বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের অভিযোগে জেলবন্দি রয়েছেন এক তরুণী। শুক্রবার সংশোধনাগারে নারী দিবসের অনুষ্ঠানে হঠাৎ কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। অভিযোগ, অনুপ্রবেশকারী হিসেবে ধরিয়ে দেওয়ার আগে তাঁকে এক ব্যক্তি ধর্ষণ করেছিলেন। তিনি পুলিশের কাছে বহুবার সে কথা বললেও অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়নি। তাই জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সদস্য শেফালি বাগচী যখন তাঁকে কাছে ডেকে কথা বলছিলেন, তখন তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ে অভিযোগ জানান। প্রায় আড়াই বছর ধরে বন্দি তরুণীর অভিযোগ, তিনি শিলিগুড়ির প্রধাননগরে পরিচারিকার কাজ করতেন। সেই সময় ওই বাড়ির মালিকদের একজন তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে তাঁর অভিযোগ। বিষয়টি চেপে যাওয়ার জন্য ওই পরিবারের তরফে চাপ দেওয়া হয়। তার পরেও ওই তরুণী পুলিশকে সব জানান। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে তাঁর অভিযোগ। এর পরেই অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।
শেফালিদেবী সব শুনে চমকে গিয়েছেন। তিনি বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।” ওই খবর পেয়েছেন রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্যা জ্যোৎস্না অগ্রবাল। তিনি বর্তমানে কলকাতায় রয়েছেন। রবিবার তাঁর শিলিগুড়িতে ফেরার কথা রয়েছে। তিনি বলেন, “কলকাতা থেকে ফিরেই আমি সংশোধনাগারে যাব। প্রয়োজনে ওই তরুণীর সঙ্গে কথা বলব। এরকম হয়ে থাকলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার জানান, প্রধাননগর থানাকে অভিযোগের সত্যাসত্য খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিশনার বলেন, “গুরুতর অভিযোগ। বিশদে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।”
জেলার একটি আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার তরফে ওই তরুণীকে সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ দিন তরুণী বলেন, “বহুদিন ধরে জেলে বন্দি রয়েছে। আর কয়েকদিন পরেই আমার সাজা ঘোষণা হবে বলে শুনতে পাচ্ছি। তার পরে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ওই দেশে আমি কাউকে চিনি না। আমার জ্ঞান হওয়ার পর থেকে এখানেই আছি। এখন ওই সব ভাবতে ভাবতে শিউরে উঠি।” এ কথা বলার পর সে কাঁদতে শুরু করেন। এদিনের অনুষ্ঠানে দুই কেএলও জঙ্গিকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ধৃত আলোতি সিংহ ভাওয়াইয়া গান করেন। মঞ্চে বসে থাকা জেল সুপার থুপদেন ভুটিয়া বন্দিদের উৎসাহ দেন। পরে বন্দিরা উঠে গিয়ে প্রতিজ্ঞা করেন, “আর অপরাধ নয়। অপরাধের বিরুদ্ধেই আমরা সরব হব।’’ |