বন্ধ দু’শো স্কুল, ব্রাত্যর অনুষ্ঠানে হাজির শিক্ষকেরা
বারাসত এবং সংলগ্ন চারটি এলাকার প্রায় দু’শোটি প্রাথমিক স্কুল ছুটি দিয়ে সেখানকার প্রায় এক হাজার শিক্ষককে আনা হল সরকারি অনুষ্ঠানে। এবং তাঁদের উপস্থিতিকে ‘কাজে হাজিরা’ হিসেবেই দেখানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হল সরকারি ভাবে।
শনিবার এই কাণ্ড ঘটল বারাসতের রবীন্দ্রভবনে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের স্থায়ী ভবন নির্মাণের শিলান্যাস অনুষ্ঠানকে ঘিরে। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মীনা ঘোষ ঘোষণা করেছেন, “যে সব শিক্ষক অনুষ্ঠানে এসেছেন, তাঁদের হাজিরাকে কাজে হাজিরা হিসেবে গণ্য করা হবে। যাঁরা আসেননি, তাঁরা যদি স্কুলে গিয়ে থাকেন, তা হলে সেটাও কাজে হাজিরা হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু স্কুলে বা অনুষ্ঠানে কোথাও আসেননি, এমন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাসত, পশ্চিম বারাসত, দত্তপুকুর, মধ্যমগ্রাম এই চারটি সার্কেলের প্রায় ২০০টি প্রাথমিক স্কুলের প্রায় এক হাজার শিক্ষককে শনিবার ওই অনুষ্ঠানে আসতে বলা হয়।
বারাসত রবীন্দ্রভবনে ব্রাত্য বসু। —নিজস্ব চিত্র
জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শকের অফিস থেকে ওই স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের ফোনে এবং এসএমএসের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত নির্দেশ দেওয়া হয়। শিক্ষকেরা এ দিন রবীন্দ্রভবনে এলে তাঁদের নাম, স্কুলের নাম এবং হাজিরা নথিবদ্ধ করা হয়। এই ঘটনায় শিক্ষকদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। শনিবার যে স্কুল বন্ধ থাকবে, তার বিজ্ঞপ্তি অনেক স্কুলে জারি করা হয়েছিল। কিন্তু যে সব স্কুলে তা হয়নি, সেই সব স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এ দিন এসে ফিরে যায়।
কিন্তু স্কুল ছুটি দেওয়া হল কেন?
শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, এ সংক্রান্ত নির্দেশ না থাকলেও বেশির ভাগ প্রাথমিক স্কুলেই চার-পাঁচ জনের বেশি শিক্ষক থাকেন না। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই যদি অনুষ্ঠানে চলে আসেন, তা হলে স্কুল খোলা রাখা যায় না। প্রিয়নাথ জুনিয়র বেসিক ইনস্টিউটিশনের শিক্ষক তথা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সদস্য মহম্মদ কুতুবউদ্দিন আহমেদ বলেন, “স্কুল ছুটি দেওয়ার ব্যাপারে আমাদের কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। কাউন্সিলে কোনও সিদ্ধান্তও হয়নি। গোটা ব্যাপারটাই জোর করে চাপিয়ে দিল স্কুল শিক্ষা দফতর।”
স্কুল ছুটি দিয়ে শিক্ষকদের অনুষ্ঠানে আসা এবং তাঁদের উপস্থিতিতে ‘কাজে হাজিরা’ হিসেবে গণ্য করার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “অনুষ্ঠানে যে সব শিক্ষক আসতে চান, তাঁরা আসবেন। যাঁরা চান না, তাঁরা আসবেন না। এটা তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার। এখানে তাঁরা হাজিরা দিলেই সেটা কাজে হাজিরা হিসাবে গণ্য হবে কি না, তা আমি খোঁজ নিয়ে দেখব।”
প্রশ্ন উঠছে শিলান্যাস অনুষ্ঠানকে ঘিরেও। এ দিন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু রবীন্দ্রভবনে প্রস্তাবিত যে ভবনের শিলান্যাস করলেন, ২০০৬ সালে সেই একই ভবনের শিলান্যাস করেছিলেন বামফ্রন্ট সরকারের তৎকালীন স্কুল শিক্ষামন্ত্রী কান্তি বিশ্বাস। তখন মূলত প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের আধিকারিকদের উপস্থিতিতেই শিলান্যাস হয়েছিল। ফের শিলান্যাস নিয়ে কান্তিবাবু বলেন, “এই সরকার যে কী ভাবে চলছে, কী বলছে, কিছুই বুঝতে পারছি না। শিলান্যাসের পাল্টা শিলান্যাস না করে ওরা দ্বারোদ্ঘাটন করেই দেখাক না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.