রাজ্য সরকারের ‘গ্রুপ ডি’ পদে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক আগেই শুরু হয়েছিল। এ বার দেখা দিল আইনি জটিলতা। কোন নিয়মে, কোন পদ্ধতিতে, সরকার এই নিয়োগ করছে, সাত দিনের মধ্যে তা হলফনামা দিয়ে জানানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
গত বছর ৩০ মার্চ একটি স্বল্প প্রচারিত বাংলা কাগজের শ্রেণিবদ্ধ বিজ্ঞাপন ছেপে অস্থায়ী পদে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের জন্য আবেদনপত্র চেয়েছিল রাজ্য সরকার। আবেদন করতে বলা হয়েছিল বক্স নম্বরে। যদিও সাধারণ রীতি হল, বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রে চোখে পড়ার মতো বিজ্ঞাপন দেওয়া। এর পর শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দফতর থেকে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে বিভিন্ন দফতরে কর্মী নিয়োগ করার নির্দেশ যায়। নির্দেশনামায় উল্লেখ না-থাকলেও তার সঙ্গে আলাদা নামের তালিকা পাঠিয়ে বলে দেওয়া হয়, কাদের কাদের নিয়োগ করতে হবে। বিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে বুঝতে পেরে কোনও কোনও দফতরের সচিব ওই নির্দেশ মানতে অস্বীকার করেন। কেউ কেউ আবার নোটে উল্লেখ করে দেন যে শিল্পমন্ত্রীর ইচ্ছাক্রমেই এই নিয়োগ হচ্ছে।
এই ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যেই আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি হয়। এ দিন আবেদনকারীর তরফে আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ২০১১ সালে পাবলিক সার্ভিস কমিশন গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগের জন্য পরীক্ষা নিয়ে তিনটি প্যানেল তৈরি করে। তাতে ৪০০০ জনের নাম রয়েছে। ওই প্যানেল ব্যবহার না করে ঘুরপথে নিয়োগ হচ্ছে কেন?
রাজ্যের জিপি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রধান বিচারপতি জানতে চান, এমন কোনও প্যানেল আছে কি না। অশোকবাবু প্রথমে প্যানেলের অস্তিত্ব অস্বীকার করলেও পরে জানান, যে প্যানেল রয়েছে, তা নিয়ে ট্রাইব্যুনালে মামলা চলছে। তিনি বলেন, এই নিয়োগ সম্পূর্ণ অস্থায়ী। কাজ চালানোর জন্য কিছু কর্মীর প্রয়োজন তাই এই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা। ডিভিশন বেঞ্চ অবশ্য নিয়োগের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলে, রাজ্য সরকারকে এই নিয়োগ সংক্রান্ত পদ্ধতি, আইনি সংস্থান সবিস্তার জানিয়ে সাত দিনের মধ্যে হলফনামা দিতে হবে। |