রাজ্য রাজনীতির সাম্প্রতিক কুকথা ছোড়াছুড়ির সংস্কৃতিতে অভিষিক্ত হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো তথা তৃণমূল যুবার সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের যুবদের রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ দিতে গিয়ে বিরোধী দল সিপিএমকে ‘বোকা, মূর্খ, পাঁঠার দল’ বলে অভিহিত করলেন তিনি। শুক্রবার দুপুরে উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের নজরুল মঞ্চে যুব তৃণমূলের প্রশিক্ষণ শিবিরে অভিষেক বলেন, “এত দিন সিপিএম তো কিছু করেনি। ৩৪ বছর ধরে গুন্ডা-মাফিয়ারাজ চালিয়েছে। আমরা মনীষীদের সংবর্ধনা দিচ্ছি। ওরা বোকা, মূর্খ, পাঁঠার দল।
সাম্প্রতিক কালে শাসক এবং বিরোধী শিবিরের বহু নেতার অশালীন ভাষা প্রয়োগ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। শাসক ও বিরোধী দুই শিবিরের নেতৃত্বই বারে বারে আনুষ্ঠানিক ভাবে দলীয় নেতা-নেত্রীদের শব্দ ব্যবহারে সংযত থাকতে বলেছেন। কিন্তু তার পরেও রাজনীতিকদের কুৎসিত শব্দ ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। এ দিন কুকথা বলে নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীরই ভাইপো। অভিষেকের বাণী নিয়ে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রকাশ্যে মন্তব্য করেননি। তবে তৃণমূল সূত্রে খবর, রাজনীতিতে সদ্য হাতেখড়িপ্রাপ্ত অভিষেককে ডেকে শব্দ ব্যবহারে সংযত থাকার পরামর্শ দেবেন পার্থবাবু।
যাদের সম্পর্কে অভিষেকের ওই বিশেষণ, তাদের নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। অভিষেকের মন্তব্যের জবাবে এসএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই মন্তব্য একেবারেই অপ্রত্যাশিত নয়। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এর আগে তৃণমূলত্বের কথা বলেছিলেন। অভিষেক এমন কথা না বললে ওঁর তৃণমূলত্ব প্রমাণ করবেন কী ভাবে? জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মদন মিত্র, শুভেন্দু অধিকারী, এমনকী, সৌগত রায়ের মতো শিক্ষকও তৃণমূল নেতা হিসাবে এর আগে যা যা মন্তব্য করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী তার কোনওটারই নিন্দা করেননি। তৃণমূলের অভিধানে যে ভাষা আছে, যুবার নেতা তা-ই প্রয়োগ করেছেন।” সিপিএমের এক পলিটব্যুরো সদস্যেরও কথায়, “যেমন ট্রেনিং পাচ্ছেন, তেমনই বলছেন।” সিপিএম নেতাদের আরও বক্তব্য, নেতাজি ইন্ডোরে যুবার অভিষেক অনুষ্ঠানের পর তাদের আর কোনও কর্মসূচি নিতে দেখা যায়নি। যুবার প্রত্যাবর্তন হল তৃণমূলোচিত ঢঙেই। ঋতব্রতর কথায়, “এত দিন শীতঘুমে থাকার পর হঠাৎ জেগে উঠে হইচই ফেলার মতো কিছু করা দরকার। তাই বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেছেন।” |