তিনি ভারতে না থেকেও যেন ভীষণ ভাবে আছেন! ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের হৃদয়ে।
ভিয়েতনামে এএফসি কাপের ম্যাচ খেলতে যাওয়ার আগে মোহনবাগানের বাতিল কোচ স্টিভ ডার্বির শরণাপন্ন লাল-হলুদের ব্রিটিশ কোচ। হঠাৎ করে পুরনো বন্ধুকে মনে পড়ার কারণ কী? মর্গ্যান বলছিলেন, “ভিয়েতনামের টিমটা সম্পর্কে খোঁজ খবর নিচ্ছিলাম। ওদের টিমটা কেমন, কিছুই জানি না। যেটুকু জেনেছি, ইউটিউব আর ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই। স্টিভ তো ওখানেই থাকে। ও আমাকে অনেক সাহায্য করেছে।”
শিল্ডের মাঝপথেই এএফসি কাপ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করে দিয়েছিলেন মর্গ্যান। ফুটবলারদের চোট-আঘাত থেকে বাঁচাতে দলে রোটেশন পদ্ধতিও চালু হয়ে যায়। এমনকী, প্রয়াগ ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে দলের প্রধান স্ট্রাইকার চিডি এডে হ্যাটট্রিকের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে, তা দেখেও আশি মিনিটে তাঁকে তুলে নেন মর্গ্যান। আই লিগ, কলকাতা লিগ কিংবা শিল্ড চলাকালীন কোনও ভারতীয় কোচকে এএফসি কাপ নিয়ে এত উৎসাহিত হতে দেখা যায়নি। মর্গ্যান বলছিলেন, “আন্তর্জাতিক ম্যাচ জেতা খুব কঠিন। সেখানে প্রথম ম্যাচ জেতার পর ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গিয়েছে। দলের মনোবল যাতে নষ্ট না হয়, সেই চেষ্টাই করছি।” |
মর্গ্যান আরও উদ্বুদ্ধ বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ইস্টবেঙ্গল প্রথম পাঁচশোয় জায়গা করে নেওয়ায়। শনিবার শিলিগুড়ি ছাড়ার আগে লাল-হলুদ কোচ বলে গেলেন, “ভীষণ গর্বের ব্যাপার। বিশ্বের বড় বড় ক্লাবের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের নামও উচ্চারণ হবে। ভাবলেই তো দারুণ লাগছে।” ভিয়েতনামে সাইগন জুয়ানের বিরুদ্ধে জয় নিশ্চিত করতে, রবিবার সকালেও অনুশীলন রেখেছেন মর্গ্যান। রাতে ভিয়েতনামের বিমান। তবে জাতীয় দলের সব ফুটবলারেরই অনুশীলনে আসার কথা থাকলেও, চোটের জন্য অর্ণব মণ্ডল এবং কেভিন লোবো নেই। দু’জনেরই হাঁটুতে চোট। অন্তত এক সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে তাঁদের। মর্গ্যান বলছিলেন, “স্টিভের কাছ থেকে শুনলাম, টিমটার নাকি বেশ গতি আছে। প্রচুর দৌড়ায়। তবে আমরাও তৈরি।”
শিল্ডে অপরাজিত থেকে কলকাতায় ফিরতে পেরেও দারুণ খুশি মর্গ্যান। তবে শুক্রবারের হাইভোল্টেজ ম্যাচে প্রয়াগ ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে যে প্রথমার্ধে স্বমহিমায় খেলতে পারেনি তাঁর দল, সেটা স্বীকার করে নিলেন লাল-হলুদের সাহেব-কোচ। বলছিলেন, “যে পরিকল্পনা নিয়ে প্রয়াগ ম্যাচে নেমেছিলাম, তা প্রথমে কাজ করেনি। বারবার ওরা আমাদের অফসাইড-ট্র্যাপে ফেলে দিচ্ছিল। বিরতিতে আমি ফুটবলারদের একটাই কথা বললাম, গোল পেতে হলে আক্রমণ চালিয়ে যাও। ওরা কখনও না কখনও ভুল করবেই। অবশেষে সেটাই হল।”
শিল্ড নিয়ে শুরুতে চরম অসন্তোষ থাকলেও, গ্রুপসেরা হওয়ার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই ফের পুরনো হাসি-খুশি মেজাজে মর্গ্যান। কখনও ঠাট্টায় মজে ফুটবলারদের সঙ্গে। কখনও আবার আড্ডায় ব্যস্ত সহকারীদের নিয়ে। মনে হচ্ছে, বুধবার এএফসি কাপের ম্যাচে দলের এই ‘ফিল গুড’ আবহাওয়াটাই ইস্টবেঙ্গলের ‘ইউএসপি’। |