সৌজন্যে সংবাদমাধ্যম
পুলিশের জালে ছদ্মবেশী বিট্টি
সুস্থ মায়ের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে প্যারোলে জেল থেকে মুক্তি পেয়েছিল সে। এর পর প্রায় সাত বছর নিরুদ্দেশ ছিল ধর্ষণের অপরাধী বিট্টি মহান্তি। অবশেষে কেরল থেকে তাকে গ্রেফতার পুলিশ।
২০০৬ সালের ঘটনা। রাজস্থানের আলোয়ারে এক জার্মান মহিলাকে ধর্ষণের ঘটনায় সাত বছরের কারাদণ্ড হয় বিট্টির। পুলিশের খাতায় অভিযোগ নথিভুক্ত হওয়ার ১৫ দিনের মাথায় শাস্তি ঘোষণা করে ফাস্ট ট্র্যাক আদালত। এর পর সাত মাস জেল খাটার পর প্যারোলে মুক্তি পায় বিট্টি। মায়ের অসুখ, মা তাকে দেখতে চায় কারণ ছিল এটাই। বিট্টির বাবা বি বি মহান্তি আইপিএস অফিসার। তিনি তখন ওড়িশার হোমগার্ড এবং দমকলের ডিরেক্টর জেনারেল। কথা দেন ছেলেকে ১৫ দিনের মাথায় জেলে ফেরত পাঠাবেন। কিন্তু এর পর থেকেই বিট্টি নিরুদ্দেশ। যত বারই বি বি মহান্তিকে জেরা করা হয়েছে, তিনি জানিয়েছেন ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ নেই, জানেন না বিট্টি কোথায়। শেষমেশ ২০০৯ সালে ছেলেকে পালাতে সাহায্য করার অপরাধে সাসপেন্ড করা হয় বি বি মহান্তিকে।
ধরা পড়ার পরে বিট্টি মহান্তি। ছবি: পিটিআই
এর পর আরও চার বছর কেটে গিয়েছে, বিট্টি অধরাই। গত ডিসেম্বরে দিল্লিতে গণধর্ষণের ঘটনার পর, বিভিন্ন টিভি চ্যানেল, সংবাদপত্রে উঠে আসে অমীমাংসিত ধর্ষণের মামলা, পলাতক আসামিদের কথা। সেই তালিকার শীর্ষে ছিল বিট্টি মহান্তির নাম। তার পরই ফের নড়েচড়ে বসে পুলিশ। এ দিকে, টিভিতে ধর্ষণের অপরাধীদের মধ্যে বিট্টির ছবি দেখে সন্দেহ জাগে তার সহকর্মীদের মধ্যে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত সাত বছরে নাম-ধাম-পরিচয়, সবই বদলে ফেলেছে বিট্টি। সে এখন অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা, নাম রাঘব রাজা। জেল থেকে পালিয়ে এমবিএ করে বিট্টি। গত বছর স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ত্রিবাঙ্কুর-এ প্রবেশনারি অফিসার পদে চাকরি পায়।
সম্প্রতি কান্নুরের ওই সরকারি ব্যাঙ্কে বেনামে একটা চিঠি আসে। চিঠির বক্তব্য, ব্যাঙ্কে অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা বলে যে কাজ করছে, সে হলেও হতে পারে ধর্ষণের অপরাধী বিট্টি মহান্তি। এর পরই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। গত সপ্তাহে কেরলে তার বাড়ি থেকেই বিট্টিকে আটক করে পুলিশ। এর পর জেরার মুখে নিজের পরিচয় স্বীকার করে ফেলে সে। কান্নুরের এসপি রাহুল আর নায়ার জানান, বিট্টির বিষয়ে আরও নিশ্চিত হতে রাজস্থান পুলিশকে কান্নুরে আসার জন্য খবর পাঠিয়েছেন তাঁরা। গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়েই পুলিশের একটি দল আসছে কান্নুরে।
নায়ার জানিয়েছেন, ধর্ষণের মামলা তো ছিলই, সেই সঙ্গে এফআইআরে তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, ছদ্মবেশ ধারণ এবং জালিয়াতির চার্জ আনা হয়েছে। কেরলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টি রাধাকৃষ্ণন বলেন, “আমরা যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ পেয়েছি। ওই বিট্টি মহান্তি। ওর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কিন্তু নাম ভাড়িয়ে কী ভাবে চাকরি পেল বিট্টি? পরীক্ষার সার্টিফিকেটেও কি নাম বদলে ফেলেছিল সে?
এর কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ত্রিবাঙ্কুর-এর পিআরও বলেন, “ওকে চিনতে না পারার জন্য আমরা খুবই দুঃখিত। নিয়মমাফিক পরীক্ষা দিয়েই গত বছর চাকরি পেয়েছিল ও। বেনামে চিঠিটা পেয়ে আমাদের সন্দেহ হয়। তার পরই আমরা ডিজিপি-র কাছে অভিযোগ নথিভুক্ত করি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.