|
|
|
|
স্মরণ ২... |
মা, আমি, সঞ্জীবজি
‘আঁধি’র শ্যুটিং দেখার কথায়
মুনমুন সেন। শুনলেন ইন্দ্রনীল রায় |
|
|
আমার সঙ্গে সঞ্জীব কুমারের প্রথম আলাপ মুম্বইতে।
মায়ের সঙ্গে ওঁর বাড়ি গিয়েছিলাম। আজ এত বছর পর মনে করতে পারছি না মুম্বইয়ের কোথায় ওঁর বাড়ি ছিল। কিন্তু এটা মনে আছে সঞ্জীব কুমারের মা ছিলেন আমার দেখা ‘ওয়ার্ল্ড’স বেস্ট কুক’।
অসম্ভব মমতাময়ী, মাতৃসুলভ ভদ্রমহিলা। আমাদের জন্য যে কত রকম খাবার বানিয়েছিলেন সে দিন, বলে শেষ করতে পারব না।
মা যদি হন ‘ওয়ার্ল্ড’স বেস্ট কুক’, সঞ্জীব কুমার ছিলেন পৃথিবীর সেরা হোস্ট।
অসম্ভব আতিথেয়তা করেছিলেন আমাদের।
প্রায় চল্লিশ বছর আগের ঘটনা। কিন্তু আজও সেই সন্ধেটা ভুলতে পারিনি।
এর পর আমার সঙ্গে আলাপ হয় ওঁর মেকআপ ম্যান সরোজ মোদীর।
|
|
আঁধি |
সরোজ মোদী ‘নয়া দিন নয়ি রাত’-এ সঞ্জীব কুমারের ন’টা আলাদা চরিত্রের মেকআপ করেছিলেন। হি ওয়জ আ মাস্টার। আমাকেও মেকআপ টিপস দিতেন উনি। ‘নয়া দিন নয়ি রাত’ সঞ্জীবজির খুব প্রিয় ছবি ছিল। আমি আর মা, দু’জনকেই উনি নিয়ে গিয়েছিলেন ছবিটা দেখাতে। সেই থেকেই ওঁর অভিনয়ের বিরাট ভক্ত আমি।
তার পর আমার ওঁর সঙ্গে দেখা হয় কাশ্মীরে। ওখানে তখন ‘আঁধি’ ছবিটার শু্যটিং চলছে। আউটডোরে মা নিয়ে গিয়েছিলেন আমায়।
আজও মনে আছে গানের শু্যটিং চলছিল ধ্বংসস্তূপের মাঝখানে।
তখনও আমি ছবি আঁকতাম খুব। কাশ্মীরের ওরকম সৌন্দর্য, আমাকে আর পায় কে?
শু্যটিং না দেখে শুধু দূরে দূরে গিয়ে ছবি আঁকতাম। উনি খুব উৎসাহও দিতেন। ভালবাসতেন আমার আঁকা ছবি।
আজকে এত বছর পরে মনে হয় ওরকম দু’জন অভিনেতা তখন সেটে উপস্থিত। কেন যে সেটে থাকতাম না? থাকলে সেটা নিশ্চয়ই আমার একটা শিক্ষা হত।
আজও যত বার টিভিতে ‘আঁধি’ দেখি বুঝতে পারি, উনি এমন অভিনেতা ছিলেন, যাঁর সঙ্গে মায়ের একটা অদ্ভুত কেমিস্ট্রি ছিল। দু’জনেই দু’জনের অভিনয়কে ‘কমপ্লিমেন্ট’ করতেন।
‘আঁধি’র পর থেকেই উনি আমাদের পারিবারিক বন্ধু হয়ে যান। মনে আছে কলকাতায় এলে আমাদের বাড়ি আসতেনই।
উত্তম কুমার আউটডোরে ছিলেন। গুলজারজিও আসতে পারেননি। কিন্তু উনি আমার বিয়েতে এসেছিলেন। আজ মনে নেই কী দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রাণভরে আশীর্বাদ করেছিলেন এটা স্পষ্ট মনে আছে।
তার পর তো হঠাৎ একদিন খবর পেলাম উনি হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছেন। তার কিছু দিন আগে থেকে শুনছিলাম শরীরটা নাকি ভাল যাচ্ছিল না। কিন্তু সঞ্জীবজির হঠাৎ মৃত্যুটা আজও শকিং আমার কাছে।
|
সঞ্জীব কুমার |
• জন্ম ৯ জুলাই ১৯৩৮। সুরাটে। গুজরাতি
জৈন পরিবারে
•
বলিউডে ছিলেন ১৯৬০-৮৫। প্রথম ছবি ‘হাম হিন্দুস্থানি’। কাজ করেছেন ১৫০-রও বেশি ফিল্মে
•
জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন ‘দস্তক’ ও ‘কোশিশ’য়ে অভিনয়ের জন্য
•
প্রথম নায়ক হন ১৯৬৫তে, ‘নিশান’য়ে
•
১৯৭০য়ে ‘খিলোনা’র পর স্টারের মর্যাদা
•
বিয়ে করেননি। শোনা যায় হেমামালিনীর প্রেমে পড়েছিলেন। অভিনেত্রী সুলক্ষণা পণ্ডিতের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্কে জড়িত ছিলেন
•
১৯৮৫ সালে ৬ নভেম্বর হৃদরোগে মৃত্যু
•
এরপরও তাঁর ১০টি ছবি মুক্তি পায়। শেষ ছবি ‘প্রফেসর কি পড়োশন’ |
|
|
|
|
|
|