দুই পরিবার থেকেই বিয়ের ব্যাপারে আপত্তি ছিল। তারই পরিণতিতে আত্মঘাতী হল তরুণ-তরুণী। বৃহস্পতিবার রাতে হিঙ্গলগঞ্জ থানার সাহেবখালি গ্রামে একটি গাছে গলায় শাড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় দু’জনের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বিয়ে নিয়ে দু’জনের পরিবার থেকেই সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় তারা আত্মহত্যা করে।
পুলিশ সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মোল্লাখালি থানার সাতজেলিয়া গ্রহামা কাছাকাছি বাড়ি অখিল মণ্ডল (২৩) ও শম্পা মণ্ডলের (২১)। আর্থিক দিক থেকে অখিলের চেয়ে শম্পাদের পরিবারের অবস্থা বেশ ভাল। আর তাতেই হয় সমস্যা। অভাবের কারণে বেশিদূর পড়াশোনা করতে না পারা অখিল বেঙ্গালুরুতে একটি ব্যাগের কারখানায় কাজ করত। শম্পা চম্পাহাটিতে একটি কলেজে বিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিল। দীর্ঘদিন ধরে দু’জনের মধ্যে প্রেম ছিল। সম্প্রতি তারা বিয়ে করবে ঠিক করে। এতেই বেঁকে বসে দুই পরিবারই। মূলত দুই পরিবারের আর্থিক বৈষম্যই ছিল বাধা। গত সোমবার বাড়ি ফেরার কথা ছিল অখিলের। সেইমতো সে হাওড়া স্টেশনে নামে। সেখানে তার সঙ্গে দেখা করে শম্পা। এর পরে দু’জনেই সাহেবখালিতে বন্ধু নিতাই মণ্ডলের বাড়িতে চলে যায় তারা।
এ দিকে মেয়ের খোঁজ না পেয়ে মোল্লাখালি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন শম্পার বাবা বিষ্ণুপদবাবু। একই সঙ্গে ছেলে সাহেবখালিতে আছে জেনে দেখা করেন ববা গৌরবাবু। সেখানে শম্পাকে দেখে তিনি বিষ্ণুবাবুর বাড়িতে তা জানাতে যান। কিন্তু তাঁকে অপমান ও সেই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ গৌরবাবুর। বাবার কাছে সমস্ত ঘটনা শোনে অখিল। এর পরে ঠিক হয় শম্পা বাড়িতে বাবাকে ফোন করে সব জানাবে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অখিল ও শম্পা দু’জনেই ‘একটু ঘুরে আসছি’ বলে বাড়ি থেকে বের হয়। অনেকক্ষণ তারা না ফেরায় খুঁজতে গিয়ে লোকজন দেখে গ্রামেই একটি গাছের সঙ্গে শাড়ি বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে দু’জন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান হিঙ্গলগঞ্জ থানার ওসি পার্থ শিকদার। শুক্রবার তিনি জানান, দেহ দু’টি পরিবারের হাতে তুলে দিতে দু’জনের বাড়িতেই খবর দেওয়া হয়। কিন্তু শম্পার পরিবার দেহ নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। |