|
|
|
|
জলধরের দেহরক্ষী প্রত্যাহার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
দুই আদিবাসী মহিলার শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্ত বিনপুরের যুব তৃণমূল নেতা জলধর পণ্ডার সশস্ত্র দেহরক্ষীদের প্রত্যাহার করে নিল পুলিশ। জলধরবাবুর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দু’জন পুলিশ কর্মীকে বৃহস্পতিবার রাতেই ঝাড়গ্রাম পুলিশ লাইনে ‘ক্লোজ’ করা হয়।
গত বছর নভেম্বরে পুলিশের পক্ষ থেকে জলধরবাবুকে দু’জন পুলিশ-রক্ষী দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার জলধরবাবু বলেন, “প্রশাসনই আমাকে সর্বক্ষণের জন্য দু’জন পুলিশ-রক্ষী দিয়েছিল। কেন দেহরক্ষী প্রত্যাহার করা হল তা বোধগম্য হচ্ছে না।” ঝাড়গ্রামের এসপি ভারতী ঘোষ অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
গত রবিবার বিনপুর-১ ব্লক যুব তৃণমূলের সহ সভাপতি জলধরবাবু ও তাঁর সঙ্গীসাথীরা বিনপুরের আঁকরো ও মাগুরা গ্রামের ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন) সমর্থক দুই আদিবাসী মহিলার শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ। এক মহিলার স্বামী ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর স্থানীয় নেতা। অপর মহিলার ছেলে ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর সক্রিয় কর্মী। মাগুরায় একটি হিমঘরের ক্ষমতাসীন ঝাড়খণ্ড মজদুর ইউনিয়নের সঙ্গে তৃণমূলের লোকজনের বচসার জেরে রবিবার জলধরবাবুরা ওই দুই ঝাড়খণ্ডী নেতা-কর্মীর বাড়িতে চড়াও হন বলে অভিযোগ। ঘটনার সময় জলধরবাবুর এক দেহরক্ষী সেখানে হাজির ছিলেন বলেও অভিযোগ। ওই দিনই নিগৃহীতা দুই আদিবাসী মহিলা বিনপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না-করায় বৃহস্পতিবার রাজ্য মহিলা কমিশন, মানবাধিকার কমিশন-সহ প্রশাসনিক মহলে লিখিত অভিযোগ পাঠান ওই দুই মহিলা। আদিবাসী মহিলা নিগ্রহের ঘটনায় দলীয় নেতা-কর্মীর নাম জড়িয়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েন তৃণমূল নেতৃত্ব। অস্বস্তিতে পড়ে পুলিশও। রাতেই বিনপুর থানাকে অভিযোগ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন ঝাড়গ্রামের এসপি ভারতী ঘোষ। এসপি’র নির্দেশে জলধরবাবুর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দুই পুলিশ কর্মীকে বৃহস্পতিবার রাতেই ঝাড়গ্রাম পুলিশ লাইনে ‘ক্লোজ’ হয়। জলধরবাবু-সহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবশ্য এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেয় নি পুলিশ। তবে শুক্রবার এসপি’র নির্দেশে ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার দুই আধিকারিক আঁকরো ও মাগুরা গ্রামে যান। দুই মহিলার সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। ওই দুই মহিলার বক্তব্য রেকর্ড করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
বিনপুর-১ ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি তন্ময় রায় বলেন, “ঘটনাটি সম্পর্কে দলীয় স্তরে অনুসন্ধান করা হচ্ছে।” আদিবাসী সামাজিক যুব সংগঠন ‘জুয়ান গাঁওতা’র সম্পাদক প্রবীর মুর্মু বলেন, “আদিবাসী নিগ্রহ প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না-হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।” |
|
|
|
|
|