান্যালের কনিষ্ঠা কন্যা পূর্ণিমার প্রাথমিক তালিম এ টি কাননের কাছে। বেনারসে পণ্ডিত মহাদেবপ্রসাদ মিশ্র, পরে গিরিজা দেবীর কাছে শিক্ষা। ১৯৫৯ থেকে শুরু করে কুম্ভমেলায় শেষ অনুষ্ঠান পর্যন্ত শিল্পী একনিষ্ঠ ভাবে পুরব অঙ্গের গায়কীর প্রতি দায়বদ্ধ থেকেছেন, যা সত্যিই বিরল। ২০০০ থেকে কলকাতার বাসিন্দা পূর্ণিমা রেখে গেলেন স্বামী, দুই পুত্র এবং অনেক গুণী ছাত্রী।

সেতুবন্ধন
কলকাতার চিনাদের আমরা যতটা চিনি, জাপানিদের ততটা নয়। কিন্তু এ শহরেই জাপান-ভারত সেতুবন্ধন করে চলেছে ‘নিহঙ্গ কাইওয়া কিয়োকাই’। এটি এখানকার জাপানি ভাষার ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের সংগঠন। ২৮ বছর ধরে জাপান কনস্যুলেট জেনারেলের সহায়তায় এদের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক উৎসব হচ্ছে। দেখানো হয় জাপানি চলচ্চিত্র, আয়োজিত হয় অরিগামি কর্মশালা। প্রকাশিত হয় নিউজলেটার ‘সাকুরা’। ১৬ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ত্রিগুণা সেন প্রেক্ষাগৃহে বিকেল পাঁচটায় অনুষ্ঠিত হবে এ বারের বাৎসরিক অনুষ্ঠান ‘ইন নিচি বুনকাসাই’। থাকবে জাপানি নাটক, গান, নাচ ইত্যাদি।

নেপথ্যে
যে দিন বিকেলে উৎপল দত্ত চলে গেলেন, সে দিনই মনু দত্ত ছেলের হাত ধরে তাঁকে নালিশ করে বলছিলেন, ‘খালি ফুটবল আর ফুটবল, কাজে এতটুকু মন নেই।’ কাজ মানে থিয়েটারের কাজ, যা মঞ্চশিল্পী মনুর স্বপ্ন-সাধনা। কিন্তু সেই ‘ফাঁকিবাজ’ ছেলেকে উৎপল দত্ত সে দিন বলেছিলেন, ‘যেটা করছ সেটা মন দিয়ে করছ তো?’ ‘তার তিন-চার ঘণ্টার মধ্যেই ইন্দ্রপতন হল,’ স্মৃতিতে ডুব দিলেন বিলু দত্ত, এ শহরের নাট্যমহলের যিনি আপনজন। পিতামহ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত থেকে শুরু মঞ্চজোগানের ব্যবসা। মনু দত্ত তাকে শিল্প করে তুলেছিলেন। আর বিলু তাকে এখন এক প্যাশনে পরিণত করেছেন। বছর পঁচিশ আগে চাকরি ছেড়ে পুরোদস্তুর থিয়েটার-মঞ্চ নিয়ে পড়েছিলেন বিলু। রমাপ্রসাদ বণিক, কৌশিক সেন, সুমন মুখোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসু, অশোক মুখোপাধ্যায়, স্বপন সেনগুপ্ত, বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা নাটকের কোন রথীরই না রথ প্রস্তুত করেছেন তিনি। বাংলা নাটক যে পাকাপাকি ফিরে পেল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে তা-ও তো তাঁরই কারণে। ১৯৯৬-এ নিজের নাট্যদল ‘মুখোমুখি’ তৈরি করলেন। আমন্ত্রিত অভিনয় ছাড়া সৌমিত্র এখন সেখানেই অভিনয় করেন। বিলু নাটক লেখেন না, অভিনয় করেন না, কিন্তু নাট্যমঞ্চের নেপথ্যে তাঁর উপস্থিতিটা বড় সক্রিয়, বড় আন্তরিক উষ্ণতাভরা।


গবেষক
এখানে সুনামি যখন আছড়ে পড়ে, তখন চঞ্চল হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কারণ, দক্ষিণ এশিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা যেমন, ভারত বাংলাদেশ পাকিস্তান শ্রীলঙ্কা নেপাল ভুটান বা মলদ্বীপের জল ও জনজীবন নিয়ে দীর্ঘ দিনের গবেষণা গ্রাহাম চ্যাপম্যান-এর। বিষয় ভূতত্ত্ব, কেমব্রিজ-এর পিএইচ ডি (১৯৭০)। ১৯৭৩-’৮৭ ফেলো ছিলেন ডাউনিং কলেজে। শিকাগো ইউনিভার্সিটি, স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ, ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ প্রভৃতির সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন। ১৯৯৪ থেকে ল্যাঙ্কাস্টার ইউনিভার্সিটি-তে। প্রায় চল্লিশ বছর চ্যাপম্যানের গবেষণা এশিয়ার ভূ-প্রকৃতি, জল এবং তাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত জনজীবন নিয়ে। সেই সূত্রে এসেছে রাজনৈতিক পালাবদল এবং মানুষের বিশ্বাস ও জীবনশৈলীর কথাও। লিখেছেন হিউম্যান অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল: আ জিয়োগ্রাফার্স অ্যাপ্রাইজাল, দ্য জিয়োপলিটিক্স অব সাউথ এশিয়া: ফ্রম আর্লি এম্পায়ারস টু দ্য নিউক্লিয়ার এজ ইত্যাদি বই। সম্পাদিত বই সাতটি এবং অজস্র প্রবন্ধ। এখন কাজ করছেন বাংলার বন্যা-সমস্যা নিয়ে এবং গঙ্গার ওপর একটি রেডিয়ো তথ্যভাষ্য বিষয়ে। এই মুহূর্তে এ শহরে, আজ বিকেল ৩ টেয় বলবেন আইসিসিআর-এ: ‘স্কিউড ল্যাটিটিউডস, অ্যান এক্সেস অব মাড, অ্যান্ড সুনামিজ: অ্যান ওভারভিউ অব দ্য বে অব বেঙ্গল’ শীর্ষকে। সূচনায় কল্যাণ রুদ্র। আয়োজক সি এক্সপ্লোরার্স ইনস্টিটিউট। দেখ যাবে আন্দামানে ওদের বিবেক যাত্রা-র স্লাইডচিত্র।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.