চারটে হ্যাটট্রিক। সিকিমের বিরুদ্ধে পাঁচ গোল। শেষ ছয় ম্যাচে গোল-সংখ্যা ১৫। তা সত্ত্বেও মোহনবাগানের গোলমেশিন ওডাফা ওকোলিকে পাত্তাই দিচ্ছে না কোস্তারিকার সাপ্রিসা।
দুই বিশ্বকাপার-সহ তাদের তিন ফুটবলার আসতেই হুঙ্কার, “মোহনবাগান রিয়াল মাদ্রিদ নাকি?”
কিন্তু সাপ্রিসার সেই বিশ্বকাপার কারা? প্রথম জন ওয়াল্টার সেন্তিনো। ২০০২ এবং ’০৬-এর ফুটবল বিশ্বকাপে প্রতিনিধিত্ব করা ওয়াল্টার শেষ তিন-চার বছরে ক্লাব ফুটবল খেলেননি বলেই খবর। আর দ্বিতীয় জন স্টিভন ব্রাইস। ২০০২ বিশ্বকাপে খেলা এই প্রাক্তন ফুটবলার আবার কলকাতার সঙ্গে আগাম পরিচিত। পেশাগত ভাবে ব্রাইসের কাজ স্বদেশীয় ফুটবলারদের বিপণনের ব্যাপারটা দেখভাল করা। প্রয়াগ ইউনাইটেডের কোস্তারিকান মিডফিল্ডার কার্লোস হার্নান্ডেজ তাঁরই ক্লায়েন্ট। তৃতীয় ফুটবলার আলোন্সো সোলিস আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার কাম স্ট্রাইকার। ইনি বিশ্বকাপ না খেললেও জাতীয় দলে খেলেছেন। তবে সেটা এক যুগেরও বেশি সময় আগে। ৩০ ঘণ্টা বিমানযাত্রা করে শনিবার দুপুরে শহরে পা দিয়েই যুবভারতীতে দলের সঙ্গে অনুশীলনে নেমে পড়েন এই তিন ফুটবলার।
অনুশীলনের পর হোটেলে ফিরে দলের একমাত্র ইংরেজি জানা সদস্য ফাউস্তো গঞ্জালেসকে পাশে বসিয়ে সেন্তেনো বললেন, “বিপক্ষ আগের ম্যাচে পাঁচ গোল করেছে শুনলাম। রাতে ওদের নাইজেরীয় স্ট্রাইকারের খেলার ফুটেজ দেখতে হবে।” |
সেন্তেনোর পাশে দাঁড়িয়ে ফাউস্তোও বললেন, “মোহনবাগানকে শুক্রবার দেখেছি। সিকিম কিন্তু ওদের রক্ষণাত্মক খেলে প্রায় আটকে দিচ্ছিল। ওডাফা ফাঁকতালে গোল করে গিয়েছে। আমরা জায়গা দেব না।”
ওডাফা ওকোলি অবশ্য নির্বিকার সাপ্রিসা তাকে কী বলছে তা নিয়ে। চিরাচরিত ধারাতেই তিনি ঈশ্বরের আশীর্বাদ চেয়ে বলছেন, “কোস্তারিকার দল সম্পর্কে ধারণা নেই। সর্বশক্তিমানই ভরসা।” পাঁচ গোলের পরদিনই বেমালুম বেরিয়ে এসেছেন আনন্দের আবহ থেকে। কিন্তু চোখ-মুখের ভাষা বলছে, ভিতরে ভিতরে বারুদ সংগ্রহ করছেন ‘অপারেশন সাপ্রিসা’র আগে। বাগানের গোল মেশিন খানিকটা সিরিয়াস মেজাজেই বলে গেলেন, “এখনও কিছুই হয়নি। শিল্ড জিতলে লক্ষ্য সফল বলা যাবে।” যা শুনে সতীর্থ রহিম নবি বলছেন, “ফিটনেস বাড়িয়ে ওডাফা গোলের মধ্যে। এটাই আমাদের প্লাসপয়েন্ট।”
করিমের অচেনা প্রতিপক্ষকে পুণের বিরুদ্ধে অমীমাংসিত ম্যাচে যুবভারতীতে মেপে এসেছিলেন সহকারী কোচ মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু শনিবার তাঁর মাতৃবিয়োগ হওয়ায় সেন্তেনোদের বিরুদ্ধে জয়ের ছক সাজাতে গিয়ে কিছুটা ধাক্কা মোহনবাগান শিবিরে। বিপক্ষ সম্পর্কে করিমের মূল্যায়ন, “পুণেকে যারা রুখে দিয়েছে তারা তো হালকা দল নয়। তা ছাড়া ওদের তো বিশ্বকাপার রয়েছে!”
সাপ্রিসার বিরুদ্ধে প্রথম দলে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আনতে চলেছেন করিম। নবি, জুয়েলদের সঙ্গে কোস্তারিকার দলটির বিরুদ্ধে আক্রমণে ওডাফার সঙ্গে টোলগেকে নামিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা কোচের। কোস্তারিকার কাছে হেরে গ্রুপ রানার্স হলে সেমি ফাইনালে ইস্টবেঙ্গলের সামনে পড়ার সম্ভাবনা। প্রসঙ্গ শুনেই আক্রমণাত্মক মোহনবাগান কোচ। বললেন, “ট্রফি জিততে গেলে কার সঙ্গে খেলতে হবে তা নিয়ে মাথা চুলকে লাভ নেই। আমরা ইস্টবেঙ্গলের জন্যও তৈরি।” |